প্রকাশ: ২১ নভেম্বর, ২০২২ ৩:১৬ : অপরাহ্ণ
কুমিল্লা লাকসাম উপজেলায় পাঁচতলা ভবনের তিন তলায় বসবাস করেন ছেলে সামছুল হক স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে থাকেন। অথচ ভবনের ছাদের ওপর একটি টিনের ঘরে রাখছেন তার বৃদ্ধ বাবাকে। ঘরের একপাশে মুরগী খামার অপর পাশে বস্ত্রহীন অবস্থায় পড়ে আছেন বৃদ্ধ ইয়াকুব আলী। চটের বিছানার আশপাশ দুর্গন্ধ ও ব্রয়লার মুরগীর ময়লা।
এমনই এক মানবেতর জীবন নিয়ে বেঁচে আছেন কুমিল্লা লাকসাম পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডে কলেজে রোড ও পশ্চিমগাও পুরান বাজার এলাকার বাসিন্দা ইয়াকুব আলী (৮০)।
জীবনের শেষ প্রান্তে এসে বুকভরা কষ্টগুলো চিৎকার করে বলতে চাইলেও বয়সের ভারে বন্ধ হয়ে গেছে তার আওয়াজ। শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে আছেন তিনি।একসময় যে পিতা তার ছেলেকে কোলে-পিঠে নিয়ে বড় করেছিলেন, আজ তিনি নিজেই উপেক্ষিত।
এমন কষ্টের দৃশ্য সন্তানদের চোখে না পড়লেও এলাকার মানুষ ঠিকই উপলব্ধি করতে পারেন।
রোববার ২০ নভেম্বর বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে এমন দৃশ্যই দেখা যায়।
ছেলের বৌ শাহিদা আক্তার বলেন, শ্বশুর দীর্ঘদিন যাবৎ অসুস্থ। শ্বশুরের মস্তিষ্কে সমস্যা দেখা দেয়ার পর থেকে সার্বক্ষণিক ওষুধ ও দেখভাল করেন তিনি। কত দিন ধরে ছাদে রাখা হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১-২ মাস ধরে বাবাকে রাখা হয়েছে। এর আগে আমাদের রুমে থাকতেন তিনি। তা ছাড়া তাকে ঘরের মধ্যে রাখা যায় না, মাথায় সমস্যার কারণে সব কিছু ওলট-পালট করেন।
বৃদ্ধর বড় ছেলে সামছুল হক বলেন, আমার বাবা মানসিক ভারসাম্যহীন,ঠিকমতো কাপড় পরেন না। কোনোভাবেই ডাক্তারের কাছে নেয়া যায় না। পরে তিনি এ সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনেক অনুরোধ জানান।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে লাকসাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা মতিন বলেন, বৃদ্ধ বাবাকে এখান থেকে তাদের বাসায় নিয়ে আসার জন্য সময় দেয়া হয়েছে। দায়িত্ব পালন না করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।