চট্টগ্রাম, শনিবার, ৪ মে ২০২৪ , ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আ. লীগ

প্রকাশ: ৮ জানুয়ারি, ২০২৪ ১১:০০ : পূর্বাহ্ণ

 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত ২৯৮টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগের জয় ২২৫ আসনে, স্বতন্ত্র ৬১ এবং জাতীয় পার্টি ১১টি আসনে জয় পেয়েছে। এছাড়া কল্যাণপার্টি পেয়েছে একটি আসন।

এদিকে, ময়মনসিংহ-৩ আসনের একটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করায় পুরো আসনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। আর প্রার্থী মারা যাওয়ায় আগেই ভোট স্থগিত করা হয় নওগাঁ-২ আসনের।

এ সংখ্যাগরিষ্ঠতার মধ্য দিয়ে চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় বসতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। এর আগে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্যদিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসে দলটি। এরপর থেকে একটানা ক্ষমতায় রয়েছে।

২৯৮ আসনের ফলাফল গণনা শেষে বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী টানা চতুর্থবারের মতো জয় পায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দেশের প্রতিটি অঞ্চলেই বেশ দাপটের সঙ্গে জিতেছেন দলটির প্রার্থীরা।

 

গোপালগঞ্জ-৩ আসনে নিরঙ্কুশ জয় পান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এছাড়া নিজ নিজ আসনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ নেতা আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, আ হ ম মুস্তফা কামাল, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, এ কে আব্দুল মোমেন, এম এ মান্নান, সালমান এফ রহমান, ডা. দীপু মনি, টিপু মুনশি, জাহাঙ্গীর কবির নানক,  হাছান মাহমুদ, মাহবুবউল আলম হানিফ, নসরুল হামিদ বিপু, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাকিব আল হাসান, মাশরাফী বীন মুর্তজা, চিত্রনায়ক ফেরদৌস জয় পেয়েছেন।

এবারের নির্বাচনে আলোচিত বিষয় ছিল স্বতন্ত্র প্রার্থীর ধারণা। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে অনেকই হন স্বতন্ত্র প্রার্থী। তারাই করেছেন বাজিমাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসনে জয়ী হয়েছেন ঈগল ও ট্রাক প্রতীকের প্রার্থীরা। ফরিদপুর-৩ আসনে ঈগল প্রতীকে অর্ধেকের কাছাকাছি ভোটের ব্যবধানে নৌকার মাঝি শামীম হককে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন এ কে আজাদ। জিতেছেন ফরিদপুর-৪ আসনের নিক্সন চৌধুরী ও হবিগঞ্জ-৪ আসনের ব্যারিস্টার সাইয়েদুল হক সুমন।

নিজ দলের প্রতীক থাকলেও নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করেও হেরেছেন আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সঙ্গী জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। হেরেছেন দুই প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী ও এনামুর রহমান। জয়ী হতে পারেননি মমতাজ বেগমও। কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীও হেরেছেন। জয়ের মুখ দেখেননি বিকল্প ধারার মাহি বি চৌধুরিও। পাত্তা পায়নি ভোটের আগে তৈরি হওয়া কিংস পার্টির কোনো প্রার্থী। তবে জিততে পেরেছেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইবরাহিম।

 

নানা দেন-দরবার করে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ২৬ আসনে সমঝোতায় নির্বাচনে আসে জাতীয় পার্টি।  তবে দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ তাদের ঝুলিতে গেছে মাত্র ১১টি আসন। জি এম কাদেরের স্ত্রী শেরিফা কাদেরসহ অন্যান্যদের হয়েছে করুণভাবে।

নির্বাচনে হঠাৎই নিবন্ধন পাওয়া তৃণমূল বিএনপি ছিল বেশ আলোচনায়। তবে আলোচনায় থাকা ছাড়া কিছুই করতে পারেননি দলটি। বিএনপিছুট শমসের মবিন চৌধুরী, তৈমুর আলম খন্দকারসহ দলটির কেউই পৌঁছতে পারেননি জয়ের বন্দরে।

এর আগে রোববার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা চলে ভোটগ্রহণ। নির্বাচন কমিশনের মতে এবার ভোটার উপস্থিতির হার ৪০ শতাংশ।

 

বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী ৩০০ আসনের জাতীয় সংসদে কোনো দল যদি ১৫১ আসনে বিজয়ী হয়, তাহলে তারা সরকার গঠনের যোগ্যতা অর্জন করে। সেই হিসেবে আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে আগামী সরকার গঠনের যোগ্যতা অর্জন করেছে। এ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতার মধ্যদিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এবারও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা চতুর্থবারের মতো মন্ত্রিসভা গঠন করা হবে।

এদিকে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর নেতাকর্মীদের বিজয় মিছিল না করার নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও অন্য প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে সহিংসতা বা আত্মকলহে লিপ্ত না হওয়ার জন্য সাংগঠনিক নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

 

 

সুত্র: চ্যানেল২৪

Print Friendly and PDF