চট্টগ্রাম, রোববার, ৫ মে ২০২৪ , ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের উদ্বোধন আজ

প্রকাশ: ৭ অক্টোবর, ২০২৩ ১০:১৭ : পূর্বাহ্ণ

 

আজই উদ্বোধন হচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের একাংশ। জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে শনিবার (৭ অক্টোবর) সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনের পরপরই তাতে চালু হবে পার্কিং বে, নতুন কার্গো ভিলেজ।

তৃতীয় টার্মিনালে মিলবে উন্নত বিশ্বের আধুনিক বিমানবন্দরগুলোর মতো সুবিধা। দীর্ঘ যানজটে আটকে থাকার দুর্ভোগ কমাতে মূল সড়ক ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সাথে সরাসরি যুক্ত করা হচ্ছে টার্মিনালটি। গাড়ি নিয়ে দ্রুত প্রবেশ এবং দেশে আসা যাত্রীরা কম সময়ে ইমিগ্রেশন শেষ করে রওনা দিতে পারবেন নিজ নিজ গন্তব্যে।

 

 

এতে থাকছে ২৬টি বোর্ডিং ব্রিজ, ১১৫টি বহির্গমন চেক-ইন কাউন্টার, ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট নিয়ন্ত্রণ কাউন্টার। রয়েছে ৭০টির মত বহির্গমন ইমিগ্রেশন কাউন্টার। থাকবে ৫টি স্বয়ংক্রিয় আগমনী চেক-ইনসহ ৫৯টি কাউন্টার। ৪০টি কেবিন ব্যাগেজ স্ক্যানিং মেশিন, ১১টি বডি স্ক্যানার মেশিন।

এই টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্ক করে রাখা যাবে । বহুতল পার্কিংয়ে রাখা যাবে ১ হাজারের বেশি গাড়ি। টার্মিনালের সাথে যুক্ত থাকছে মূল সড়ক ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েকর্তৃপক্ষ বলছে, আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ নতুন

টার্মিনালটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হবে আগামী বছরের শেষ নাগাদ। তবে সেবা দাতা সংস্থাগুলোর যথাযথ সমন্বয় না থাকলে নতুন টার্মিনালের পরিপূর্ণ সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহেদুল আলম বলেন, এন্ট্রি পয়েন্ট থেকে বিমানের গেট পর্যন্ত— বিভিন্ন স্তরে যারা সেবা দেবে, তাদেরকে সেবার মানসিকতা বাড়াতে হবে। সেবা না বাড়ালে শুধুমাত্র অট্টালিকা দিয়ে যাত্রীদের চাহিদা পূরণ করা যাবে না।

 

 

এই টার্মিনালে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ জনশক্তি সার্বক্ষণিক প্রস্তত থাকবে। দুই লাখ ৩০ হাজার স্কয়ার মিটারের বিশাল টার্মিনালে থাকবে কয়েকটি স্ট্রেইট স্কেলেটর সুবিধা। এর মাধ্যমে দীর্ঘ হাঁটার ভোগান্তি পোহাতে হবে না যাত্রীদের। সর্বাধুনিক গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সুবিধার সাথে থাকবে অত্যাধুনিক লাগেজ ব্যবস্থাপনাসহ নানা সুবিধা।

এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ মফিজুর রহমান বলেন, কেবল উন্নত প্রযুক্তি আনলে হবে না। উন্নত প্রযুক্তি হ্যান্ডেল করতে প্রশিক্ষিত জনবল লাগবে আমাদের। যেখানে আমাদের ভয়াবহ দুর্বলতা আছে। যে টার্মিনালটা আমরা উন্মুক্ত করতে যাচ্ছি, এর জন্য অনেক আগে থেকে আমাদের প্রস্তুতি নেয়া উচিত ছিল। জনবল নিয়োগ এবং তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া।

সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বয় এই টার্মিনালে খুব জরুরি বলে জানালেন এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কামরুল ইসলাম।

 

 

এসব সমন্বয়হীনতার কথা মাথায় রেখেই পরিকল্পনা সাজানোর কথা জানালেন সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান। বললেন, এয়ারলাইন্সের জন্য সবচেয়ে বড় দরকার গ্রাউন্ড ও কার্গো হ্যান্ডেলিং। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই কাজের দায়িত্ব বিদেশি কোম্পানিকে দেয়ার। যারা কাজ করবে তারা অভিজ্ঞ। তাদের অভিজ্ঞতা আছে বলেই আমরা তাদের এই কাজ দিতে যাচ্ছি। প্রত্যাশা, তারা যাত্রীদের সেবা নিশ্চিত করতে পারবে।

উদ্বোধনের আগেই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজের পরীক্ষামূলক সফল অপারেশন করা হয়েছে শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনালে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের এই টার্মিনাল তৈরির প্রকল্পটি পাস হয়। এতে খরচ হচ্ছে ২৪ হাজার কোটি টাকা। যার বেশির ভাগই ঋণ হিসেবে দিচ্ছে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকা। উদ্বোধনের পর চালু হবে শুধু পার্কিং বে ও কার্গো ভিলেজ। মূল ভবনসহ টার্মিনালটির পুর্ণাঙ্গ ব্যবহার করা যাবে আগামী বছরের শেষ নাগাদ।

 

Print Friendly and PDF