প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর, ২০২২ ১১:০২ : পূর্বাহ্ণ
নিজের জীবন সম্পর্কে তিনি বলছিলেন, ‘বেশ কয়েক বছর আমার বিয়ে হয়েছে। স্বামীর সঙ্গে আমার সেরকম কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু আমার বাড়িতে অন্য কিছু ঝামেলা হয়েছে। তাদের কারণে আমার সঙ্গে স্বামীর প্রায়ই অশান্তি লেগেই আছে। এই অশান্তিতে আমি শেষ হয়ে যাচ্ছি। আমার মনে হয়, স্বামীর সঙ্গে ঝগড়াঝাটি হলে বাড়ির অনেকেই খুশি হয়। সবেথেক বেশি খুশি হয় আমার ননদরা। ওরা যে আমার সঙ্গে কী কী করে, কেউ ভাবতেও পারবে না। আজ বিশেষজ্ঞকে আমি সেসব কথা জানাব। আমার এই পরিস্থিতি থেকে অনুগ্রহ করে উদ্ধার করুন। আমায় পরামর্শ দিন।’
তিনি আরো বলছিলেন, ‘ননদ সারাদিন স্বামীর কান ভাঙায়। আমার ননদরা খুবই খারাপ। ওদের বিয়ে গিয়েছে। তারপরেও এই বাড়িতে এসে এসে থাকে। তাতে আমার কোনো সমস্য়া নেই। কিন্তু আমার নামে স্বামীর কাছে সারাদিন উল্টা পাল্টা কথা বলে। আর আমার সঙ্গে খুব ঝগড়া করে। আমার স্বামী অন্ধের মতো ওদের বিশ্বাস করে। ওদের কোনো দোষ দেখতেই পায় না। এদিকে আমার ভুল সব সময়ই দেখে। আমি কিছু না করলেও আমার উপর চিৎকার করতে থাকে। ওর বোনরা যা বোঝায়, তাই শোনে। আমার কথা শুনতেও চায় না। প্রতিদিন এই নিয়ে অশান্তি লেগেই আছে। আমার সংসারে এসে সবসময় নাক গলায় ননদরা। এই ঝগড়া কী শেষ হবে না?’
তিনি তার জীবনের অন্য গল্পও বলেছেন, গল্পটা এরকম যে, ‘আমার বিবাহিত জীবনে কোনো সমস্যাই ছিল না। বিয়ের পর পর সব কিছু ঠিক চলছিল। আমার স্বামীও আমায় খুব ভালোবাসে। কিন্তু যতদিন এগোতে লাগল, আমি বুঝলাম পরিস্থিতি ঠিক নয়। বরং এই সম্পর্ক আরো খারপ হতে পারে। কারণ, এই সময়ে এসে প্রতিদিনই আমাদের মধ্য়ে ঝামেলা হয়। কথা বন্ধ হয়ে যায়। আমার আর ভালো লাগে না। কোনো পরকীয়া সম্পর্ক নয়, আমাদের মধ্যে কোনো ইগোর সমস্যাও নেই। তারপরেও যখন ঝামেলা লেগেই থাকে, আর ভালো লাগে না। কী নিয়ে সমস্যা জানেন?’
এই সমস্যা সমাধানে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ জানা যাক: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিবাহ মানে পাত্রের পরিবারের সঙ্গে যেন আপনার বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন হচ্ছে। তাদের পরিবারের প্রত্যেকের সঙ্গেই আপনাকে সম্পর্ক তৈরি করতে হয়। শুধুই আপনার সঙ্গীর সঙ্গে নয়। পরিবারের কোনো কোনো সদস্য সবসময়ই আপনার ব্যক্তিগত জীবনে নাক গলাতে থাকবে। এতে আপনার রাগ হতে পারে। কারণ এতে স্বামী-স্ত্রীর প্রাইভেসি প্রশ্নের মুখেই দাঁড়ায়। তবে আপনাদের মধ্য়ে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠা দরকার। নাহলে সমস্যা দিনে দিনে বাড়বে। বিয়ে মানেই শুধুই দায়িত্ব পালন নয়। স্বামী ও স্ত্রী একে অপরের ভালো বন্ধু হওয়াও দরকার। তাই এই সমীকরণটা বুঝুন। নাহলে বিবাদ কমবে না। দুজনের মধ্য়ে বিশ্বাসের জায়গাটা তৈরি করা প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞরা আরো বলছেন, ‘বিয়ের জন্য আপনার বাড়ির লোক হয়তো আপনাকে জোর করতেই পারেন, কিন্তু শেষ সিদ্ধান্ত আপনিই নেবেন। তাই আপনি যখন বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তখন কী এই কথাগুলো ভেবেছিলেন? এরকম সমস্যা বারবার আসতে পারে। এখানেই আপনাদের সম্পর্কের জোর কতোটা তা বোঝা যায়। আপনাদের একে অপরের ধৈর্য্য, বিশ্বাস ও বন্ধুত্বের পরিচয় পাওয়া যায়। আপনি সুখী বিবাহিত জীবন চাইলে স্বামীর সঙ্গে সরাসরি এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলুন। সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে রিলেশনশিপ এক্সপার্টের সাহায্য নিতে পারেন। ভালো থাকার জন্যে নিজেকেও ভালোবাসা প্রয়োজন। সেদিকেও খেয়াল রাখুন।’
সূত্র: এই সময়