প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর, ২০২২ ১:৩৩ : অপরাহ্ণ
বিএনপির উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, এই তো সেদিনেও তারা আন্দোলনের নামে বাসের ভিতর যাত্রীকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছে। তারাই বলছেন মানবতার কথা, এটি মনে হয় ভূতের মুখে রাম নাম।
‘এই সরকারের মানবিক বোধ বলতে কিছু নেই’ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে নানক বলেন, যারা মানবতাকে ভুলন্ঠিত করেছে। যাদের প্রতিষ্ঠাতা সামরিক জান্তা জিয়াউর রহমান এবং যারা ক্ষমতায় এসে একাত্তরের পরাজিত জামায়াতকে নিয়ে যারা এই দেশে মায়ের সামনে মেয়েকে ধর্ষণ করেছে, ভাইয়ের সামনে বোনকে ধর্ষণ করেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমুন্নত মানুষের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে। আমার বোধহয় তাদেরকে মানবতার শিক্ষা নেয়া দরকার। যে মানবতা তারা লঙ্ঘন করেছে তার জন্য তাদের জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনসহ মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপ-কমিটির পক্ষ থেকে পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের সামনে একথা বলেন। জাতীয় সম্মেলনকে সফল করার লক্ষ্যে ১১টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়। জাহাঙ্গীর কবির নানককে আহ্বায়ক ও মির্জা আজমকে সদস্য সচিব করে মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপ-কমিটির গঠন করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, আগামী ২৫ নভেম্বর মহিলা আওয়ামী লীগ এবং ২৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপি নেতাদের দাবি এই নির্বাচন তাদের মূখ্য নয়, সরকারের পতনই তাদের মূখ্য আরেক প্রশ্নের জবাবে নানক বলেন, আসলে বিএনপি এই কথা বলছে ২০০৮ সাল থেকে। একথা বলেই আসছে। তারা যে শব্দবোমা নিক্ষেপ করছে। এই শব্দবোমায় আমরা আতঙ্কিত না। তবে আমরা তাদেরকে অনুরোধ করবো, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ একটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছেন। তিনি করোনা মহামারি মোকাবিলা করে সফল হয়েছেন। তেমনিভাবে এই বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কাজেই সেই মুহূর্তে জনগণের মধ্যে কোন আতঙ্ক না ছড়ানো অনুরোধ জানাচ্ছি।
বিএনপি ১০ ডিসেম্বরর ঢাকায় সমাবেশ করে সরকার পতনের হুমকি দিচ্ছে আবার আপনাদেরও বিভিন্ন সম্মেলন ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হবে, এতে কোনো সাংঘর্ষিক ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে কি না? এবিষয়ে তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, গণতান্ত্রিক রীতিনীতিতে বিশ্বাস করি। নেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন শান্তিপূর্ণ উপায়ে যেকোন কর্মসূচি পালন করতে পারে বিরোধী দল। শক্তিশালি বিরোধী দলকে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু সেই বিরোধী দল যেন কোনভাবেই ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে যেন তারা জনগণের জানমালের শান্তি শৃংখলা বিঘ্নিত না করে। আর শান্তি শৃংখলা বিঘ্নিত করলে, ঢাকার শান্তিপূর্ণ মানুষ যারা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন, তাদের তো অধিকারই রয়েছে তাদের শান্তিকে রক্ষা করা।
এসময় তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি আভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে এবং গণতান্ত্রিক চর্চা করে। সেই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যে কাউন্সিলটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ডিসেম্বর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্মেলন হচ্ছে। এর সাথে সাথে যেসকল সহযোগী সংগঠনসহ অন্যদের সমম্মেলনগুলো অনুষ্ঠিত হবে। এই সম্মেলনগুলো কারো দিকে তাকিয়ে হচ্ছে না, এটি আমাদের সাংগঠনিক কাজ। আমরা একেবারে সাংগঠনিক নিয়ম নীতি অনুসরণ করে এই সম্মেলনগুলো করতে যাচ্ছি।
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এই সম্মেলনগুলো হচ্ছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে নানক বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে অবশ্যই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন। নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা আমাদের সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করছি। আমাদের সহযোগী সংগঠনও প্রস্তুতি নিচ্ছে। এইসব সম্মেলন একটি নতুন গতিবেগ সঞ্চার করবে বলেও আশাবাদ করেন তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষ্যে গঠিত মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপ-কমিটির সদস্য সচিব ও আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃকসহ সহযোগী সংগঠনের অনেকে।