প্রকাশ: ৩ জুন, ২০২৪ ১২:১২ : অপরাহ্ণ
ভিজিট ভিসায় সৌদি আরবে এসে হজ পালনের অনুমতি না নিয়ে পবিত্র নগরীতে প্রবেশ করার অপরাধে ২০ হাজারের বেশি দর্শনার্থীকে জরিমানা করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এসপিএর বরাতে এ খবর প্রকাশ করেছে খালিজ টাইমস। সৌদি আরবের জননিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা জেনারেল ডিরেক্টরেট অব পাবলিক সিকিউরিটি জানিয়েছে, দোষী ব্যক্তি যে পদধারী হোক না কেন আইন অমান্য করায় তাকে শাস্তি পেতে হবে।
এর আগে রোববার (২ জুন) থেকে সৌদি আরবে কার্যকর করা হয় পবিত্র হজবিষয়ক আইন ও নির্দেশনা অমান্য করার শাস্তি। এটি বহাল থাকবে ২১ জুন পর্যন্ত। হজ পালনের অনুমতি ছাড়া পবিত্র নগরীতে কোনো হজযাত্রীকে পাওয়া গেলে কর্তৃপক্ষ তাকে ১০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা করবে। এর আওতায় রয়েছেন সৌদি নাগরিক ছাড়াও স্থানীয় বাসিন্দাও।
কর্তৃপক্ষ কঠোরভাবে উল্লেখ করেছে, কেউ অনুমতি ছাড়া হজযাত্রীদের পরিবহন করলে তাকে ৬ মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড দেয়া হতে পারে এবং ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১৫ লাখ টাকা।
মক্কা নগরী, কেন্দ্রীয় এলাকা, পবিত্র স্থান, হারামাইন ট্রেন স্টেশন, নিরাপত্তা চেকপয়েন্ট, স্ক্রিনিং সেন্টার এবং অস্থায়ী নিরাপত্তা চেকপয়েন্টের দেয়া অনুমতি ছাড়া হজ পালন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ আইন লঙ্ঘন করার সময় ধরা পড়া বাসিন্দাদের তাদের নিজ দেশে নির্বাসিত করা হবে এবং আইন অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সৌদিতে পুনরায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে।
যদি কোনো ব্যক্তি যথাযথ অনুমতি ছাড়া হজযাত্রীদের পরিবহনে ধরা পড়ে, তবে তাকে শাস্তি ভোগ করার পরে নিজ দেশে পাঠিয়ে দেয়া হবে এবং সুনির্দিষ্ট সময়ের জন্য তাকে আর সৌদি আরবে ঢুকতে দেয়া হবে না।
এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, পবিত্র হজবিষয়ক আইন লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে যাচ্ছে সৌদি আরব। বিশেষত অনুমতি ছাড়াই হজ পালন নিয়ে সতর্ক করে রিয়াদ সরকার। পরে এই আইন অমান্যকারীর বিরুদ্ধে ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা নির্ধারণ করা হয়। হজ ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠু ও শৃঙ্খলাবদ্ধ রাখতে বিশাল অঙ্কের এই জরিমানা নির্ধারণ করা হয়। এ নিয়ে দেশটির হজ ও পাসপোর্ট বিভাগ যৌথভাবে কাজ করবে।
হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানায়, প্রয়োজনীয় অনুমতি নেয়া ছাড়া হজ পালন করা বেআইনি। কেউ এ আইন লঙ্ঘন করলে তাকে ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা করা হবে। এ ছাড়া যথাযথ অনুমতি না নিয়ে হজযাত্রী পরিবহনে ধরা পড়লেও ৫০ হাজার রিয়াল জরিমানা করা হবে। প্রবাসীরা এসব আইন লঙ্ঘন করলে তাদের ছয় মাসের কারাদণ্ড হবে। সেই সঙ্গে তাদের সৌদি আরব থেকে নির্বাসন দিয়ে ১০ বছর পর্যন্ত সেই দেশে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে। তাছাড়া জনসাধারণের সামনে তাদের অসম্মানের মুখোমুখি করা হবে।
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি হজ। আর্থিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ মুসলিম নারী-পুরুষের জন্য জীবনে একবার হলেও হজ করা বাধ্যতামূলক। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন পবিত্র হজের কার্যক্রম শুরু হবে। এ লক্ষ্যে গত ১ মার্চ থেকে হজের ভিসা ইস্যু শুরু হয়ে শেষ হয় ২৯ এপ্রিল। এরপর ৯ মে থেকে সৌদি আরবে আগমন শুরু করেন হজযাত্রীরা। এ বছর বাংলাদেশ থেকে এখন পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন ৮৩ হাজার ১৫৫ জন। এর আগে গত বছর করোনা-পরবর্তীকালের সবচেয়ে বড় হজে ১৮ লাখের বেশি মুসলিম অংশ নেন। এর মধ্যে ১৬ লাখ ৬০ হাজার ৯১৫ জন বিদেশি মুসল্লি ছিলেন।
সূত্র: চ্যানেল 24