প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১২:২১ : অপরাহ্ণ
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে সম্প্রতি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে হানি নাট। মূলত মধু ও বিভিন্ন বাদাম একসঙ্গে মিশিয়ে তৈরি হয় এই খাবার। এর ভালোমন্দ প্রভাব সম্পর্কে না জেনেই অনেকে শুধু বিজ্ঞাপন দেখেই কিনছেন।
হানি নাটের মূল উপাদান মধু এবং বাদাম, যা খুবই পুষ্টিকর খাবার। মধু আপনার শরীরে শক্তি জোগাবে। পাশাপাশি এতে অনেক খনিজ ও ভিটামিন পাওয়া যায়। অন্যদিকে বাদাম দ্বিতীয় শ্রেণির প্রোটিন হলেও তা থেকে কিছু প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিডের পাশাপাশি কিছু ভিটামিন ও খনিজও পাওয়া যায়। বাদামের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে এর ভালো চর্বি, যা হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য রক্ষায় খুব গুরুত্বপূর্ণ।
তবে সব খাবার সবার যেমন জন্য উপযোগী নয়, তেমনি হানি নাটও সবার জন্য নয়। বিক্রেতারা হানি নাটের প্রচারণার সময় বলে থাকেন, এটি যৌন দুর্বলতা থেকে মুক্তি দেবে। কিন্তু পুষ্টিবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে হানি নাটে এমন কোনো বিশেষ উপাদান নেই, যা যৌন দুর্বলতা দূর করবে। তাই কেউ যদি শুধু বিজ্ঞাপন দেখে চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে দিনের পর দিন হানি নাট খেতেই থাকেন, তবে তার সমস্যা আরও জটিল হতে পারে।
চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন এর গুনাগুণ সম্পর্কে কথা বলেছেন একটি গণমাধ্যমে। তার তথ্যানুযায়ী আসুন জেনে নেই কারা হানি নাট কাহোয়া থেকে বিরত থাকবেন।
ডায়াবেটিস রোগী:
মধু খেলে ডায়াবেটিস বাড়ে। তাই হানি নাট ডায়াবেটিস রোগীদের খাওয়া নিষেধ। মধুর মূল উপাদান গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ। সে ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস জনিত অন্যান্য জটিলতা, যেমন রেটিনোপ্যাথি, নিউরোপ্যাথি, ন্যাফ্রোপ্যাথিসহ অন্যান্য জটিলতাও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে।
ওজন বেশি থাকলে:
যাদের ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি এবং কমাতে চাইছেন, তারা হানি নাট খাবেন না। মধু সরল শর্করা। এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনেক বেশি বলে এটি খেলে দ্রুত ওজন বাড়ে। বাদামের পরিমাণ খুব বেশি থাকে বলে শরীরে বাড়তি ক্যালোরি যোগ হয়। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে না এসে আরও বেড়ে যেতে পারে।
কিডনি রোগী:
কিডনি রোগীদের জন্য প্রোটিনের পরিমাণ কমাতে হয়। সে ক্ষেত্রে সেকেন্ড ক্লাস প্রোটিন খেতে নিষেধ করা হয়। তাই কোনো কিডনি রোগী হানি নাট খেলে বাদামের কারণে তার ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে কিডনিজনিত জটিলতা, যেমন পা ফুলে যাওয়া, শরীর চুলকানো, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি আরও বাড়বে।
আপনার যদি বিশেষ কোনো শারীরিক জটিলতা না থাকে, তাহলে আপনি প্রতিদিন হালকা খাবার হিসেবে পরিমিত হানি নাট খেতে পারেন। অতিরিক্ত যেকোনো খাবারই স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে। তবে এটি খাওয়ার আগে এতে ব্যবহৃত মধুর গুণগত মান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।
সুত্র: চ্যানেল২৪