প্রকাশ: ২৫ মে, ২০২২ ৩:৩৯ : অপরাহ্ণ
ভারতের আসাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্ব শর্মার মাদরাসা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন সে দেশের মজলিস-এ-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) দলের প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি।
ভারতীয় গণমাধ্যম জি নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওয়াইসি বলেছেন- মাদরাসা আত্মসম্মানবোধ এবং সহানুভূতির শিক্ষা দেয়।
তিনি আরও বলেন, ‘অথচ এখন তার (হিমন্ত বিশ্ব শর্মা) মাদরাসা নয় বরং আসামের বন্যা নিয়ে ভাবা উচিত। সেখানে লাখ লাখ মানুষ বন্যার কবলে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে, মারাও গেছেন ২০ জনের মতো।’
এর আগে গত রোববার ভারতের রাজধানী দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় আসামের মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘যতদিন মাদরাসা থাকবে ততদিন শিশুরা ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার কথা ভাবতে পারবে না।’
সে সময় তিনি মাদরাসা শব্দটি বাতিলেরও দাবি জানান। বাচ্চাদের মাদরাসায় ভর্তি করাকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথেও তুলনা করেন।
তিনি আরো বলেন, কেউ তো কোরআন না পড়ার কথা বলছে না। মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান, গণিত, জীববিদ্যা, উদ্ভিদবিজ্ঞান এবং প্রাণীবিজ্ঞান শেখানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, ২-৩ ঘণ্টা ধর্মীয় শিক্ষা দিন। কিন্তু, শিক্ষার্থীদের সেভাবেই স্কুলে পড়ানো উচিত, যাতে তারা ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হতে পারে। সেটার ব্যবস্থা করুন।
আসামের মুখ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেন, ‘ইসলাম শিক্ষার পাশাপাশি বহু মাদরাসায় বিজ্ঞান, গণিত, সামাজিক বিজ্ঞান পড়ানো হয়।’
তিনি দাবি করেন, যে সময় সংঘ পরিবারের লোকেরা ব্রিটিশদের দালাল হিসেবে কাজ করতো, সে সময় বহু মাদরাসা দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে নিয়োজিত ছিল।
ওয়াইসি আসামের মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘অশিক্ষিত লোকেরা এসব বুঝবে না।’ তিনি প্রশ্ন রাখেন, হিন্দু সমাজসংস্কারক রাজা রামমোহন রায় কেন মাদরাসায় পড়তেন?
আসামের মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য মুসলমানদের জন্য মানহানিকর বলে মন্তব্য করে ওয়াইসি বলেন, ‘মুসলিমরা ভারতকে গ্রহণ করেছে এবং সেটা তারা অব্যাহত রাখবে।’
উল্লেখ্য, হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আসামের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে রাজ্যটির শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। ২০২০ সালে তিনি রাজ্যটিতে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত সকল মাদরাসা বাতিল করে দিয়ে সেগুলোকে সাধারণ স্কুলে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।