প্রকাশ: ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ২:৫১ : অপরাহ্ণ
আর ঘণ্টা তিনেক পর মাঠে গড়াতে যাচ্ছে এশিয়া কাপের ১৬তম আসরে সুপার ফোরের খেলা। যেখান প্রথম ম্যাচেই ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দল পাকিস্তানের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। একটা সময় বাংলাদেশকে কেউ গোনাতে না ধরলেও ধীরে ধীরে এর পরিবর্তন এসেছে। টাইগাররা এখন বিশ্ব ক্রিকেটে এক পরাশক্তির নাম। পাকিস্তান-বাংলাদেশের ম্যাচটি বড় ম্যাচ হয়ে ওঠার যতখানি রসদ দরকার, তার সবটাই আছে দুই দলের স্কোয়াডে। তাই তো দুই দলের লড়াইটাও যে বেশ জমবে এমনটা আশা করাই যায়।
এশিয়া কাপে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের লড়াইটা কেবলই যে দলগত থাকবে এমনটা নয়। এ ম্যাচে আলাদা করে বেশ কিছু ক্রিকেটারের দিকে নজর থাকবে ক্রিকেট বিশ্বের। যেমন পাকিস্তানের বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ান, শাহীন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফ, নাসিম শাহ কিংবা ইফতিখার আহমেদের মত ক্রিকেটাররা। অন্যদিকে বাংলাদেশে রয়েছে লিটন দাস, তাওহীদ হৃদয়, তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম, সাকিব আল হাসান, হাসান মাহমুদের মতো ক্রিকেটার। তবে ম্যাচের বড় পার্থক্য যে পেসাররা, সেটা নিশ্চিতভাবেই বলা চলে।
বোলিং লাইন
বাংলাদেশকে এই ম্যাচে বর্তমান বিশ্বের ভয়ঙ্কর পেসত্রয়ী মুখোমুখি হতে হবে। তারা হলেন শাহীন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহ ও হারিস রউফ। ইতোমধ্যে পাকিস্তানে ম্যাচের আগে তাদের পূর্ণাঙ্গ স্কোয়াড ঘোষণা করেছে। যেখানে তারা আরেকজন পেসারের অন্তর্ভূক্তি ঘটিয়েছে। সে ক্ষেত্রে পাকিস্তান যে নিজেদের মাঠে ৪ পেসার নিয়ে নামবে তা বলা যায়। নতুন বলে শাহীন আফ্রিদি, নাসিম শাহ শুরুতেই আক্রমণে আসবেন। আর পুরাতন বলে ঝড় তুলবেন হারিস রউফ ও ফাহিম আশরাফ।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও চিত্রটা প্রায় একই। তাসকিন আহমেদ ও শরীফুল ইসলাম নতুন বলে গতি দিয়ে প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করবেন। আর এরপর আছে তরুণ পেসার হাসান মাসুদের বৈচিত্র্যময় বোলিং কারুকার্য। লাহোরের রানপ্রসবা উইকেটে এই সাত পেসার যে ব্যাটারদের উপর ছড়ি ঘোরাবেন এটা স্পষ্ট। তাদের সেই সক্ষমতাও আছে।
আরেক পরিসংখ্যান বলছে ২০১৯ বিশ্বকাপের পর থেকে সারাবিশ্বে সবচেয়ে কার্যকরী পেস আক্রমণ রয়েছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কাছে। পাকিস্তানের এ পেসত্রয়ী ২০১৯ বিশ্বকাপের পর ২৯ ম্যাচে ২৭ গড়ে তুলে নিয়েছে ১৬৩ উইকেট। যা তাদের শীর্ষস্থানে রেখেছে। অন্যদিকে ৪৫ ম্যাচে ২৮ এর বেশি গড়ে ১৮৯ উইকেট নেয়া বাংলাদেশি পেসাররা আছেন দ্বিতীয় স্থানে।
ব্যাটিং লাইন
ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে লড়াইটা হবে পাকিস্তানের টপ অর্ডারের সঙ্গে বাংলাদেশের মিডল অর্ডারের। পাকিস্তানের ওপেনিংয়ে আছেন ফখর জামান ও ইমাম-উল-হক। যদিও এ দুই তারকা চলতি আসরে এখনো নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। তবে তারা যে নিজেদের দিনে বড় কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারেন তা বিশ্ব দেখেছে। ওয়ানডাউনে রয়েছেন অধিনায়ক বাবর আজম, আর চারে মোহাম্মদ রিজওয়ান পাক ব্যাটিং লাইনের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা। বাবর বর্তমানে ওয়ানডে ফরম্যাটের বিশ্বের সেরা ব্যাটার। ইমাম উল হকও আছেন দারুণ ছন্দে। বাংলাদেশের বোলিং লাইনআপের যে চূড়ান্ত পরীক্ষা তারা নেবেন, এটা বলাই যায়।
অন্যদিকে বাংলাদেশের ওপেনিংয়ে সমস্যা থাকলেও তা কিছুটা দূর হতে পারে আজকের ম্যাচে। কেননা ওপেনার লিটন দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। আগের ম্যাচে মিরাজ সফল হওয়ায় এ ম্যাচেও তাকে ওপেনিংয়ে দেখলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। তারপর রয়েছেন যথাক্রম তাওহিদ হৃদয়, মুশফিক ও সাকিব আল হাসান। মুশফিক ও সাকিবের কথা আলাদা করে বলার কিছু নেই। তারা নিজেদের যথার্থতা প্রমাণ করে যাচ্ছেন বার বার। তাওহিদ হৃদয় তরুণ ক্রিকেটার। ব্যাট হাতে কার্যকরী ইনিংসে খেলতে তার যথেষ্ট সামর্থ আছে তা ইতোমধ্যে প্রমাণ করেছেন।
অলরাউন্ডার
পাকিস্তানের মিডল অর্ডারও একেবারেই ফেলনা নয়। বিশেষ করে শাদাব খান এবং ইফতিখার আহমেদ দুজনেই ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখেন। তাদের ঝড়ো গতির ব্যাটিং শেষ দশ ওভারে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে যথেষ্ট। শাদাব খানের সঙ্গে অলরাউন্ডার হিসেবে পাল্লা দিতে পারেন সাকিব আল হাসানও। দুই দলের সেরা দুই অলরাউন্ডারই দলের জয়ে মুখ্য ভূমিকা রাখতে পারেন।