চট্টগ্রাম, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ , ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খাদ্যদ্রব্য অবৈধ মজুত করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, জাতীয় সংসদে বিল পাস

প্রকাশ: ৬ জুলাই, ২০২৩ ১১:১১ : পূর্বাহ্ণ

জাতীয় সংসদে ‘খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ এবং বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) বিল, ২০২৩ পাস হয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ ও অপরাধের জন্য শাস্তি প্রদানের লক্ষ্যে এ বিল পাস হয়।

বুধবার (৫ জুলাই) জাতীয় সংসদে বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে কণ্ঠভোটে তা পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর আনীত জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করা হয়।

প্রস্তাবিত আইনের অধীনে কেউ সরকার কর্তৃক সময় সময় প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারিত পরিমাণের অধিক খাদ্যদ্রব্য মজুত করলে কিংবা মজুত সংক্রান্ত সরকারের কোনও নির্দেশনা অমান্য করলে, তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অনূর্ধ্ব ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড প্রদান করা হবে।

 

 

এ আইনের অধীনে কোনও ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন সম্পর্কিত মিথ্যা তথ্য বা বিবৃতি তৈরি, মুদ্রণ, প্রকাশ, প্রচার কিংবা বিতরণ করলে, এটি হবে অপরাধ এবং এজন্য ৫ বছর কারাদণ্ড বা অনুর্ধ্ব ১৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

 

 

প্রস্তাবিত আইনে উৎপাদন বা বিপণন সংক্রান্ত অপরাধের জন্য ২ বছরের কারাদণ্ড বা অনূর্ধ্ব ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড এবং সরবরাহ সংক্রান্ত অপরাধের জন্য ২ বছরের কারাদণ্ড কিংবা অনূর্ধ্ব ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

এ আইনে বিতরণ, স্থানান্তর, ক্রয় অথবা বিক্রয় সংক্রান্ত অপরাধের জন্য ২ বছরের কারাদণ্ড বা অনূর্ধ্ব ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ড দেয়া হবে।

 

 

এছাড়া কোনও শ্রমিক, কর্মচারি, ঠিকাদার, মিল মালিক, ডিলার বা সরকার কর্তৃক নিযুক্ত কোনও ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন এবং এ সংক্রান্ত কোনও কর্মসম্পাদনে কর্তব্য পালনে বিরত থাকা কিংবা কর্তব্য পালনে বাধা প্রদান করলে, তাকে ১ বছরের কারাদণ্ড বা অনূর্ধ্ব ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড প্রদান করা হবে।

ফুড  (স্পেশাল কোর্ট) অ্যাক্ট, ১৯৫৬ এবং ফুড গ্রেইন সাপ্লাই (প্রিভেন্ট অব প্রিজুডিশিয়াল অ্যাক্টিভিটি) অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৯ রহিতক্রমে যুগোপযোগী করে প্রস্তাবিত আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছে।

 

 

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে মন্ত্রী বলেন, সামরিক শাসনামলে জারিকৃত অধ্যাদেশসমূহকে আইন আকারে প্রণয়ন এবং ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলের আইনসমূহকে যুগোপযোগী করে বাংলা ভাষায় নতুনভাবে প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ২০১৯ সালের ১৭ জুন মন্ত্রিসভা-বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

 

 

তিনি বলেন, বিলটিতে খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, বিপণন, মজুতকরণ, সরবরাহ, বিতরণ, স্থানান্তর, ক্রয় বা বিক্রয়, বিভ্রান্তি সৃষ্টি ইত্যাদি সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া এ আইনের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে, অবৈধভাবে খাদ্যদ্রব্য মজুতের কোনও সুযোগ থাকবে না এবং জনস্বার্থ সমুন্নত হবে মর্মে আশা করা যায়।

 

 

সূত্র – চ্যানেল২৪

Print Friendly and PDF