প্রকাশ: ৪ জুন, ২০২৩ ১২:২১ : অপরাহ্ণ
আজ উদ্বোধন হচ্ছে একাডেমিক ক্ষেত্রে দেশের প্রথম অত্যাধুনিক সমুদ্র গবেষণা কেন্দ্র চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) মেরিন সায়েন্সেস এন্ড ফিশারিজ অনুষদ। অনুষদটির উদ্বোধন করবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মণি।
সম্পূর্ণ অত্যাধুনিক এ অনুষদে ১ টি ইন্সটিটিউট ও ২ টি ডিপার্টমেন্টের আছে। মোট ৫৬ টি কক্ষ সমৃদ্ধ ৫ তলা বিশিষ্ট কাডেমিক ভবন। ৫ তলা বিশিষ্ট টিচার্স ব্লকে আছে ৩৫ টি কক্ষ। আরও আছে মেরিন একুরিয়াম ভবন। গবেষণার সুবিধার্থে সামুদ্রিক নানা পর্বের নানা গোত্রের প্রাণী থাকবে এ একুরিয়ামে। একুরিয়ামের পাশাপাশি একটি হ্যাচারিও রয়েছে এই অনুষদের অধীনে।
প্রতিটি ইন্সটিটিউট ও ডিপার্টমেন্টের জন্য আছে অত্যাধুনিক ল্যাব। একটি কমন স্পেসের পাশাপাশি শিক্ষক শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা ক্যান্টিন আছে এ অনুষদ ভবনে। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের প্রার্থনার জন্য আছে প্রেয়ার রুম। অনুষদ এলাকায় রয়েছে একটি লেক যেখানে শিক্ষার্থীরা সাতার চর্চা করতে পারবেন।
আত্যাধুনিক এই অনুষদের অন্যতম আকর্ষণীয় বিষয়ের মধ্যে রয়েছে সোলার সিস্টেম। নির্দিষ্ট ভবনের ছাদে সোলার প্যানেলগুলো বসানো থাকবে যা থেকে অনুষদের মোট চাহিদার ৬০ শতাংশ বিদ্যুৎই পাওয়া যাবে। বাকি ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ বিশ্ববিদ্যালয় সরবরাহ করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিস সায়েন্সেস এন্ড ফিশারিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম এসব বিষয় জানিয়েছেন। তিনি জানান, এ অনুষদের অধীনে বর্তমানে মেরিন সায়েন্স ইন্সটিটিউট, ওশানোগ্রাফি বিভাগ ও ফিশারিজ বিভাগের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া আরো নতুন দুটি বিভাগ অনুষদের অধিনে যুক্ত করার প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস কানাডা সরকারের সহযোগিতায় সমুদ্র বিজ্ঞান বিষয়ক দেশের একমাত্র বিদ্যাপীঠ হিসেবে ‘মেরিন বায়োলজী বিভাগ’ নামে ১৯৭১ সনে যাত্রা শুরু করে। যা পরবর্তীতে ১৯৮৩ সনে ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস ২০০৬ সনে ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস এন্ড ফিশারিজ এবং সর্বশেষ ২০১৭ সন থেকে ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস নামে স্বতন্ত্র শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
বাংলাদেশের সমুদ্র সম্পদের টেকসই ব্যবহারে প্রয়োজনীয় দক্ষ মানবসম্পদ তৈরীর পাশাপাশি নানামুখী সমুদ্র গবেষণার মাধ্যমে দেশের প্রাচীনতম এই ইনস্টিটিউট বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের পরিবেশ রক্ষা ও সুনীল অর্থনীতি প্রসারে অনন্য অবদান রেখে চলেছে। সমুদ্র বিজ্ঞান চর্চায় ৫০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এই ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে প্রয়োজনীয় কারিগরী সহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে দেশের সমুদ্রসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ রক্ষায় প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়নে পূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস, সমুদ্র গবেষণায় অধিকতর সক্ষমতা অর্জনের জন্য ২০১৭ সনে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ তহবিল থেকে প্রায় ৭২ কোটি টাকা অনুদান লাভ করে।
বর্তমানে ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস-এ সমুদ্র পর্যবেক্ষণ ও পূর্বাভাস,কোস্টাল এন্ড ওশান ডাইনামিক্স ও ইকোসিস্টেম মডেলিং, উপকূলীয় অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতি ও ডেল্টা ফরমেশন, সামুদ্রিক দূষণ ও পরিবেশ ব্যবস্থাপনা, সুনীল অর্থনীতি প্রসারে মেরিকালচার-সহ বায়োটেকনোলজি, সামুদ্রিক সম্পদ ও সমুদ্র অঞ্চল ব্যবস্থাপনায় মেরিন স্পেশাল প্ল্যানিং ইত্যাদি বিষয়ে উচ্চতর গবেষণা চলমান রয়েছে।
সূত্র – চ্যানেল২৪