চট্টগ্রাম, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ , ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চায়ের স্টলে টেলিভিশন না চালানোর নির্দেশনা ওসির

প্রকাশ: ১৬ মে, ২০২৩ ১০:৫১ : পূর্বাহ্ণ

চায়ের স্টলে টেলিভিশন না চালানোর নির্দেশনা দিয়ে মাইকিং করে প্রশংসায় ভাসছেন ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিন। হ্যান্ডমাইক হাতে মাইকিং করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) ছড়িয়ে পড়েছে। এরপর থেকেই প্রশংসায় ভাসছেন তিনি।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘুরে ঘুরে হ্যান্ডমাইক নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন এবং পর্যায়ক্রমে উপজেলার ১২ ইউনিয়নে প্রচারণা চালাবেন বলে জানিয়েছেন ওসি মাইন উদ্দিন।

ওই ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার দিয়ে মামুনুর রশিদ নামে একজন লিখেছেন, ওসির এমন উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়। এতে করে বর্তমান সমাজে অশান্ত একটা পরিবেশ বিরাজ করছে, তা কমে আসবে।

 

 

পার্শ্ববর্তী উপজেলা ফুলবাড়িয়া উপজেলার বাসিন্দা এমএ কালাম নামে একজন ওসির এমন কাজের প্রশংসা করেন। তিনি নিজ থানা এলাকাতেও এমন উদ্যোগ নেয়ার জন্য দাবি জানান স্থানীয় প্রশাসনের কাছে। তিনি লিখেন, চায়ের স্টল থেকে টেলিভিশন সরানো হলে আড্ডা কমে আসবে। আড্ডা কমে আসলে যুবকরা মাদক থেকে সরে আসবে।

 

 

উপজেলার ধানীখোলা এলাকার হামিমুর রহমান বলেন, চায়ের স্টল থেকে টেলিভিশন অপসারণের নির্দেশনার পর গভীর রাত পর্যন্ত আড্ডা দেয়ার অভ্যাস থেকে মানুষ ফিরে আসতে শুরু করেছে। আড্ডা ছেড়ে তারা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় দেয়া শুরু করেছেন। এতে পারিবারিক কলহ কমে আসবে বলে আমরা ধারণা করছি। ওসির এমন উদ্যোগে এলাকাতে সাড়া ফেলেছে।

 

 

একই উপজেলার রাগামারা গ্রামের মামুন তালুকদার বলেন, চায়ের স্টল থেকে টেলিভিশন অপসারণের জন্য প্রচারণা চালাচ্ছেন ত্রিশাল থানার ওসি মাইন উদ্দিন, এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) দেখেছি। এতে করে বর্তমান সময়ে আইপিএল দেখে যুবকরা অনলাইনে বাজি ধরত তা কমে আসবে এবং মাদক সমাজ থেকে কমে আসবে।

 

 

এ বিষয়ে ওসি মাইন উদ্দিন বলেন, চায়ের স্টলগুলোতে সকাল থেকে রাত ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত টেলিভিশন চালানোর বিষয়টি অনেকেই আমার কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছিল। এমন অভিযোগ পাওয়ার পর খোঁজখবর নিয়ে চায়ের স্টলে টিভি চালানো বন্ধ করার উদ্যোগ নেই। পরে গত ১১ মে উপজেলার রামপুন ইউনিয়নে প্রথম প্রচারণা শুরু করি। পরে সাকুয়া, মঠবাড়িয়া ও ত্রিশাল ইউনিয়নে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে এই উপজেলার ১২ ইউনিয়নে চালানো হবে।

 

 

তিনি আরও বলেন, চা দোকানগুলোতে টেলিভিশন চালানোর কারণে উঠতি বয়সের যুবকসহ বিভিন্ন লোকজন অহেতুক বসে আড্ডা দেন। আইপিএল খেলা দেখার পাশাপাশি যুবকরা অনলাইনে বাজি ধরেন। বাজিতে হেরে টাকার সমস্যা হলে অনেকে বন্ধু বা দোকানদারের কাছ থেকে অধিক সুদে টাকা নিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়। পরে তারা টাকার জন্য বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত হয় এবং পরে টাকার জন্য পরিবারকে চাপ দেয়। এতে মা-বাবা বিপাকে পড়েন।

 

 

তিনি বলেন, অনেকে চায়ের স্টলে বসে রাত ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত আড্ডা দেয়। এতে অনেকেই মা, বাবা, স্ত্রী, সন্তানকে সময় দিতে পারে না। চায়ের স্টলে টেলিভিশন না চললে তারা পরিবারের সদস্যদের সময় দিতে পারবে। এতে পরিবারে সুখ শান্তি ফিরে আসবে।

 

 

মূলত এলাকার যুব সমাজকে জুয়া, মাদকের মতো নেশা থেকে ফিরিয়ে আনা, পারিবারিক শান্তি ফিরিয়ে আনা, সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় চায়ের স্টল থেকে টেলিভিশন সরিয়ে নেয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় সচেতনতামূলক বক্তব্যসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি এবং সকলের সহযোগিতা পেলে সফল হবেন বলেও জানান তিনি।

 

সূত্র – চ্যানেল২৪

Print Friendly and PDF