প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর, ২০২৫ ৫:০৫ : অপরাহ্ণ
বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার দুর্গম এলাকার তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৩ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলনের অভিযোগে বিভাগীয় মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছে পার্বত্য জেলা পরিষদ। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই এই নির্দেশনা দিয়েছেন।
এই ব্যবস্থার আওতায় পড়া বিদ্যালয়গুলো হলো— রেংপুং হেডম্যানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাইতুমণি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মেনকিউ মেনকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে দেওয়া এক অফিস আদেশে জেলা পরিষদ জানিয়েছে, এই ১৩ জন শিক্ষক কর্মস্থলে যাননি, শিক্ষার্থীদেরও পাঠদান করেননি, কিন্তু নিয়মিত বেতন-ভাতা নিয়েছেন। অনেকে বেতন নিয়ে তামাক চাষসহ বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজ করেছেন এবং নিজেদের পরিবর্তে বর্গা শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন।
স্থানীয় অভিযোগ ও গণমাধ্যমের সংবাদের সত্যতা যাচাই করতে জেলা পরিষদ একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল, যার প্রধান ছিলেন জেলা পরিষদের প্রাথমিক শিক্ষাবিষয়ক কমিটির আহ্বায়ক রাজুময় তঞ্চঙ্গ্যা। কমিটি তাদের প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে এবং ১৩ জন শিক্ষকের কেউই সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি। এ কারণেই তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাসহ প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০২২ সালের ১৩ এপ্রিল এই তিনটি বিদ্যালয় সরকারিকরণের পর থেকেই শিক্ষকদের অনুপস্থিতি, বর্গা শিক্ষক নিয়োগ ও ভুয়া উপস্থিতি দেখিয়ে বেতন নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
অভিযোগের বিষয়ে রাইতুমণিপাড়া বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মংসাথুই মারমা জানান, তিনি এক বছর প্রশিক্ষণে ছিলেন এবং দুর্গমতার কারণে নারী শিক্ষকদের পক্ষে প্রতিদিন উপস্থিতি থাকা সম্ভব হয় না, তবে বিদ্যালয় বন্ধ থাকে না। মেনকিউ মেনকপাড়া বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক রাজিব ম্রোও দুর্গমতা ও পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির উল্লেখ করে শাস্তির আগে বাস্তব অবস্থা বিবেচনা করার অনুরোধ জানান।
আলীকদম উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিদ্যালয়গুলো অত্যন্ত দুর্গম হলেও জেলা পরিষদের তদন্তের পর শিক্ষা কার্যক্রমে অগ্রগতি হয়েছে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।