চট্টগ্রাম, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫ , ৭ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নতুন বেতন কাঠামো: বড় সুখবর পেলেন বেসরকারি চাকরিজীবীরাও

প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর, ২০২৫ ১১:০৩ : পূর্বাহ্ণ

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন জাতীয় বেতন কাঠামো প্রণয়নে উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় বেতন কমিশন ইতোমধ্যে বিভিন্ন সরকারি সংগঠন ও সমিতির সঙ্গে বৈঠক করেছে, যেখানে সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা তাদের মতামত, প্রস্তাবনা ও উদ্বেগ তুলে ধরেছেন। এবার এই প্রক্রিয়ায় বেসরকারি খাতের বেতন কাঠামো নিয়েও প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) মহাসচিব মো. আলমগীর।

দেশের একটি গণমাধ্যমকে তিনি জানান, সংগঠনটি বর্তমানে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করছে যা খুব শিগগিরই বেতন কমিশনে জমা দেওয়া হবে। বেসরকারি খাতে বেতন সুবিধা মালিক ও শ্রমিকের পারস্পরিক সম্পর্কের ওপর নির্ভর করে গড়ে ওঠে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ন্যূনতম বেতন ২৫-৩০ হাজার টাকার মধ্যে হওয়া উচিত। কারণ একজন কর্মজীবীর পরিবারের চার সদস্যের মৌলিক জীবনযাত্রার নিশ্চয়তা দিতে হলে এটাই হতে পারে একটি বাস্তবসম্মত সীমা।

এফবিসিসিআই মহাসচিব বলেন, প্রাইভেট সেক্টর সবসময় কম খরচে বেশি উৎপাদন চায়, কিন্তু এর মধ্যেও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে ন্যূনতম জীবনের নিশ্চয়তা দেওয়া জরুরি। তিনি মনে করেন, বেতন কাঠামো এমন হওয়া উচিত যাতে একজন মানুষ উচ্চবিলাসী না হলেও সম্মানজনক ও স্থিতিশীল জীবনযাপন করতে পারেন। এ জন্য বেতন নির্ধারণে শুধু বাজার চাহিদা নয়, মূল্যস্ফীতির প্রভাবও বিবেচনায় আনা উচিত।

তিনি আরও বলেন, অনেক বিদেশি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে বেতন কাঠামো তুলনামূলক ভালো হলেও অধিকাংশ দেশীয় কোম্পানিতে তা এখনও দুর্বল। এর পেছনে দেশের সংস্কৃতি ও অর্থনৈতিক কাঠামো দায়ী। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব বৈষম্য দূর হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। তার মতে, প্রতি বছর মূল্যস্ফীতি সমন্বয় করে বেতন বৃদ্ধি করলে কর্মীরা কিছুটা স্বস্তি পাবে।

বেসরকারি চাকরিতে বেতন বৃদ্ধির হার কম থাকার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, চাকরিপ্রার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলো সহজেই বিকল্প নিয়োগ দিতে পারে, ফলে শ্রমিকরা চাপের মুখে থাকেন। এছাড়া সঠিক অডিট ও শ্রমিক অধিকার রক্ষায় তদারকির অভাবও একটি বড় কারণ। এই পরিস্থিতিকে তিনি আধুনিক যুগের ‘শোষণ’ হিসেবে আখ্যা দেন।

সবশেষে এফবিসিসিআই মহাসচিব মো. আলমগীর বলেন, নাগরিকের মানবিক মর্যাদা রক্ষা ও ন্যায্য জীবিকার নিশ্চয়তার জন্য শুধু সরকারি-বেসরকারি ভেদে নয়, সামগ্রিকভাবে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায়সঙ্গত বেতন কাঠামো গড়ে তোলা জরুরি। তা না হলে বৈষম্য ও দুর্নীতি বাড়বে বলেও তিনি সতর্ক করেন।

Print Friendly and PDF