চট্টগ্রাম, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫ , ৬ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গুমের মামলার আসামিদের কোন কারাগারে রাখা হবে, যা জানালেন চিফ প্রসিকিউটর

প্রকাশ: ২২ অক্টোবর, ২০২৫ ১০:৪২ : পূর্বাহ্ণ

গুম-খুন ও জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কোন কারাগারে রাখা হবে, তা নির্ধারণ করবে কারা কর্তৃপক্ষ— এ কথা জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।

আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। প্যানেলের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

আদালতের আদেশের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, আসামিদের কোন কারাগারে রাখা হবে, সে সিদ্ধান্ত কারা কর্তৃপক্ষ নেবে। আদালতের প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করায় সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

এদিন ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাসহ পলাতক অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেয়। গুম সংক্রান্ত দুই মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য হয়েছে ২০ নভেম্বর, আর রামপুরায় গত বছরের ১৮ ও ১৯ জুলাই সংঘটিত গণহত্যার মামলার শুনানি হবে ৫ নভেম্বর।

কারাগারে পাঠানো ১৫ সেনা কর্মকর্তারা হলেন- র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র‍্যাব গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লে. কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লে. কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, লে. কর্নেল মো. রেদোয়ানুল ইসলাম (বিজিবি), মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম (বিজিবি), মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন (ডিজিএফআই), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী (ডিজিএফআই), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী (ডিজিএফআই)।

এর আগে গত ১১ অক্টোবর সেনা সদরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অভিযোগপত্রে নাম থাকা ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এরপর ১২ অক্টোবর সরকার ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িক কারাগার ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে, যা ১৩ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কারা-১ শাখা থেকে নিশ্চিত করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮-এর ৫৪১(১) ধারা এবং The Prisons Act, 1894-এর ৩(বি) ধারা অনুযায়ী, ঢাকা সেনানিবাসের বাশার রোড সংলগ্ন ‘এমইএস’ বিল্ডিং নং-৫৪-কে সাময়িকভাবে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তবে ভবনটি কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হবে, তা প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়নি।

উল্লেখ্য, ৮ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এদের মধ্যে ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ মহাপরিচালকসহ ২৫ জন সেনা কর্মকর্তা রয়েছেন, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে চাকরিরত অবস্থায় সর্বোচ্চ সংখ্যক সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একসঙ্গে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ঘটনা।

২১ অক্টোবরের মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করে ২২ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ ছিল, যা অনুযায়ী কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।

Print Friendly and PDF