প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১:১৪ : অপরাহ্ণ
বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পূর্ব চাম্বল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইসলামাবাদ নতুন পাড়া এলাকায় ভুল জাতের ধানের বীজ সরবরাহের অভিযোগে কয়েকজন কৃষক ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা হলেন- মো. আব্দুল খালেক, মো. জসিম উদ্দিন, মো. আবুল কাশেম ও মো. সৈয়্যদ নুর।
কৃষকরা জানান, আব্দুল খালেক ৩০ গণ্ডা, জসিম উদ্দিন ৪০ গণ্ডা, আবুল কাশেম ২০ গণ্ডা এবং সৈয়্যদ নুর ২৫ গণ্ডা জমিতে ব্রি-ধান ৭৫ জাতের ধান রোপণ করেন। কানি প্রতি লাগিয়ত, বীজ, চারা রোপণ, সার ও পরিচর্যাসহ প্রতি কৃষকের গড়ে প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। চারজন কৃষকের মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকা।
কৃষকরা বলেন, ‘ব্রি-ধান ৭৫ মূলত রোপা আমন মৌসুমের জাত। সাধারণত শ্রাবণ থেকে ভাদ্র মাসের মধ্যে চারা রোপণ করলে ২ থেকে আড়াই মাস পর ধানের মুকুল আসে। কিন্তু আমরা আষাঢ়ের ২৮ তারিখে বীজ বপন ও শ্রাবণের ২২ তারিখে চারা রোপণের ১২ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই ধানের ফুল আসতে দেখি- যা সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক। এরপর ধানক্ষেত ঝলসে যেতে শুরু করে।’
তারা অভিযোগ করেন, বিষয়টি জানানো সত্ত্বেও স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মনছুর সরেজমিনে না গিয়ে রহস্যজনকভাবে নীরবতা পালন করছেন। কৃষকদের দাবি, ব্রি-ধান ৭৫-এর পরিবর্তে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে ভুল জাতের বীজ সরবরাহ করা হয়েছে, যার ফলে তাদের এ বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
কৃষকরা আরও জানিয়েছেন, আমাদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে জানি- চারা রোপণের অন্তত দুই মাস পর ধানের মুকুল আসে। এবার ১২-১৫ দিনের মধ্যেই ফুল আসায় ফসল একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। এই ক্ষতির দায় কোনোভাবেই কৃষি অফিস এড়াতে পারে না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাম্বল ইউনিয়নে দায়িত্বরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মনছুর বলেন, ‘ব্রি-ধান ৭৫ জাতের বীজ তলায় বপনের পর সাধারণত ১৮ দিনের মধ্যে চারা রোপণ করতে হয়। কৃষকরা হয়তো দেরিতে চারা রোপণ করেছেন। তবুও বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব।’ তবে কৃষকরা জানান, তারা একাধিকবার মনছুরকে সরেজমিনে দেখতে বললেও তিনি আসেননি।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বাঁশখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘ঘটনাটি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। এটি ভুল জাতের বীজ সরবরাহের কারণে হয়েছে কি-না, তা যাচাই করতে একটি টেকনিক্যাল টিম মাঠে পাঠানো হবে। যদি প্রমাণ মেলে যে ভুল বীজ সরবরাহ করা হয়েছে, তবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য ক্ষতিপূরণ বা পুনর্ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নেয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেক সময় আবহাওয়ার পরিবর্তন ও তাপমাত্রাজনিত কারণে জাতের বৃদ্ধি পর্যায়ে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়। তবে কৃষকদের অভিযোগ আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি।’