চট্টগ্রাম, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫ , ২রা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রতিবেদন হুবহু, নেই নিয়মনীতি: ১১ পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল

প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০৯ : অপরাহ্ণ

নিয়ম-নীতি না মেনে একই ধরনের প্রতিবেদন ছাপানো এবং অনুমোদিত ছাপাখানায় না ছাপানোর অভিযোগে ময়মনসিংহ থেকে প্রকাশিত ১১টি পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করেছে জেলা প্রশাসন। সোমবার (১৩ অক্টোবর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবিবা মীরা।

জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার এসব পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশকদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ডিক্লারেশন বাতিলের চিঠি পাঠানো হয়। ডিক্লারেশন বাতিল হওয়া পত্রিকাগুলো হলো:
দৈনিক আজকের ময়মনসিংহ, দৈনিক দেশের খবর, দৈনিক বিশ্বের মুখপত্র, দৈনিক ঈষিকা, দৈনিক অদম্য বাংলা, দৈনিক আলোকিত ময়মনসিংহ, দৈনিক দিগন্ত বাংলা, দৈনিক জাহান, দৈনিক কিষাণের দেশ, হৃদয়ে বাংলাদেশ এবং সাপ্তাহিক পরিধি।

জেলা প্রশাসনের পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত ১০ ও ১৩ এপ্রিল প্রকাশিত এসব পত্রিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় পাতায় হুবহু এক ধরনের সংবাদ ও ছবি ছাপানো হয়। পাশাপাশি, এগুলো অনুমোদিত ছাপাখানায় মুদ্রিত হয়নি। এ বিষয়ে গত ১৬ এপ্রিল এসব পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশককে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়।

জবাবে সম্পাদকরা ২১ এপ্রিল দায় স্বীকার করে জানান, বাহ্যিক ছাপাখানার দায়িত্বহীনতা এবং নিজস্ব মুদ্রণ ব্যবস্থার ত্রুটির কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে জেলা প্রশাসন তাদের ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য মনে করেনি।

পরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরেজমিন তদন্ত করেন। সেই তদন্তেও প্রমাণিত হয়, সংশ্লিষ্ট পত্রিকাগুলো অনুমোদিত ছাপাখানায় ছাপানো হয়নি, যা ছাপাখানা ও প্রকাশনা (ঘোষণা ও নিবন্ধীকরণ) আইন, ১৯৭৩–এর ৪ ও ৭ ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

ফলে আইনটির ১০ ধারা অনুযায়ী এসব পত্রিকার ঘোষণাপত্র বাতিল করা হয়।

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে দৈনিক আলোকিত ময়মনসিংহ ও দৈনিক দিগন্ত বাংলা–এর সম্পাদক আনম ফারুক বলেন, “আমি বিষয়টি শুনেছি, তবে এখনো অফিসিয়ালি চিঠি হাতে পাইনি। বিস্তারিত জেনে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।”

অন্যদিকে, দৈনিক জাহান পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক আবুল হাসেম বলেন, “একটি ঐতিহ্যবাহী পত্রিকার এই পরিণতি দুঃখজনক। তবে কপাল খারাপ হলে এমনই হয়। সব কিছু মোকাবিলা করেই সামনে এগোতে হবে।”

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবিবা মীরা বলেন, “গত ৩০ মার্চ, ৭, ৮, ৯, ১০, ১২ ও ১৩ এপ্রিল প্রকাশিত পত্রিকাগুলোর দ্বিতীয় ও তৃতীয় পাতায় হুবহু একই প্রতিবেদন থাকায় বিষয়টি তদন্তের পর আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”

Print Friendly and PDF