প্রকাশ: ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১০:৫০ : পূর্বাহ্ণ
ভারতের আগরতলার ত্রিপুরার কুঞ্জবনে অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (০২ ডিসেম্বর) রাত সোয়া ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ বের করেন। এ সময় বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিলে যোগ দেন। পরে মিছিলটি ভিসি চত্বর হয়ে পুনরায় রাজু ভাস্কর্যের সামনে এক সমাবেশে মিলিত হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা- ‘গোলামী না আজাদী, আজাদী আজাদী’; ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’; ‘দিলি্ল না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’; ‘ভারতীয় আগ্রাসন, রুখে দাও জনগণ’; ‘হাইকমিশনে/আগরতলায় হামলা কেন৷ দিল্লি তুই জবাব দে’; ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’; ‘আমরা কি চাই, আজাদী আজাদী’; ‘একশন একশন, ডাইরেক্ট একশন’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা জানান, ভারত আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ। তাদের সাথে আমাদের কূটনীতিক সম্পর্ক থাকবে, প্রতিবেশী হিসেবে ভালো সম্পর্ক থাকবে। কিন্তু কোন ভাবেই তাদের সাথে আমাদের রাজা-প্রজার সম্পর্ক হতে পারে না৷ ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলার জন্য অবশ্যই ভারতকে ক্ষমা চাইতে হবে৷
তারা আরও বলেন, ভারতকে বলতে চাই, এদেশে আর আওয়ামী লীগের ক্ষমতা নেই৷ সুতরাং তারা যেন আওয়ামী লীগের আমলের মতো করে এদেশে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা না করে। দিল্লিকে হুশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই শরীরে এক ফোটা রক্ত থাকা পর্যন্ত আমরা ভারতের আধিপত্য মেনে নেব না। যেভাবে আমরা হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করেছি সেভাবেই আমরা দিল্লির আগ্রাসনও রুখে দেবো।
জনপ্রিয় কন্টেন্ট ক্রিয়েটর কাফি বলেন, আমরা সবেমাত্র গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ পেলাম। এখনো অনেকের চোখ নাই, পা নাই, অনেকে কবরে শুয়ে আছে। এসবের জন্য তাদের মায়াকান্না হয় না। তাদের মায়াকান্না হয় আবার ক্ষমতায় আসতে। আমরা তাদেরকে দেই স্বাদ পুনরায় নিতে দেবো না। দিল্লির সাথে আমাদের সম্পর্ক হবে চোখে চোখ রেখে। আমরা গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়েছি দিল্লির দাদাদের দাদাগিরি করার জন্য না। মাতৃভূমি না হয় মৃত্যু। আমরা দেশের যেকোনো প্রয়োজনে, দিল্লির বিরুদ্ধে গিয়ে আমরা নিজের রক্ত ঢেলে দেবো।
ভারত ইস্যুতে জগন্নাথ হল নিয়ে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগকে নাকচ করে জগন্নাথ হলের শিক্ষার্থী জয় পাল বলেন, আমরা সবাই বাংলাদেশি। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আমরা জাত পাত সব ভুলে আমাদের পরিচয়, আমরা বাংলাদেশি। আমরা দেখেছি বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় সনাতনীদের নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনের ওপর যে ন্যাক্কারজনক হামলা হয়েছে তার তীব্র নিন্দা শুধু জগন্নাথ হলই নয় সারা বাংলাদেশের মানুষকেই জানাতে হবে। ভারত ইস্যুতে জগন্নাথ হলকে নিয়ে অনলাইনে বিভিন্ন কথা বলা হয়। আমরা নাকি ভারতের দালাল কিন্তু এই মিছিলে আজ জগন্নাথ হল থেকে সবচেয়ে বেশি লোক এসেছে। আমাদের একটাই পরিচয় আমরা বাংলাদেশী।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, ভারতকে বলতে চাই, এদেশে আর আওয়ামীলীগের ক্ষমতা নেই৷ সুতরাং তারা যেনো আওয়ামীলীগের আমলের মতো করে এদেশে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা না করে। আমরা বিট্রিশ শাসনের বিরুদ্ধে লড়েছি, পাকিস্তানের বৈষম্যনীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। দেশের প্রশ্নে আমরা আবারও লড়াইয়ে নামতে রাজি আছি। শরীরে এক ফোটা রক্ত থাকা পর্যন্ত আমরা ভারতের আধিপত্য মেনে নেবো না। যেভাবে আমরা হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করেছি সেভাবেই আমরা দিল্লির আগ্রাসনও রুখে দেবো।