প্রকাশ: ৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১০:৪৫ : পূর্বাহ্ণ
টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সীমান্তবর্তী জেলা শেরপুরের সবকয়টি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরই মধ্যে কোনো কোনো নদীর একাধিক স্থানে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে আশপাশের গ্রাম। জেলা শহরসহ নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতি উপজেলা ও পৌর শহরে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শত শত মানুষ।
শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিপদসীমার ৬৫৯ মিলিমিটার জেলার পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদের পানি, পাহাড়ি নদী চেল্লাখালীর পানি ৫২৫ মিলিমিটার ও ভোগাই নদীর দুটি পয়েন্টের পানি ১৭২ মিলিমিটার এবং ৫৬ মিলিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে অন্য দুটি পাহাড়ি নদী মহারশি ও সোমেশ্বরীর পানি। টানা ভারী বর্ষণ এবং ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে এসব নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে নদীর বাঁধ ভেঙে ও বাঁধ উপচে প্রবল বেগে ঢলের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।
এরই মধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে ঝিনাইগাতি উপজেলা সদর বাজার ও উপজেলা পরিষদ। নালিতাবাড়ীর শিমুলতলা, ঘাকপাড়া, ম-লিয়াপাড়া ভজপাড়া ও সন্নাসীভিটায় ভোগাই এবং চেল্লাখালীর বাঁধ ভেঙেছে। নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে শেরপুর-নালিতাবাড়ী ভায়া গাজিরখামার সড়ক। চেল্লাখালী নদীর তীরবর্তী বাতকুচি এলাকা প্লাবিত হয়ে অনেকে বাড়িতে আটকা পড়েছে।
চেল্লাখালী নদীর পানিতে তলিয়ে নন্নী-আমবাগান সড়ক, নন্নী-মধুটিলা ইকোপার্ক সড়ক, আমবাগান-বাতকুচি সড়কে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পথে। এসব এলাকায় এখন পানি বন্দিকয়েক হাজার মানুষ । এ ছাড়া জেলার প্রতিটি শহরে জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ।
ভারী বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলের পানিতে নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতির অন্তত ১০টি ইউনিয়নে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ছে। তলিয়ে গেছে শত শত একর জমির উঠতি আমন ফসল, সবজি বাগান এবং মাছের ঘের। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত বৃষ্টির পরিমাণ রেকর্ড করা হয়েছে শেরপুরে ১৭৭ মিলিমিটার এবং নালিতাবাড়ীর দুটি পয়েন্টে ২৫৫ ও ২৬০ মিলিমিটার।
শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, আটকা পড়াদের উদ্ধারে অংশ নিয়েছেন ঝিনাইগাতি এবং নালিতাবাড়ী ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রয়েছে।