চট্টগ্রাম, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বন্যায় এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত ৪৮ লাখ মানুষ

প্রকাশ: ২৪ আগস্ট, ২০২৪ ১০:২৯ : পূর্বাহ্ণ

 

দেশে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরলসভাবে কাজ করছে সেনা, নৌ ও  বিমান বাহিনী এবং সীমান্ত রক্ষাকারী বিজিবির বিপুল সংখ্যক সদস্য। তারা বন্যা কবলিত এলাকায় পানিবন্দী মানুষকে নিরাপদ জায়গায় নিতে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করছে। এছাড়াও বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ এবং চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত এই বাহিনীগুলোর সদস্যরা এমন মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।

 

উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টিতে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ১১ জেলা বন্যায় বিপর্যস্ত। প্রবল পানির স্রোতে ভেঙে যাচ্ছে বাঁধ, এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত ৪৮ লাখ মানুষ।

এই আকস্মিক বন্যা মোকাবেলায় নিরলসভাবে কাজ করছে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী এবং সীমান্ত রক্ষাকারী বিজিবির বিপুল সংখ্যক সদস্য। বন্যা এলাকায় পানিবন্দী মানুষকে নিরাপদ জায়গায় নিতে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করছে। বন্যার্তদের দিচ্ছে ত্রাণ ও চিকিৎসা।

 

শুক্রবার ফেনীর পরশুরামসহ বিভিন্ন বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন সেনা প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। কুমিল্লা সেনানিবাসে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সেনাবাহিনীর কাজ সম্পর্কে অবহিত হন। উদ্ধারকাজে নিয়োজিত সেনা সদস্যদেরকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন।

সেনাবাহিনীর ১৭, ২৪ ও ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের সদস্যরা যথাক্রমে সিলেট, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা এলাকায় বন্যা দুর্গতদের উদ্ধারে মোতায়েন আছে। বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ ও চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। খাগড়াছড়িতে বন্যা দুর্গত এলাকায়ও সেনাবাহিনীর খাবার বিতরন অব্যাহত আছে।

 

বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁনও শুক্রবার বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং ত্রাণ বিতরণ কাজ তত্ত্বাবধান করেন। হেলিকপ্টার থেকে প্যারাস্যুটের মাধ্যমে বন্যা এলাকায় দুর্গতদের ত্রাণ পাঠায় বিমান বাহিনী। এছাড়া ফেনীর পরশুরামসহ অন্যান্য বন্যা দুর্গত এলাকায় উদ্ধার কাজ  করে ও চিকিৎসা সহায়তা দেয়।

নৌবাহিনীও ভয়াবহ বন্যা মোকাবিলায় চিকিৎসা সহায়তা ও উদ্ধার অভিযান পরচিালনা করছে। নৌবাহিনীর সদস্যরাও বোট, লাইফ জ্যাকেট ও ডুবুরিসহ নানান উপায়ে বন্যার্তদের উদ্ধার করার কাজ করছে। পাশাপাশি চিকিৎসা, ঔষধ ও খাবার স্যালাইন, শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবার দিচ্ছে।

 

সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী বিজিবিও বন্যা এলাকায় উদ্ধার কাজ, রান্না করা খাবার বিতরণ, চিকিৎসা ও ঔষধ বিতরণ করছে। পাঁচশ’ পরিবারকে দেবার জন্য শুক্রবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের কাছে প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী হস্তান্তর করেছে বিজিবি। বন্যার্তদের সহায়তায় রিলিফ ফান্ড খোলাসহ বিজিবির সকল সদস্য তাদের একদিনের বেতনের সমপরিমাণ টাকা প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে প্রদান করেছে।

 

ভয়াবহ এই বন্যায় ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষমীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার প্রায় ১০ লাখ পরিবার এখন পানিবন্দি। ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৪৮ লাখ মানুষ। এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত সামরিক ও আধাসামিরক বাহিনীর সদস্যরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে কাধে কাধ মিলিয়ে মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।

 

Print Friendly and PDF