চট্টগ্রাম, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ , ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এ বছরে তৃতীয়বার বন্যাপ্লাবিত হলো ফেনী

প্রকাশ: ২১ আগস্ট, ২০২৪ ১২:১৫ : অপরাহ্ণ

 

তৃতীয় দফা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে ফেনী জেলার ছাগলনাইয়ায়,পরশুরাম ও ফুলগাজীর  শতাধিক গ্রাম। তলিয়ে গেছে উপজেলা দুটির অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সড়ক, বন্ধ রয়েছে যান চলাচল। টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের আগের ১৭টি ভাঙন অংশে ফের পানি প্রবেশ করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ২ লক্ষাধিক মানুষ। বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে নদীর পানি । তবে দুই উপজেলা প্রশাসন বলছে, তারা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

 

 

বন্যার কবলে পড়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জেলার জনজীবন । জেলা শহরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নিরাপত্তাজনিত কারনে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্দ রয়েছে। চলতি বছর তৃতীয়  বার এই দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। ক্ষতিগ্রস্থ হয় লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ , কৃষি ও আসবাবপত্র। চলতি মাসে টানা বৃষ্টিতে ও ভারতের পাহাড়ী পানির চাপে ফেনীর ৩টি নদীতে প্রায় ২৫ টি স্থানে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। নদী ভাঙ্গনের ফলে প্লাবিত হয় ৯০টি গ্রাম। পানিবন্ধী হয়ে পড়ে ৩টি উপজেলার প্রায় ২ লক্ষ মানুষ। ইতিমধ্যে উপজেলাগুলোতে বেশ কয়েকটি আশ্রয়নকেন্দ্র চালু করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন বানভাসী মানুষের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ অব্যাহত রেখেছে। তবে এলাকাবাসীর দাবী তারা এই দূর্ভোগ আর চায় না।  স্থায়ী বাঁধ নির্মানের দাবী করেছেন তারা। এবার বন্যার পানি দেখে এলাকাবাসী বলছে গত ৩০ বছরে এত পানি দেখেনি তারা।  ফেনী পানি উন্নয়ন বোডের হিসেব মতে গত ১৫ বছরে বন্যাপরবর্তী নদ-নদীগুলোর মেরামত ব্যায় হয়েছে প্রায় ২২ কোটি টাকা। নামে মাত্র এই সকল মেরামত কাজ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেণ স্থানীয়রা। নদী ড্রেজিং সহ স্থায়ী বাঁধ নির্মানের দাবী অব্যাহত থাকলেও কার্যত কোন ফল হয়নি। অন্যান্য বার বন্যা পরবর্তী ভাঙ্গন মেরামত করা হলেও এবার রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাঁধ মেরামত করা হয়নি। ফলে গত কয়দিনের বৃষ্টিতে আবরো পানি লোকালয়ে ঢুকে বন্যার সৃষ্টি হয়।

 

 

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রত্যেক বছর বন্যার পর ভাঙ্গা অংশগুলো মেরামত করে স্থায়ী বাঁধ নির্মানের জন্য মন্ত্রনালয়কে অবহিত করা হয়। গত ১৫ বছরে ২১কোটি টাকা ব্যায় হয়েছে বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী  রাশেদ শাহরিয়ার।

ফেনী জেলা কৃষি অফিসের উপ-পরিচালক বলছেন কৃষিজমিতে অপরিকল্পিত বাড়ীঘর নির্মান হওয়ায় আশপাশের নদনদী গুলো ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি ঢুকলে তা নিস্কাশন হতে সময় লাগে। এভাবে চলতে থাকলে সামনে আরো খারাপ অবস্থা হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

ফেনীর মুহুরী নদীর স্থায়ী বাঁধ নির্মান হবে এমটাই প্রত্যাশা করেন ফুলগাজী ও পরশুরামের মানুষ। আর দূর্ভোগ পোহাতে চান না তারা। নদী ড্রেজিং ও স্থায়ী বাঁধ নির্মানের দাবী এলাকাবাসীর।

 

Print Friendly and PDF