প্রকাশ: ২২ জুন, ২০২৪ ১০:৪৮ : পূর্বাহ্ণ
বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ের অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মকান্ডের পথে তাদের যাত্রায় যে চ্যালেঞ্জগুলো প্রত্যক্ষ করছে তা দূর করতে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে আমরা যে চ্যালেঞ্জগুলো অনুভব করছি সেগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে পারি।”
শুক্রবার সন্ধ্যায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর আবাসস্থলে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একথা বলেন।
সাক্ষাতের পরে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, দুই দেশে নতুন সরকার গঠনের পর দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিতে উভয়ে আলোচনা করেছেন।
মুখ্য সচিব বলেন, “দুটি নতুন সরকার (ভারত ও বাংলাদেশে) ক্ষমতায় এসেছে ম্যান্ডেট নিয়ে (জনগণের)। সুতরাং, দুই দেশের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে।”
ড. জয়শঙ্কর বলেন, যে গত দশ বছরে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক এমন উচ্চতায় পৌঁছেছে, এই সম্পর্ককে এখন নতুন অধ্যায়ে নেওয়া যেতে পারে।
“এবং এটি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে করা হবে,” ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্বৃত করে তোফাজ্জল হোসেন মিয়া জানান।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বলেন, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে লজিস্টিক, জ্বালানি ও কানেকটিভিটি খাতে গভীরভাবে কাজ করতে চায়।
আগামী ২৩শে জুন আওয়ামী লীগের হীরক জয়ন্তী উদযাপনের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিমসটেকের (বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন) জন্য একটি নতুন ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানান ড. এস. জয়শঙ্কর এবং তিনি আশা প্রকাশ করেন যে প্রধানমন্ত্রী সেপ্টেম্বরে থাইল্যান্ডে বিমসটেকের পরবর্তী বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উভয় একমত হন, বিমসটেক শক্তিশালী হলে তা অর্থনৈতিক, বাণিজ্য, কানেকটিভিটি এবং ডিজিটালাইজেশনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য লাভজনক হবে।
মুখ্য সচিব বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ এশিয়ার বাইরেও যাবার কথা বলেছেন। তার মানে আমাদের একই সাথে কাজ করার জন্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দিকেও তাকাতে হবে”।
প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে কর ও রাজস্ব সংগ্রহ এবং জনগণকে সেবা প্রদান উন্নয়ন করাসহ ডিজিটাল কর্মসূচির উন্নয়নে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুই প্রতিবেশি দেশের প্রকল্প দ্রুত ও সহজে শেষ করার ওপর জোর দেন এবং এ বিষয়ে উভয়েই এক মত হন।
রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বলেন, মিয়ানমার সরকার ও বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে চলমান সংঘাতের কারণে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেছেন প্রয়োজনে বিমসটেকে মিয়ানমারকে বাদ দিয়ে অন্যান্য সদস্যদেশগুলো পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে যাবে। কারণ মিয়ানমারের কারণে ভারতও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
খবর: বাসস