চট্টগ্রাম, বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪ , ১২ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হজের দিনের আমল ও করণীয়

প্রকাশ: ১৪ জুন, ২০২৪ ৩:৪৫ : অপরাহ্ণ

 

হজ মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে সর্বোত্তম আমলের একটি। হাদিসে এসেছে, আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) কে জিজ্ঞাসা করা হলো- সর্বোত্তম আমল কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ঈমান আনা। জিজ্ঞাসা করা হলো, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহর  পথে জিহাদ করা। জিজ্ঞাসা করা হলো, তারপর কোনটি? তিনি বলেন, হাজ-ই-মাবরূর (মাকবুল হজ্জ)। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৪২৯)

সামর্থ্যবান প্রত্যেকের জন্য জীবনে একবার হজ করা ফরজ। খোদ রাসুলুল্লাহ (সা.) ও জীবনে তিনবার হজ পালন করেছেন। এরমধ্যে দুটি ছিল হিজরতের আগে এবং একটি হিজরতের পর। এই হজের (শেষোক্ত) সঙ্গে তিনি ওমরাও পালন করেছেন। (তিরমিজি, হাদিস: ৮১৫)

হজের মূল কার্যক্রম পালন করতে হয় ৮ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত। এই সময়ে হাজিদের ধারাবাহিকভাবে কিছু কাজ করতে হয়। যারমধ্যে হজের তিনটি রোকনও অন্তর্ভুক্ত- ইহরাম বাঁধা (অর্থাৎ ইহরামের কাপড় পরে হজ্জের নিয়ত করা), ৯ জিলহজ আরাফায় অবস্থান করা এবং তাওয়াফ (তাওয়াফে ইফাদা অর্থাৎ তাওয়াফে জিয়ারাহ করা) করা।

 

এরমধ্যে আনুষ্ঠানিকতার প্রথম দিনে ৮ জিলহজ হাজিদের মক্কার হারাম শরিফ বা বাসা কিংবা মক্কায় অবস্থান করা হোটেল থেকে হজের নিয়তে ইহরাম বেঁধে মিনার উদ্দেশে রওনা হতে হয়। এদিন জোহরের নামাজের আগেই হাজিদের মিনায় পৌঁছাতে হয়। এরপর মিনায় অবস্থান করার পাশাপাশি জোহরের নামাজসহ ৯ জিলহজ ফজর পর্যন্ত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা মুস্তাহাব এবং এই সময় পর্যন্ত মিনায় অবস্থান করা সুন্নত।

 

পরদিন ৯ জিলহজকে বলা হয় ‘ইয়াউমে আরাফা’ বা আরাফা দিবস। বিশেষ ফজিলতপূর্ণ এই দিনেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক জাহান্নামিকে মুক্তি দেয়া হয়। এদিন আরাফার ময়দানে উপস্থিত হওয়ার মাধ্যমে শুরু হয় হজের মূল কার্যক্রম। যেখানে চারটি কাজ করতে হয়। প্রথমত, ফজরের পর মিনায় গোসল বা ওজু করে সকাল-সকাল আরাফার ময়দানের উদ্দেশে রওনা হতে হয়। পাশাপাশি রওনা দেয়ার সময় তাকবির বলা- ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’

দ্বিতীয়ত, এদিন জোহরের আগেই হাজিদের আরাফার ময়দানে গিয়ে হাজির হতে হয় এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করতে হয়। এটি হজের অন্যতম রোকন। তৃতীয়ত, এদিন আরাফার ময়দানে অবস্থান করে হজের খুতবা শোনার পাশাপাশি হাজিদের নিজ নিজ তাঁবুতে জোহর ও আসরের নামাজ নির্দিষ্ট সময়ে আলাদাভাবে আদায় করতে হয়। সেই সঙ্গে তওবা-ইসতেগফার, তাকবির, তসবিহ, তাহলিল ও রোনাজারিতে আত্মনিয়োগ করা। এ ছাড়া আরাফার দিন সন্ধ্যায় মাগরিব না পড়ে মুজদালিফার উদ্দেশে রওনা হওয়া। এরপর মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশার নামাজ এক আজানে আলাদা আলাদা ইকামতে একসঙ্গে ধারাবাহিকভাবে আদায় করতে হয়।

 

 

Print Friendly and PDF