প্রকাশ: ১১ জুন, ২০২৪ ১২:০৪ : অপরাহ্ণ
চট্টগ্রাম জেলায় পঞ্চম পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে আরো ২৫০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে দুই শতাংশ জমিসহ ঘর দেওয়া হচ্ছে। এরমধ্যে ১৫৫টি চন্দনাইশের, ৩৪টি মীরসরাইয়ে, ১৬টি সন্দ্বীপে ও ৪৫টি সীতাকুণ্ডের বাসিন্দারা বরাদ্দ পেয়েছেন। এ চার উপজেলাসহ পুরো চট্টগ্রাম জেলাকে সম্পূর্ণভাবে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করবে সরকার। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জমিসহ ঘরের মালিকানা হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন এবং চার উপজেলাসহ পুরো চট্টগ্রাম জেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করবেন।
গতকাল নগরীর সার্কিট হাউসে এ সংক্রান্ত আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান এসব কথা বলেন। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আবদুল মালেক, আরডিসি পান্না আক্তার, সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব হোসেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানুর রহমান, স্টাফ অফিসার টু ডিসি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফাহমুন নবী উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, চট্টগ্রাম জেলায় পঞ্চম পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে আরো ২৩৪টি এবং জরাজীর্ণ ব্যারাক প্রতিষ্ঠা করে একক গৃহ নির্মাণ ১৬টি–সহ ২৫০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে দুই শতাংশ জমিসহ ঘর হস্থান্তর করা হবে। এতো সংখ্যক ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে জমিসহ ঘর দেয়ার নজির পৃথবীর আর কোথাও নেই। ‘মুজিব শতবর্ষে একজন লোকও গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে আশ্রয়ণ–২ প্রকল্পের অধীনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সারাদেশে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদানের কার্যক্রম গ্রহণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম জেলায় ১ম পর্যায়ে ১৪৪৪টি ঘরের বরাদ্দ প্রদান করা হয়। ২য় পর্যায়ে ৬৪৯টি ঘরের বরাদ্দ প্রদান করা হয়, ৩য় পর্যায়ে ১৯৬২টি এবং ৪র্থ পর্যায়ে ১২২৩টি ঘরের বরাদ্দ প্রদান করা হয় এবং বরাদ্দপ্রাপ্ত ঘরগুলো ইতোমধ্যে উপকারভোগীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং উপকারভোগী পরিবার উক্ত ঘরসমূহে বসবাস করছেন।
তিনি বলেন, সন্দ্বীপ উপজেলায় নির্মাণাধীন ৪টি আশ্রয়ণ প্রকল্পের মধ্যে ৩টি আশ্রয়ণ প্রকল্প বাংলাদেশ নৌবাহিনী কর্তৃক হস্তান্তর করা হয়েছে। অবশিষ্ট ১টি আশ্রয়ণ প্রকল্প হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন। উক্ত প্রকল্পসমূহে ৯২৩টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, ৫ম পর্যায়ে এ পর্যন্ত ৩৮৮টি ঘরের বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এরমধ্যে গত বছরের ১৪ নভেম্বর ৮১টি পরিবারকে গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেন। আগামীকাল (আজ) বেলা ১১টায় পঞ্চম পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে মোট ২৫০টি পরিবারকে গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন। মীরসরাই উপজেলার জন্য নতুনভাবে ৭৩টি ঘরের বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যার নির্মাণ কাজ সমাপ্তির পর্যায়ে। এছাড়াও জরাজীর্ণ ব্যারাকের স্থলে একক গৃহ নির্মাণের জন্য ১১৬টি ঘরের বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এরমধ্যে গত বছরের ১৪ নভেম্বর ১০০টি পরিবারকে গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেন। আগামীকাল (আজ) অবশিষ্ট ১৬টি পরিবারকে গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, ইতিপূর্বে চট্টগ্রাম জেলার ১৫টি উপজেলার মধ্যে ১২টি উপজেলা যথাক্রমে পটিয়া, কর্ণফুলী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, রাউজান, বোয়ালখালী, আনোয়ারা, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, রাঙ্গুনিয়া, বাঁশখালী, মীরসরাই উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ, সীতাকুণ্ড, চন্দনাইশ ও মীরসরাই উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করার জন্য আশ্রয়ণ–২ প্রকল্প কার্যালয়ে প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়। উক্ত চার উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হবে এবং একই সাথে চট্টগ্রাম জেলাকেও ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হবে।
অনুষ্ঠানে জেলার চন্দনাইশ, মীরসরাই, সীতাকুণ্ড এবং সন্দ্বীপ উপজেলা সংযুক্ত থাকবে উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ছিন্নমূল মানুষদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়নে শেখ হাসিনা মডেল তথা আশ্রয়ণ–২ প্রকল্প বাস্তবায়নে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন বদ্ধ পরিকর।