চট্টগ্রাম, সোমবার, ২০ মে ২০২৪ , ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণ শুরু

প্রকাশ: ৮ মে, ২০২৪ ১০:২০ : পূর্বাহ্ণ

 

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। দেশের ১৩৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বুধবার (৮ মে) সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। তবে বৃষ্টির জন্য ভোটার উপস্থিতি কম, আশা করা হচ্ছে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার সংখ্যা বাড়বে।

উপজেলা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। এই ধাপে ১৩৯ উপজেলার ২২টিতে ইভিএমে এবং বাকিগুলোতে ব্যালটে ভোট হবে। মঙ্গলবার (৭ মে) এসব উপজেলার ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনি সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। এর আগে সোমবার মধ্যরাতে এসব উপজেলায় প্রচারণা শেষ হয়েছে।

এই নির্বাচনে এক হাজার ৬৩৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৭০, ভাইস চেয়ারম্যান ৬২৫ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৪০ জন। প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান পদে আট, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ করে অর্থাৎ ২৮ জন ইতোমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন।

এবার স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৪ ধাপে। প্রথম ধাপের ভোট হবে রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, ফরিদপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১৩৯টি উপজেলা পরিষদে।

এবার চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আয়োজন করছে নির্বাচন কমিশন। দেশের ৪৯৫টি উপজেলার মধ্যে ৪৮০টি উপজেলায় নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করেছে কমিশন।

উল্লেখ্য, ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে ১৬০টি উপজেলায়, ২৯ মে তৃতীয় ধাপে ১১০ উপজেলায় এবং ৫ জুন চতুর্থ ধাপে ৫০টির বেশি উপজেলায় ভোটগ্রহণ করা হবে।

এর আগে নির্বাচনে নিরাপত্তার বিষয়ে ইসি জানায়, নির্বাচনে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ১২ হাজার ৭৮০ জন সদস্য মোতায়েন থাকবে এবং রিজার্ভ থাকবে এক হাজার ৮৩০ জন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জানিয়েছে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তায় ‘ইন এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার’ এর আওতায় ৬ থেকে ১০ মে পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে বিজিবি মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ৪১৮ প্লাটুন বিজিবি কাজ করবে।

নির্বাচনে মোট পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে ৮২ হাজার ৭৩৩ জন। এর মধ্যে ভোটকেন্দ্রে ৪১ হাজার ৫৩০ জন, মোবাইল টিমে ১১ হাজার ৮৮৩ জন, স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ৫ হাজার ৩৬৮ জন এবং অন্যান্য ডিউটিতে ২৩ হাজার ৮৫২ জন।

মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে র‌্যাব মোতায়েন থাকবে দুই হাজার ৩৯২ জন ও রিজার্ভ থাকবে ২৫৬ জন। ভোট কেন্দ্র এবং মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে আনসার সদস্য মোতায়েন রয়েছে এক লাখ ৫৯ হাজার ৮৭৪ জন।

উপজেলায় ভোট সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ১৩৯ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচনি অপরাধ আমলে নিয়ে তারা সংক্ষিপ্ত বিচারকাজ সম্পন্ন করবেন। পরবর্তী ধাপগুলোর জন্যও একইভাবে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেবে ইসি। এই ধাপের নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিল আবেদন নিষ্পত্তি করবেন আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে জেলা প্রশাসক।

 

সূত্র জানায়, প্রথম ধাপের এ নির্বাচনে ১৩৯ উপজেলায় কেন্দ্র রয়েছে ১১ হাজার ৪০০টির মতো। এর মধ্যে দুর্গম এলাকার ৪২৪টি কেন্দ্রে মঙ্গলবার রাতেই নির্বাচনি সরঞ্জামসহ ও ব্যালট পেপার পাঠানো হয়েছে। আর ১১ হাজার কেন্দ্রে নির্বাচনি সরঞ্জাম পাঠানো হলেও ব্যালট পেপার পাঠানো হয়েছে বুধবার ভোরে।

দুর্গম যেসব উপজেলায় মঙ্গলবার ব্যালট পাঠানো হয় তার মধ্যে রয়েছে– কুড়িগ্রামের চিলমারী, রৌমারী, চর রাজীবপুর; মৌলভীবাজারের বড়লেখা, জুড়ী, কুলাউড়া; হবিগঞ্জের বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ; ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর, সরাইল, সন্দ্বীপ; রাঙ্গামাটির রাঙামাটি সদর, কাউখালী, জুড়াছড়ি, বরকল; বান্দরবানের বান্দরবান সদর, আলীকদম; খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি, মানিকছড়ি, মাটিরাঙ্গা, রামগড়; সুনামগঞ্জের দিরাই, শাল্লা ও লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা।

 

ইসি কর্মকর্তারা জানান, চার ধাপে অনুষ্ঠেয় উপজেলা নির্বাচনের সব ধাপেই দুর্গম কেন্দ্রে আগের দিন ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। অন্যগুলো যাবে ভোটের দিন সকালে। মাঠ প্রশাসন থেকে দুর্গম এলাকা চিহ্নিত করে প্রতিবেদন পাঠালে নির্বাচন কমিশন সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়। ভোটে কারচুপি রোধের অংশ হিসেবে সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচন কমিশন আগের রাতে ব্যালট না পাঠিয়ে ভোটের দিন সকালে পাঠানো শুরু করেছে।

 

Print Friendly and PDF