চট্টগ্রাম, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ , ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কর্ণফুলীকে আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে: বৈশাখী মেলায় অর্থপ্রতিমন্ত্রী 

প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল, ২০২৪ ৬:১৯ : অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ও অর্থপ্রতিমন্ত্রী বেগম ওয়াসিকা আয়শা খান বলেছেন, ‘নদী না বাঁচলে আমরা বাঁচব না। এই কর্ণফুলী নদী আমাদের প্রাণ। কর্ণফুলীকে আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে।’
রোববার (১৪ এপ্রিল) কর্ণফুলী উপজেলার শাহ আমানত সেতুর দক্ষিণপাড় শিকলবাহা এলাকার সেতুর নীচে গোলচত্ত্বর প্রাঙ্গণে কর্ণফুলী সোসাইটির  উদ্যোগে আয়োজিত বৈশাখী মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
অর্থপ্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান আরও বলেন, ‘বাংলা নববর্ষ বাঙালির ঐতিহ্য। বাংলা নববর্ষ উপযাপনে আজকের বৈশাখী মেলা, সাম্পান বাইচ সফল হোক সে প্রত্যাশা করি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের ভবিষ্যত প্রজম্মের জন্য স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন হাতে নিয়েছেন। আমরা একদিন থাকব না। আমাদের প্রজন্মের জন্য আজকে পরিবেশ তৈরি করে যেতে হবে।’
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা চট্টগ্রাম ১২ আসনের পটিয়ার সংসদ সদস্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘কর্ণফুলীতে অর্থপ্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বর্ষবরণের বৈশাখী মেলা দেখে আমি খুব আনন্দিত। পহেলা বৈশাখ প্রতিহত করতে কিছু ধর্মান্ধ গোষ্ঠী নানাভাবে অপচেষ্টা চালিয়েছে কিন্তু বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তৎপরতার কারণে ব্যর্থ হয়েছে। অপসংস্কৃতি রোধ করতে হলে দেশীয় সংস্কৃতি চালু রাখতে হবে। শিকলবাহার চেয়ারম্যান এই চেষ্টা করেছেন বলে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
সংগঠনের সভাপতি শিকলবাহা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এর সভাপতিত্বে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থেকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘মাননীয় অর্থপ্রতিমন্ত্রী বলেছেন কর্ণফুলী আমাদের প্রাণ। কর্ণফুলীকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। আমি বলবো নদী মাতৃক বাংলাদেশের কর্ণফুলী না বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে না। কর্ণফুলীকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।’
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার আপনারা সবার জন্য একটি সার্বজনীন
পেনশন স্কিম চালু করেছেন। মেলায় একটি বুথ রয়েছে। আপনারা সকলে পেনমন স্কিম চালু করতে পারেন। নিজেদের ভবিষ্যৎ গঠনে সবাই সর্বজনীন পেনশন স্কিম রেজিষ্ট্রেশন করুণ।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শাহজাদা মহিউদ্দিন, সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেগম চেমন আরা তৈয়ব, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক  শামীমা হারুন লুবনা, সিএমপি বন্দর জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) শাকিলা সোলতানা, কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাসুমা জান্নাত, কর্ণফুলী থানার ওসি তদন্ত মো. মেহেদী হাসান, বোয়ালখালীর পৌর মেয়র জহুরুল ইসলাম জহুর।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইসলাম আহমেদ।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন  বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য লায়ন ছাবের আহমেদ, কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি এস এম সালেহ, সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মহিউদ্দিন ভান্ডারী, জুলধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল হক, চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী, আওয়ামী লীগ নেতা জকির আহমদ, বাহাঁদুর খান, এম. সাইফুদ্দিন, মোঃ নুরুল হক চৌধুরী, আরিফ হোসেন, ইমতিয়াজ উদ্দিন, জাবেদ উদ্দীন চৌধুরী, ইয়াছিন আরাফাত, কর্ণফুলী সোসাইটির সভাপতি মোঃ আজম, সেক্রেটারী নাজিম উদ্দীন, ইলিয়াছ, মাহবুবসহ তৃণমূলের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, কর্ণফুলীর এই বৈশাখী মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সাম্পান বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের প্রথম দিনে সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত শিশুদের ,নাচ ,গান, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ কবিতা আবৃত্তি শোনানো হয়। দুপুর ২ টা থেকে ৩ টা পর্যন্ত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
বিকেল ৩ টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত চট্টগ্রামের প্রাণখ্যাত কর্ণফুলী নদী, বৈশাখী মেলা ও সাম্পান বাইচ নিয়ে বিশেষ আলোচনা সভা হয়। বিকেলে ৮ টিমের মধ্যে সাম্পান বাইচ প্রতিযোগিতা হয়। এতে লাল দল বিজয়ী হন। হলুদ দল দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেন নীল দল। বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ করেন অর্থপ্রতিমন্ত্রী।
আগামীকাল দ্বিতীয় দিন একই জায়গায় বৈশাখী মেলা চলবে। এতে পুতুল নাচ, নাগর দোলা, সার্কাসসহ বিনোদনমূলক বিভিন্ন অনুষ্ঠানসূচি রাখা হয়।
এই বৈশাখী মেলায় মোট স্টল সাজানো হয়েছে অর্ধশতাধিক। এতে চামড়াজাত, পাটজাত, বুটিকস পণ্য, বাঁশ, বেত ও মাটির হস্তশিল্প, কারুশিল্পী, খাবার স্টলসহ আকর্ষণীয় ডিজাইন ও সুলভ মূল্যের বিভিন্ন স্বদেশী পণ্য বিক্রি করা হয়। মেলা দেখতে আসা দর্শনার্থীদের বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী ক্রয় করার সুযোগ পান। লোকজন জানায় মেলায় প্রায় অর্ধলাখো দর্শনার্থীদের সমাগম হয়।

Print Friendly and PDF