চট্টগ্রাম, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ , ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক স্কিলস ও ইনোভেশন কম্পিটিশন অনুষ্ঠিত

প্রকাশ: ৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১০:৫৮ : পূর্বাহ্ণ

 

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক স্কিলস ও ইনোভেশন কম্পিটিশন অনুষ্ঠিত  চট্টগ্রাম আঞ্চলিক স্কিলস ও ইনোভেশন কম্পিটিশন উপলক্ষ্যে সেমিনার অনুষ্ঠিত  চট্টগ্রাম অঞ্চলের অ্যাকসেলারেটিং অ্যানড স্ট্রেনদেনিং স্কিলস ফর ইকনোমিক ট্রান্সফরমেশন (ASSET) স্কিলস কম্পিটিশন অনুষ্ঠিত  চট্টগ্রাম অঞ্চলের অ্যাসেট স্কিলস কম্পিটিশন অনুষ্ঠিত  অ্যাকসেলারেটিং অ্যানড স্ট্রেনদেনিং স্কিলস ফর ইকনোমিক ট্রান্সফরমেশন (অ্যাসেট) স্কিলস কম্পিটিশন চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত  চট্টগ্রামে আঞ্চলিক উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা  চট্টগ্রামে স্কিলস কম্পিটিশন  চট্টগ্রাম আঞ্চলিক স্কিলস ও ইনোভেশন কম্পিটিশনের উদ্বোধন করেন শিক্ষা মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী  যুবসমাজকে কারিগরি জ্ঞান এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতায় পারদর্শী করে তুলতে হবে: শিক্ষা মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী

 

 

কারিগরি শিক্ষার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি ও প্রচারণাসহ শিক্ষার্থীদের মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তি বিকাশের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক স্কিলস ও ইনোভেশন প্রতিযোগিতা ৬ এপ্রিল, ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার, চট্টেশ্বরী রোড, কাজির দেউড়ি, চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরাধীন ‍অ্যাকসেলারেটিং অ্যানড স্ট্রেনদেনিং স্কিলস ফর ইকনোমিক ট্রান্সফরমেশন (ASSET) প্রকল্পের আওতায় এই প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করা হয়। অ্যাসেট প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য হচ্ছে দেশের ও আন্তর্জাতিক শ্রম বাজারের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে দেশের যুব, শ্রমিক, নারী, প্রতিবন্ধী, অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত ব্যক্তিদের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দেশের বেকারত্ব হ্রাস করে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করা।

 

 

দিনব্যাপী আয়োজিত এ উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতায় চট্টগ্রাম অঞ্চলের ২০টি কারিগরি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে নির্বাচিত সর্বমোট ৫৫টি প্রকল্প প্রদর্শিত হয়। মূল্যায়ন কার্যক্রমের পর প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

প্রতিযোগিতার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিতে প্রায় ১,০০০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন, এসময় অংশগ্রহণকারীরা কারিগরি শিক্ষার প্রচার ও প্রসারে নানাবিধ স্লোগান সম্বলিত বিভিন্ন প্লাকার্ড, ফেস্টুন ও ব্যানার প্রদর্শন করে। পরবর্তীতে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব বিষয়ক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রায় ৩৫০ জন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার প্রধানগণ অংশগ্রহণ করেন।

 

 

উক্ত অনুষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, এম.পি. প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নজরুল ইসলাম চৌধুরী, এম.পি., চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মোঃ সিরাজুল ইসলাম, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ আজিজ তাহের খান এবং অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, জেনারেল মোহাম্মদ আনোয়ার পাশা ও এডিসি (রাজস্ব), চট্টগ্রাম মোঃ আব্দুল মালেক উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভপতিত্ব করেন ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ, সচিব, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আরও উপস্থিত ছিলেন আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ, প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব), অ্যাসেট প্রকল্প।

 

 

শিক্ষা মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, এম.পি. বলেন, বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে, কারিগরি এবং দক্ষতা উন্নয়ন শিক্ষা জাতীয় উন্নয়নের অপরিহার্য অঙ্গ। এই সময়ে, দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে গেলে যুবসমাজকে কারিগরি জ্ঞান এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতায় পারদর্শী করে তুলতে হবে। স্কিলস ও ইনোভেশন কম্পিটিশনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মেধা, দক্ষতা এবং উদ্ভাবনী ক্ষমতা উন্নয়নের এই প্রক্রিয়াটি গতিশীল হবে বলে আমি বিশ্বাস করি এবং এর মাধ্যমে তারা জাতীয় উন্নয়নে আরও বেশি সক্রিয় ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।

 

 

আয়োজিত সেমিনারে অন্যান্য বক্তারা বলেন, সাধারণ শিক্ষায় সর্বোচ্চ ডিগ্রি গ্রহণের দুই বছরের মধ্যে চাকুরি প্রাপ্তির হার প্রায় ২০ শতাংশ, অন্যদিকে কারিগরি শিক্ষায় চাকুরি প্রাপ্তির হার ৭০ শতাংশ। বক্তারা আরও বলেন, এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দেশের কারিগরি শিক্ষার্থীদের মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তির বিকাশ ঘটবে। একইসাথে স্থানীয় প্রশাসন, মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীসহ তাদের অভিভাবক, শিক্ষক-কর্মকর্তা, শিল্পকারখানার মালিক, ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে এ আয়োজন কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

 

 

আয়োজকদের মতে, সেমিনারের মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব প্রচারিত হবে এবং শিক্ষক ও সুপারগণ ধারণা করতে পারবেন কেন শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষা গ্রহণে উৎসাহিত করা উচিত।

প্রতিযোগিতায় কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর ‘আইওটি বেজড এপ্লায়েন্স কনট্রোল স্মার্ট একাডেমি ইনফাস্ট্রাকচার’ প্রকল্পটি প্রথম স্থান অর্জন করে। দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর ‘স্মার্ট ফুটওভার ব্রিজ’ প্রকল্পটি। তৃতীয় স্থান অর্জন করে বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর ‘স্মার্ট একাডেমিক ইনফাস্ট্রাকচার’ প্রকল্পটি।

 

 

উল্লেখ্য, একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং রূপকল্প ২০৪১ অর্জনে দেশের বিশাল জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। এ লক্ষ্য অর্জনে বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর দক্ষতা বৃদ্ধি ও জীবনভিত্তিক শিক্ষার উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। দক্ষতা বৃদ্ধির অন্যতম হাতিয়ার কারিগরি ও প্রযুক্তিগত শিক্ষা। এ শিক্ষার প্রসারে বিগত বছরগুলোতে কারিগরি শিক্ষাবিষয়ক ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা কর্মসূচি বাস্তবায়িত হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম একটি কার্যক্রম ছিল স্কিলস কম্পিটিশন। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় ভর্তির হার ৩০ ভাগে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে অ্যাকসেলারেটিং অ্যানড স্ট্রেনদেনিং স্কিলস ফর ইকনমিক ট্রান্সফরমেশন (ASSET) প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। কারিগরি শিক্ষার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি ও প্রচারণার অংশ হিসেবে কারিগরি শিক্ষার্থীদের নিয়ে এ উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা (Skills Competition) আয়োজিত হচ্ছে।

 

 

এরই ধারাবাহিকতায় কারিগরি শিক্ষাঙ্গনের ১২০টি সরকারি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্কিলস ও ইনোভেশন কম্পিটিশন ২০২৩ এর প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ের প্রতিযোগিতা একযোগে সারাদেশে গত ১৭ জুন ২০২৩ খ্রি. অনুষ্ঠিত হয়। প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে প্রায় ১৮৫০টি উদ্ভাবনী প্রকল্প প্রদর্শিত হয় এবং ৩৬০ টি প্রকল্প আঞ্চলিক পর্বে অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচিত হয়। ইতোমধ্যে সিলেট, খুলনা, রাজশাহী এবং রংপুরের আঞ্চলিক পর্ব সম্পন্ন হয়েছে। অ্যাসেট প্রকল্পের কার্যক্রম জুলাই, ২০২১ খ্রি. হতে ডিসেম্বর, ২০২৬ খ্রি. মেয়াদে চলমান।

 

 

Print Friendly and PDF