চট্টগ্রাম, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পদ্মা ও এক্সিম ব্যাংকের একীভূতকরণে যেসব পরিবর্তন আসবে

প্রকাশ: ১৬ মার্চ, ২০২৪ ২:৫৮ : অপরাহ্ণ

 

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো দুটি বেসরকারি ব্যাংক একীভূত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক বেসরকারি বাণিজ্যিক এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে চতুর্থ প্রজন্মের পদ্মা ব্যাংক। গত বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) এক্সিম ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আগামী সোমবার (১৮ মার্চ) এ সম্পর্কিত চূড়ান্ত সমঝোতা স্মারক দুই ব্যাংকের মধ্যে সই হবে।

এ বিষয়ে এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তাদেরকে দুই সপ্তাহ আগে যেকোন একটি দুর্বল ব্যাংকের সাথে একীভূত হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। তার অংশ হিসেবেই দুই ব্যাংকের কর্মকর্তারা আলোচনার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক রিয়াজ খান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রোম্পট কারেক্টিং অ্যাকশন ফ্রেমওয়ার্ক অনুযায়ী, ব্যাংক খাতের সংস্কারের জন্য দুর্বল ব্যাংকগুলোকে শক্তিশালী ব্যাংকের সাথে একীভূত করে দেয়ার যে নির্দেশনা ছিল সে অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাংক খাত সংস্কারের লক্ষ্য থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংককে একীভূত করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা নিঃসন্দেহে ভাল। তবে এটি আসলেই কতটা ফলপ্রসূ হবে তা নির্ভর করবে একীভূত ব্যাংকগুলো কতটা ভালভাবে পরিচালিত হতে পারে তার উপর।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, দেশের ৫০টি বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে ১০টি ব্যাংক দুর্বল হয়ে পড়েছে। এগুলো টিকে থাকতে হলে অন্যান্য ব্যাংকের সাথে একীভূত হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নাই।

যেসব পরিবর্তন আসবে
গত কয়েক বছর ধরে ধুঁকছে পদ্মা ব্যাংক। অবশেষে এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে যাচ্ছে এটি। সারা বিশ্বে দুই রকমভাবে ব্যাংক একীভূত হয়। একটি মার্জ, আরেকটি অ্যাকুইজেশন। এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার জানিয়েছেন, দুটো ব্যাংকের মধ্যে মার্জিং হচ্ছে। এটা অ্যাকুইজেশন না। এর ফলে পদ্মা ব্যাংকের নিজস্ব পরিচয় আর থাকবে না। এটা পুরোপুরি এক্সিম ব্যাংকে রূপান্তরিত হয়ে যাবে।

তিনি আরও জানান, একীভূত হওয়ার পর পদ্মা ব্যাংক আর সাধারণ ব্যাংকিং নিয়মে পরিচালিত হবে না। বরং এটি ইসলামি শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকিং ধারায় চলে আসবে। পদ্মা ব্যাংকের কোন কিছু থাকবে না আর, কোন নাম থাকবে না। প্রত্যেক জায়গায় ব্যানার হয়ে যাবে এক্সিম ব্যাংক। তবে শেয়ার হোল্ডাররা যেমন আছে তেমনি থাকবে। আমানতকারীদের আমানতও সুষ্ঠু অবস্থায় থাকবে কারণ এক্সিম ব্যাংক বড় ব্যাংক। কাজেই ওদের আমানতকারীদের ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই।

সারা দেশে পদ্মা ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় প্রায় এক হাজার মানুষ চাকুরীরত আছে। তাদের চাকুরীরও কোন ক্ষতি হবে না বলে জানিয়েছেন এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, পদ্মা ব্যাংকের যে ৬০-৭০টি শাখা আছে সেগুলো পরিচালনা করার জন্যও এক্সিম ব্যাংকের জনবলের দরকার হবে। সে কারণে এক্সিম ব্যাংক নতুন করে কোন জনবল নিয়োগ করতে চায় না। বরং বর্তমানে থাকা পদ্মা ব্যাংকের জনবল দিয়েই সেগুলো পরিচালনা করতে চায়।

এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছিল, আসছে ডিসেম্বর পর্যন্ত দুর্বল ব্যাংকগুলো স্বেচ্ছায় একীভূত হতে পারবে। এক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে মার্চে সেগুলোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

সম্প্রতি ব্যাংকস হেলথ ইনডেক্স (বিএইচআই) অ্যান্ড হিট ম্যাপ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, রেড জোনে আছে পদ্মা ব্যাংক। আর ইয়েলো জোনে রয়েছে এক্সিম ব্যাংক।

 

Print Friendly and PDF