প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ৪:৫৪ : অপরাহ্ণ
আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) যৌন নিপীড়ন অভিযোগ সেল প্রতিবেদন জমা না দিলে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্ত শিক্ষককে স্থায়ী বহিষ্কার না করলে ক্যাম্পাস অচল করে দেয়ার কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনরত রসায়ন বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা প্রধান ফটকেও তালা দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১ টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এছাড়া দাবি আদায় না হওয়ার পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। পাশাপাশি ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছে শিক্ষার্থীরা।
যৌন নিপীড়ন অভিযোগ সেলের তদন্ত কমিটি উপাচার্যের নিকট আজ প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা থাকলেও প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি অভিযোগ সেল। এই ঘোষণা আসার পর থেকেই ক্ষুব্ধ রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত রসায়ন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শিতু আহমেদ বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি৷ আমরা চাচ্ছি অভিযুক্ত শিক্ষককে স্থায়ী বহিষ্কার করা হোক, তার নামে মামলা হোক। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রক্রিয়াটাকে ধীরগতি করছে। যদি এইভাবে চলে আমরা সর্বোচ্চ দুইদিন সময় দেব, এরপর শুধু রসায়ন না সব বিভাগের শিক্ষার্থীরা আমাদের সঙ্গে যোগ দেবে।
রসায়ন ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাত নুর বলেন, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ শুধু এখন থেকে নয়। আন্দোলন গড়ে উঠার পর ১০-১২ বছর আগে ভুক্তভোগী হওয়া অনেক আপুরাও সাক্ষ্যপ্রমাণ দিতে এসেছে। যারা এত দিন ভয়ে মুখ খুলেনি, তারাও এখন মুখ খুলছে। তারা বিভিন্ন উপায়ে (ফেসবুক গ্রুপ, ম্যাসেঞ্জার) আমাদের বলেছে অভিযুক্ত শিক্ষকের যৌন নির্যাতনের বিষয়ে। তাই আমরা চাই এর সুষ্ঠু বিচার। অভিযুক্ত শিক্ষক যেন কোনোদিন এই ক্যাম্পাসে আর আসতে না পারে।
এ বিষয়ে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, তদন্ত কমিটি প্রাণপণ চেষ্টা করছে প্রতিবেদন জমা দিতে। গতকালও তারা বৈঠক করেছে, প্রতিদিন করছে। কিন্তু এত কিছু উঠে আসছে, তার সব সুরাহা না করে প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি। আমরা ভেবেছিলাম আজকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলে একদিন পর পরশু আরেকটা তদন্ত কমিটি করে সিন্ডিকেট শিডিউল দিয়ে দেব। তদন্ত কমিটি কাল অথবা পরশু প্রতিবেদন জমা দেবে।
এর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) এক ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ ওঠে রসায়ন বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। গত বুধবার চবি উপাচার্য বরাবর রসায়ন বিভাগের মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থীকে একই বিভাগের এক শিক্ষক কর্তৃক যৌন হয়রানি ও ধর্ষণ চেষ্টার লিখিত অভিযোগ দেয়। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত শিক্ষককে বিভাগের একাডেমিক কমিটির সুপারিশের আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নীপিড়ন প্রতিরোধে গঠিত সেল তদন্ত করছে।
এছাড়া একই বিভাগের আরও দুই সদস্যের ব্যাপারে লিখিত অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে ৬ সদস্যদের ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করেছে রসায়ন বিভাগ।
সুত্র: চ্যানেল২৪