চট্টগ্রাম, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪ , ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্যের জন্য পালংশাক সেরা খাবার, রয়েছে আরও যেসব গুণ

প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি, ২০২৪ ১২:২০ : অপরাহ্ণ

 

শীতকালীন সবজি পালংশাক অনেকেরই পছন্দ। পাতাবহুল সবজি হিসেবে এটি বেশ সমাদৃত। তাজা পালংশাক ভাজি বা অন্যভাবে রান্না করে খেয়ে থাকেন মানুষ। এছাড়া সালাদ, পাস্তা বা সুপ তৈরিতে পালংশাক ব্যবহার করা যায়।

অনেকের মনে আবার প্রশ্ন জাগে, এই শাক খাওয়া কি আসলেই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী? পুষ্টিবিদ ক্রিস গুনারস স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথলাইনে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। এই পুষ্টিবিদের মতে,পালংশাক খেলে মিলবে নানা পুষ্টি উপাদান।

এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ
পালংশাক বিভিন্ন রকম এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যেমন- লুটেইন, বিটা ক্যারোটিন ভিটামিন সি। এগুলো সার্বিকভাবে স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এন্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি রেডিকেল থেকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করে। আর ফ্রি রেডিকেলের ফলে দেহের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অক্সিডেটিভ চাপের সৃষ্টি হয়। ফলে দীর্ঘমেয়াদি অসুখ যেমন- ক্যান্সার, হৃদরোগ ও টাইপ-২ ডায়াবেটিস হতে পারে। পুষ্টিবিদের মতে, এন্টিঅক্সিডেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত কোষের ক্ষয় পূরণে সহায়তা করে। আর পটাসিয়াম থাকায় রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণ করে। এই পুষ্টিবিদের মতে, পটাসিয়ামের খুবই ভালো উৎস পালংশাক, যা রক্তনালীকে প্রশমিত করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।

এছাড়া পটাসিয়াম দেহে সোডিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। উচ্চমাত্রার সোডিয়াম রক্তচাপ বৃদ্ধি করে। পালংশাক ফোলেইট ও ম্যাগনেসিয়ামেরও ভালো উৎস। এই দুই পুষ্টি উপাদান দেহে নাইট্রিক অক্সাইড’য়ের উৎপাদন বাড়ায় যা রক্তচাপ কমানোর অণু তৈরিতে সহায়তা করে, জানান এই পুষ্টিবিদ।

মস্তিষ্কের খাবার পালংশাক
মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্যের জন্য পালংশাক সেরা খাবার। আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত নিবন্ধ অনুযায়ী, পালংশাকের মতো সবুজ শাক প্রতিদিন খাওয়ার ফলে বয়সের কারণে হওয়া জ্ঞানীয় দক্ষতার হ্রাস অনেকটাই কমে যায়। এতে উচ্চমাত্রায় লুটেইন, বিটা ক্যারোটিন, ফোলেইট ও ফিলোকুইনয়ন (ভিটামিন কে’ একটি ধরন) থাকার ফলে মস্তিষ্কের কোষকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করে।

রক্তের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে আয়রন যোগায়
পালংশাক আয়রনের ভালো উৎস। আয়রন এমন এক খনিজ, যা রক্তের লোহিত কণিকার মূল উপাদান হিমোগ্লোবিন তৈরিতে ভূমিকা রাখে। এই কোষগুলো সারাদেহ ও কোষে অক্সিজেন পরিবহন করে। তাই এগুলো অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। দুই ধরনের আয়রন রয়েছে- একটি হল ‘হিম’ যা প্রাণিজ খাবারে পাওয়া যায় এবং অন্যটি হল নন-হিম’ যা উদ্ভিজ্জ খাবার যেমন পালংশাকে পাওয়া যায়। শরীর হিম এবং নন-হিম কোনো ধরনের আয়রন সরাসরি শোষণ করতে পারে না। তবে ভিটামিন সি যোগ করার মাধ্যমে এই শোষণ বাড়ানো যায়। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন- লেবুর রস, ব্রোকলি, ক্যাপ্সিকাম, সাদা আলু ও টমেটো ইত্যাদির সঙ্গে পালংশাক যুক্ত করে আয়রনের শোষণ বাড়ানো যেতে পারে।

 

অন্ত্র সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখতে পারে
পালংশাকের আরেকটি উপকারিতা হল এটা ফাইবারের খুব ভালো উৎস, যা অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম সুস্থ রাখে। আর হজম প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক করতে সহায়তা করে। পুষ্টিবিদের মতে, দুই ধরনের ফাইবার রয়েছে, তা হল, দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয়। আর পালংশাকে রয়েছে অদ্রবণীয় ফাইবার যা সহজে ভাঙে না। এটি মল বৃদ্ধি করে তা অপসারণ সহজ করে, ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকি কমে।

 

চোখের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো
গবেষকদের মতে, পালংশাকে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট লুটেইন ও জিয়াক্সান্থিন যা ভিটামিন এ’র সঙ্গে সম্পর্কিত। এই দুই পুষ্টি উপাদানই চোখকে সূর্যের হাত থেকে রক্ষা করে এবং অক্সিডেটিভ চাপ কমায়। ফলে বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে চোখের রোগ যেমন- ‘ম্যাককুলার ডিজেনারেইশন’ এবং ছানিসহ নানান সমস্যা কমাতে সহায়তা করে পালংশাক।

 

 

সুত্র: চ্যানেল২৪

Print Friendly and PDF