চট্টগ্রাম, মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪ , ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দক্ষ ভূমি ব্যবস্থাপনা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে – ভূমিমন্ত্রী

প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর, ২০২৩ ১০:০৭ : পূর্বাহ্ণ

 

 

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন দক্ষ, স্বচ্ছ ও জবাবদিহি ভূমি ব্যবস্থাপনা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আজ দুপুরে ঢাকার এক হোটেলে  ভূমি মন্ত্রণালয়, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বিশ্বব্যাংকের উদ্যোগে আয়োজিত ‘Integrated and Comprehensive Land Administration in Bangladesh’ (বাংলাদেশে সমন্বিত ও ব্যাপক ভূমি প্রশাসন) শীর্ষক দু-দিন ব্যাপী এক কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান কালে তিনি এই কথা বলেন। ভূমি সচিব মোঃ খলিলুর রহমান এই সময় উপস্থিত ছিলেন।

ভূমিমন্ত্রী বলেন, দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমি একটি আবশ্যিক উপাদান। এছাড়াও, ভূমি কেন্দ্রিক সমস্যা কমে গেলে মানুষের মূল্যবান সময় এবং অর্থ বেঁচে যাবে – যা অধিকতর উৎপাদনশীল কাজে ব্যয় করা যাবে। ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক অর্থনীতি – দুই ক্ষেত্রে অগ্রগতিতেই দক্ষ ও টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এজন্যই ভূমিসেবা ডিজিটাইজেশনকে এত গুরুত্ব দিয়েছেন।

 

 

সাইফুজ্জামান চৌধুরী আশা প্রকাশ করে বলেন, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত ভূমি নিবন্ধন (রেজিস্ট্রেশন) ডিজিটাইজেশন দ্রুত শেষ করে, তা দেশব্যাপী ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত নামজারির (মিউটেশন) সাথে আন্তঃসংযোগ করা গেলে মানুষের জন্য ভূমিসেবা গ্রহণ আরও মসৃণ হবে।

এসময়, বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে দেশব্যাপী শেষ হলে মাঠে গিয়ে জরিপের প্রয়োজনীয়তা থাকবেনা উল্লেখ করে ভূমিমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য জমি কেনার আগেই অনলাইনেই তাৎক্ষণিকভাবে ক্রেতা যেন জমির মালিকানা পরিবর্তনের ইতিহাস জানতে পারেন।

 

 

মন্ত্রী বলেন, এছাড়াও আমরা স্বপ্ন দেখছি যে এমন এক সিস্টেম স্থাপনের যেখানে ক্রেতা জমি ক্রয়ের সময়  ডিজিটালি নিবন্ধন করার পরই যেন স্বয়ংক্রিয়ভাবে নামজারি, হোল্ডিং তৈরি হয়ে ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণ হয় এবং একই সঙ্গে একক মালিকভিত্তিক খতিয়ান ও মৌজাম্যাপও যেন প্রস্তুত হয়ে যায় – মন্ত্রী বলেন।

মানুষ যেন ভূমি অফিসে না গিয়েই জমির মালিকানা পরিবর্তনের সব আইনি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারেন – সেই ব্যবস্থা স্থাপনে আমরা কাজ করছি – মন্ত্রী যোগ করেন।

ভূমি সচিব বলেন, ইতোমধ্যে ভূমি অপরাধ প্রতিকার ও প্রতিরোধ আইনে জুডিশিয়াল কোর্টে মামলা হয়েছে। আমরা এসব পর্যবেক্ষণ করছি। এছাড়া এই আইনের বিধি প্রণয়নের কাজও দ্রুত এগিয়ে চলছে। তিনি বলেন, উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্য সম্পদের উপর নারীদের যথাযথ অধিকারের বিষয়টি খুব গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে।

 

 

কর্মশালায় প্রথমদিন বিশেষজ্ঞ আলোচকদের মধ্যে ছিলেন সাবেক সচিব ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম খান, ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ড. মো: জাহিদ হোসেন পনির, বিপিএএ, বিশ্বব্যাংকের লিড ল্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন স্পেশালিষ্ট মিকা-পেটেরি টরহোনেন, বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ল্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন স্পেশালিস্ট ডং কিউ কোয়াক প্রমুখ।

কর্মশালায় ভূমি মন্ত্রণালয় ও আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং এসবের আওতাভুক্ত দপ্তর/সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি কর্মকর্তা, ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমিসেবা উন্নয়ন পরামর্শকবৃন্দ, মাঠ পর্যায়ে সরাসরি ভূমিসেবা প্রদানকারী ভূমি অফিস, সেটেলমেন্ট অফিস এবং নিবন্ধন অফিসের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং ভূমিসেবা ডিজিটাইজেশন কার্যক্রমের ভেন্ডার প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তাবৃন্দ প্রমুখ।

 

 

প্রসঙ্গত, ভূমি ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাইজেশনের ফলে ইতোমধ্যে অনেক অগ্রগতি সাধন হয়েছে। ডিজিটাইজেশনের কারণে নাগরিক সেবা বৃদ্ধি এবং সরকারের ভূমি ব্যবস্থাপনা অনেকটাই সহজতর হয়েছে। তবে, আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং নাগরিকের অনিস্পত্তিকৃত সমস্যা সমাধানে এখনো অনেক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এর মধ্যে উত্তরাধিকারসূত্রে মালিকানা সংশোধন, জমির মূল্য নির্ধারণ, ভূমি ব্যবস্থাপনা সিস্টেমের আধুনিকায়ন, নবায়নযোগ্য শক্তি বিষয়ে এই কর্মশালায় উপস্থাপনা এবং আলোচনা করা হচ্ছে। আগামী ২৫ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ কর্মশালার দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম হবার কথা রয়েছে।

 

Print Friendly and PDF