চট্টগ্রাম, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বুড়িগঙ্গার কালো জলে নিষিদ্ধ সাকারের হানা

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১১:১১ : পূর্বাহ্ণ

 

দখল ও দূষণের পর নতুন বিপদের মুখে বুড়িগঙ্গা। নদীর কালো জলে হানা দিয়েছে নিষিদ্ধ মাছ সাকার। জেলেরা জানান, জাল ফেললেই আটকা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে সাকার ফিশ; দেখা নেই দেশি মাছের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত বংশবিস্তারকারী সাকার নির্মূল করা না গেলে হুমকিতে পড়বে দেশীয় মাছ।

প্রায় ৬০০ বছরের ইতিহাসের সাক্ষী বুড়িগঙ্গা। দূষণের ধকলে ধুঁকতে থাকা ঢাকার ঐতিহ্যবাহী এই নদীর তলদেশ দখলে নিয়েছে নিষিদ্ধ সাকার। জাল ফেললেই এই মাছ উঠে আসছে ঝাঁকে ঝাঁকে।

স্থানীয় জেলেরা জানান, আগে কই, শিং, মাগুর পাওয়া গেলেও এখন সাকার ছাড়া কিছুই মিলছে না নদীতে। এই অবস্থা গেল কয়েক বছর ধরে।

তারা বলেন, আমরা ছোট থেকেই এখানে মাছ ধরে আসছি। বিভিন্ন সময় আমরা বিভিন্ন ধরেছি। তবে এখন আর জালে অন্য কোনও মাছ উঠে না। জাল ফেললেই শুধু সাকার উঠে।

ধারালো পাখনা ও দাঁত সমৃদ্ধ মাছটির মুখের আকার অনেকটা জলহস্তীর মতো। জলজ আগাছা, পোকামাকড় আর ছোট মাছ এদের খাবার। অ্যাকুরিয়ামের এই মাছ পানি ছাড়াও বাঁচতে পারে প্রায় ২৪ ঘণ্টা।

 

 

স্থানীয়দের আশঙ্কা, সাকার ফিশ এখনই নির্মূল করা না গেলে হুমকির মুখে পড়বে দেশীয় প্রজাতির মাছ।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, চার বছর ধরে এখানে কোনও মাছ পাওয়া যায় না। এখন এখানে শুধু এই সাকার পাওয়া যায়। আর এই মাছ অন্য সব খেয়ে ফেলে। এটি যদি সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে আর কোনও মাছ খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাই সাকার নির্মূলে সরকারের অতি দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া উচিত।

 

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাকার জীববৈত্র্যের জন্য হুমকি৷ এর বংশবৃদ্ধির হার খুব বেশি হওয়ায় উৎপাদন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এখনই।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ফিশাররিজ, একোয়াকালচার এন্ড মেরিন সাইন্স অনুষদের ডীন ড. এ এম সাহাবউদ্দিন বলেন, যখন জেলেরা বুড়িগঙ্গায় জাল ফেলছে জালে শত শত সাকার উঠছে। আর সেই মাছ জেলেরা আবার নদীতে ফেলছে। এভাবে তো তা নিধন করা যাবে না। তাই সাকারের বংশবিস্তার রোধের উপায় বের করতে হবে।

 

 

তিনি পরামর্শ দেন, যেহেতু এর পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে, তাই এখন সাকারকে শুটকি করে অন্যান্য মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতে পারি। এর ফলে জেলেদের জালে যে সাকার উঠবে, তারা আর নদীতে ফেলবে না। আর মাছ চাষিরা তা অল্প দামে কিনে নিয়ে তাদের মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে।

সাকার ফিশের ক্ষতিকর প্রভাবে লোকসানে পড়েছেন ভারত, মায়ানমারসহ অনেক দেশের মৎস্য চাষিরা।
দ্রুত বংশ বিস্তারকারী সাকার শুধু ছোট মাছ ও মাছের পোনা খায় না, এর ধারালো পাখনার আঘাতে সহজেই অন্য মাছের দেহে ক্ষত তৈরি হয়। পরবর্তীতে পচন ধরে সেগুলো মারা যায়। তাই মাছটি নির্মূলে এখনই পদক্ষেপ চান বিজ্ঞানীরা।

সূত্র: চ্যানেল ২৪

Print Friendly and PDF