প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১০:৪৯ : পূর্বাহ্ণ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাটল ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সৌরভ সাহা জয় ঘোষণা দিয়েছিলেন রোববার থেকে পূর্বের শিডিউলে শাটল চলাচল করবে। কিন্তু রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে কোনো শাটল চলতে দেখা যায়নি। এতে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছে বিশ্বিবদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাস, মিনিবাস, সিএনজি, রিকশা করে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসছে। এতে অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এতে অনেক দুর্ভোগের মধ্যে শিক্ষার্থীরা। এছাড়া আজ বিভিন্ন বিভাগের সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১০টায় ক্লাস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে শাটল চলাচল বন্ধের ঘোষণাটি সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে আসায় শিক্ষার্থীদের যেন ভোগান্তির শেষ নেই।
সকালে নগরের ষোলোশহর রেল স্টেশনে গিয়ে শতাধিক শিক্ষার্থীকে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। এ সময় আদনান সামি নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার অন্যতম প্রধান মাধ্যম এই শাটল ট্রেন। কিন্তু শাটল দুর্ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে চালককে লাঞ্ছিত করায় তারা বিশ্ববিদ্যালয় রুটে শাটল চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে। গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস ও ল্যাব রয়েছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হবে। কিন্তু ট্রেন না চলায় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। ষোলোশহর থেকে অন্য গাড়ি পাওয়াও মুশকিল। অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী একই কথা বলেন।
জানা গেছে, শাটল ট্রেন চালক, গার্ডদের গত ৭ সেপ্টেম্বর মারধর করার প্রতিবাদে তারা পরদিন থেকে আজকে সকালেও ক্যাম্পাসমুখী ট্রেন চালায়নি। সকালে রেলস্টেশনে রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডির বৈঠক হয়। গতকাল থেকে রানিং স্টাফ ইউনিয়নের কেউ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ডাকে সাড়া দেননি। তবে রাত ৩টার দিকে প্রক্টর স্যার রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের জিএম মহোদয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হন। উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার প্রক্টরের মোবাইল দিয়ে জিএমের সাথে দীর্ঘ সময় আলাপ করে। জিএম, ডিআরএমসহ সকলেই উপাচার্যের সাথে আলাপের পর থেকে রাতেই তৎপর হয়। তবে আজ ভোর ছয়টা থেকে প্রক্টর নুরুল আজিম সিকদার, সহকারী প্রক্টর মোরশেদ ও রোকন চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে আসেন। চট্টগ্রাম বিভাগীয় ডিআরএম, স্টেশন মাস্টারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রক্টরিয়াল বডির সাথে বৈঠকে বসলেও সকাল ৮টা পর্যন্ত এ বৈঠকে যোগ দেননি রেলওয়ে লোকোমাস্টার ও রানিং স্টাফ ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।
শাটল বন্ধের বিষয়ে প্রক্টর ড.নূরুল আজিম সিকদার বলেন, চট্টগ্রাম রেলওয়ে লোকমাস্টাররা এখনো ট্রেন চলাচলে রাজী হোননি।শিক্ষার্থীদের জন্য আটটি বাস বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সকাল নয়টায় পাঁচটি ষোলশহর থেকে ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। আর তিনটি একই সময়ে বটতলী থেকে ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে যাবে। ক্লাস পরীক্ষা যথাসময়ে হবে।
অন্যদিকে, চবি রুটে নিরাপদবোধ না করায় চবির শাটল ট্রেন চালাবে না লোকোমাস্টাররা। যাদের পরীক্ষা বা জরুরি ক্লাস আছে তাদের জন্য জরুরি বাসের ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল নয়টায় বটতলী পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন থেকে তিনটি এবং ষোলোশহর স্টেশন থেকে পাঁচটি মোট আটটি বাস ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে বলে নিশ্চিত করেছে সহকারী প্রক্টর রোকন উদ্দিন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গামী রাত সাড়ে ৮টার শাটল ট্রেনের ছাদে হেলে পড়া গাছের সঙ্গে ধাক্কায় ১৭ জন শিক্ষার্থী আহত হন।
শিক্ষার্থীদের আহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাটল ট্রেন ক্যাম্পাসে পৌঁছানোর পর শিক্ষার্থীরা ঘটনার প্রতিবাদে ফটক আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর চালাতে দেখা যায়। পরবর্তীতে একজনের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের দিকে যান।
সূত্র: চ্যানেল ২৪