প্রকাশ: ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ২:০১ : অপরাহ্ণ
নিরামিষ বা আমিষ, রান্নায় নারকেলের দুধ দিলে তার স্বাদ বেড়ে যায় দ্বিগুন। যাদের গরুর দুধ বা দুগ্ধজাত কোনও খাবারে অ্যালার্জি আছে তাদের মধ্যে অনেকেই আজকাল নারকেলের দুধ খান। গরুর দুধের মতো ক্যালসিয়াম বা ভিটামিন ডি না থাকলেও কার্বোহাইড্রেট, ক্যালোরি, ফ্যাট, শর্করা, পটাশিয়াম, সোডিয়ামের মতো খনিজ রয়েছে নারকেলের দুধে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, নিয়মিত এই দুধ খেলে বিপাকহার উন্নত হয়। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর এই দুধ বাড়িয়ে তোলে রোগ প্রতিরোধশক্তিও। আর কোন কোন উপকারে লাগে এই দুধ?
নারকেল দুধ কি?
নারকেল গাছের ফল পাকা বাদামী নারকেলের সাদা অংশ থেকে এই দুধ তৈরি করা হয়। দুধের একটি ঘন সামঞ্জস্য এবং একটি সমৃদ্ধ, ক্রিমি টেক্সচার রয়েছে। থাই এবং অন্যান্য দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় খাবারে এটি বেশি পছন্দের। এটি হাওয়াই, ভারত এবং কিছু দক্ষিণ আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান দেশেও জনপ্রিয়।
নারকেল দুধের পুষ্টিগুণ
নারকেল দুধের ক্যালোরি একটি উচ্চ খাদ্য। এর প্রায় ৯৩ ভাগ ক্যালোরি চর্বি থেকে আসে, যার মধ্যে স্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে যা মিডিয়াম চেইন ট্রাইগ্লিসারাইডস (MCTs) নামে পরিচিত।
দুধ কিছু ভিটামিন ও খনিজ পদার্থেরও উৎস। প্রতি ১০০ গ্রাম নারিকেলের দুধে যে সকল পুষ্টি অন্তর্ভুক্ত থাকে-
শক্তি: ২৩০ কিলোক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট: ৫.৫ গ্রাম, চিনি: ৩.৩ গ্রাম, খাদ্যতালিকাগত ফাইবার: ২.২ গ্রাম, স্যাচুরেটেড ফ্যাট: ২১.১ গ্রাম, মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট: ১ গ্রাম, পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট: ০.২৬ গ্রাম, প্রোটিন: ২.৩ গ্রাম, ক্যালসিয়াম: ১৬ মিলিগ্রাম, আয়রন: ১.৬ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম: ৩৭ মিলিগ্রাম, ম্যাঙ্গানিজ: ০.৯২ মিগ্রা, ফসফরাস: ১০০ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম: ২৬৩ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম: ১৫ মিলিগ্রাম, জিঙ্ক: ০.৬৭ মিলিগ্রাম।
শক্তির উৎস
নারকেল দুধের মধ্যে রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড। এটি সরাসরি লিভার গিয়ে সেখান থেকে শক্তিতে রূপান্তরিত করে। কায়িক পরিশ্রম করার পর খুব ক্লান্ত লাগলে তাৎক্ষণিত শক্তি ফিরে পেতে খেতে পারেন নারকেলের দুধ।
হজমশক্তি উন্নত করতে
নারকেলের দুধের মধ্যে রয়েছে ফাইবার এবং ফ্যাটি অ্যাসিড। যা হজমশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। পুষ্টিবিদরা বলছেন, নারকেলের দুধ খেলে খাবার হজমে সহায়ক উৎসেচকগুলি ক্ষরণের হার বেড়ে যায়। যদিও এ বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন।
সংক্রমণ রোধ করতে
নারকেলের দুধের মধ্যে রয়েছে মনোলোরিন নামক বিশেষ একটি উপাদান। যা ভাইরাসের লিপিড মেমব্রেনটিকে ধ্বংস করে তার কার্যক্ষমতা নষ্ট করে। কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে, নারকেলের দুধ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতেও সাহায্য করে।
ক্যানসার প্রতিরোধী
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত নারকেলের দুধ খেলে ক্যানসার আক্রান্ত কোষ দেহের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়া প্রতিহত করতে পারে। নারকেলের দুধে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে সমৃদ্ধ উপাদানগুলি ক্যানসার কোষের বিরুদ্ধে মোকাবিলা করে।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে
নারকেলের দুধে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে সাহায্য করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, নারকেলের দুধ রক্তে থাকা খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল)-এর মাত্রা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে।
সূত্র: চ্যানেল ২৪