চট্টগ্রাম, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জলবায়ু পরিবর্তনের যে গতি, তার থেকে দ্রুতগতিতে আমাদের সমাধানের পথ বের করতে হবে

প্রকাশ: ১৯ আগস্ট, ২০২৩ ৫:৪৯ : অপরাহ্ণ

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কারণে বাংলাদেশ সামাজিক ওঅর্থনৈতিকভাবে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বাজেটে জলবায়ু বরাদ্দ বাড়াতেহবে, সামাজিক নিরাপত্তা, জলবায়ু সহনশীল কৃষি, জীবাশ্ম জ্বালানীকমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানী, খালখনন, পাহাড়কাটা রোধ, বর্জ্য ব্যবস্থাউন্নয়ন প্রয়োজন। রাইটস-টু-এনভায়রনমেন্ট বাদ দিয়ে রাইটস-টু-ডেভেলপমেন্ট সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। উন্নত বিশ্বের অপরিনামদর্শী উন্নয়নভাবনার কারণে আজকে ক্লাইমেট জাস্টিস বিঘ্নিত হচ্ছে। অকৃষি কাজেকৃষিজমি ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। উন্নয়নের মডেল হবে স্থায়ীত্ব। সবউন্নয়ন পরিকল্পনায় নিরপেক্ষ এনভারমেন্টাল অ্যাসেসমেন্ট জরুরীপ্রয়োজন। পৃথিবীতে ২৫ শতাংশ মানুষ পানি সংকটে আছে। পানিরকারণে রাজনৈতিক সহিংসতা দেখা যেতে পারে। শুধু নগর জলাবদ্ধতানয় গ্রামাঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিয়েও আমাদের পরিকল্পনা করা জরুরী।ক্লাইমেট রেসিলিয়ান্ট টেকনোলজি ইউজ করে পাবলিক-প্রাইভেটপার্টনারশীপ (পিপিপি) বাস্তবায়ন করতে হবে।

 

 

আজ ১৯ আগস্ট শনিবার ঘাসফুল আয়োজিত Òবৈশ্বিক জলবায়ুপরিবর্তন:আমাদের প্রস্তুতি” শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথাবলেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অবপ্রফেশনালস (বিইউপি) এর উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. খোন্দকারমোকাদ্দেম হোসেন। ঘাসফুল চেয়ারম্যান ড. মনজুর-উল-আমিনচৌধুরী’র সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি ছিলেনমাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত এবংপরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ীকমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি। ওয়েবিনারের স্বাগতবক্তব্যে সংস্থার সিইও আফতাবুর রহমান জাফরী জলবায়ু পরিবর্তনেসংস্থার গৃহীত কার্যক্রমের বর্ণনা দিয়ে সংযুক্ত সকলকে স্বাগত জানান।

 

প্রধানঅতিথি সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি বলেন, চট্টগ্রামের সকলসাংসদগণকে নিয়ে চট্টগ্রামের বিরাজমান সংকট ও সমস্যাগুলো নিয়েএকটি সমন্বয় সভা প্রয়োজন। আমাদের সংবিধান সংশোধনী; ৮/Òক”-তে পরিবেশের নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সুতরাং এবিষয়েঅবহেলা করে উন্নয়ন পরিকল্পনা করার সুযোগ নেই। তাপমাত্রাএমনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে আমাদের সচেতন না হয়ে উপায় নেই। আমরাবারবার প্রকৃতিকে আঘাত করছি, প্রকৃতি প্রতিশোধ নিবে না-তাতো ভাবাযায় না। সুতরাং আজকের উন্নত বিশ্ব প্রকৃতির বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ ঘোষণাকরেছে তার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা জরুরী। জলবায়ু পরিবর্তন স্থির নয়, ক্রমপরিবর্তনশীল। জলবায়ু পরিবর্তনের যে গতি, তার থেকে দ্রুতগতিতেআমাদের সমাধানের পথ বের করতে হবে।’

 

 

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে প্রফেসর ড. খোন্দকার মোকাদ্দেম হোসেনবলেন, জলবায়ু পরিবর্তন খুবই স্বাভাবিক বিষয়, এখানে ইতিবাচক ওনেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় আমাদেরকাজ করতে হবে। নগরায়ন বৃদ্ধি ও কার্বণ নিঃসরণ বাড়ছে, পাহাড়, বনধ্বংস করা হয়েছে, তাপমাত্রা বাড়ছে, ঋতু পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে, দুর্যোগবাড়ছে, কৃষিতে সমস্যা হচ্ছে। আমাদের ক্লাইমেট নিউট্র্রাল ইকোনমিপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। গ্রীণ এন্ড ক্লীন ওয়ার্ক এনভায়রনমেন্ট তৈরীতেমনোযোগ দিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন ও আমাদের নাজুকতাউল্লেখযোগ্য।

 

 

ঘাসফুল চেয়ারম্যান ড. মনজুর-উল-আমিন চৌধুরী বলেন, জলবায়ুপরিবর্তনের ফলে হালদা নদীতে লবণাক্ততা বেড়ে ৮পিপিটি হয়েছে।উত্তরবঙ্গে নারীদের প্রজননস্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। জলবায়ুপরিবর্তনজনিত অভিঘাত মোকাবেলায় বাজেটে বরাদ্দ বাড়াতে হবে এবংএক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, সুশীল সমাজসহ অন্যান্য বৃহৎস্টেকহোল্ডারদের সম্পৃক্ত করা উচিত।

 

ওয়েবিনারে প্যানেল আলোচক হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন সাবেকমহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, এডিবি’ররিসোর্স পার্সন ও সাবেক সচিব সুলতানা আফরোজ,  চট্টগ্রামবিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর (অবঃ) ড. মোহাম্মদ আলীআজাদী, বুয়েট’র পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউট এর পরিচালকপ্রফেসর ড. এ.কে.এম সাইফুল ইসলাম, বেলা’র প্রধান নির্বাহী সৈয়দারিজওয়ানা হাসান ও  পিকেএসএফ’র উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ফজলে রাব্বি ছাদেক আহমাদ।

 

আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারএর চেয়ারম্যান স্থপতি আশিক ইমরান, ফোরাম ফর প্ল্যান্ড চট্টগ্রাম এরসহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সুভাষ চন্দ্র বড়ুয়া, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামজেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোঃ ফেরদৌস আনোয়ার, কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায়, আবহাওয়া অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপপরিচালক(চলতি দায়িত্ব) ড. মোঃ ছাদেকুল আলম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের সভাপতি ড. মোঃ আলী হায়দার, বাংলাদেশপরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ’র ড. ইদ্রিস আলী, চট্টগ্রাম ওয়াসারতত্ত্বাবধায় প্রকৌশলী মোঃ মাহাবুবুল আলম, ঘাসফুল নির্বাহী কমিটি’রকোষাধ্যক্ষ বিশিষ্ট কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব কে. এ.এম. মাজেদুর রহমান, জলবায়ু সংগঠক শরিফ চৌহান, চট্টগ্রাম বশ্বিবদ্যিালয়রে ইনস্টিটিউট অবফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস’র শিক্ষার্থী প্রতীক দত্ত।ওয়েবিনারটি

 

Print Friendly and PDF