চট্টগ্রাম, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪ , ২২শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পিকনিকের আনন্দে মুহূর্তে নেমে আসে বিষাদ

প্রকাশ: ৬ আগস্ট, ২০২৩ ১১:০৮ : পূর্বাহ্ণ

পারিবারিক একটি পিকনিকে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার লুতব্দি ও লৌহজং উপজেলার খিদিরপাড়া এলাকার মোট ৪৬ জন ট্রলারে নদীভ্রমণে ঘুরতে যান পদ্মা নদীতে। সারাদিন হৈ-হুল্লোড় করে রাতে বাড়ি ফিরছিলেন তারা। ফেরার পথে রাত ৮টার দিকে লৌহজং উপজেলার তালতলা ডহরি খালের রসকাটি এলাকায় একটি বাল্কহেডের ধাক্কায় ট্রলারটি ডুবে যায়।

ঘটনাস্থল থেকে নারী-শিশুসহ আটজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জীবিত উদ্ধার হয়েছেন ৩২ জন আর নিখোঁজ রয়েছেন ৬ জন। পিকনিকের আনন্দে মুহূর্তে নেমে আসে বিষাদ।

নিহতদের মধ্যে তিন নারী, দুই শিশু ও তিন কিশোর রয়েছে। উদ্ধার হওয়া মৃতরা হলেন- মোকসেদা (৪২), পপি (২৬), হ্যাপি (২৮), সাজিবুল (৪), ফারিহান (১০), শাকিব (৮), রাকিব (১২),  ও সজীব। তারা সবাই সিরাজদিখান উপজেলার লতাব্দি ইউনিয়নের বাসিন্দা।

নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল, কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশের সদস্যরা। যোগ দিয়েছে নৌবাহিনীর ডুবুরি দল। তাদের অপেক্ষায় নদীতীরে বসে আছেন দুর্ঘটনায় বেঁচে ফেরা যাত্রীরা।

 

 

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে লৌহজং উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার আবদুল মতিন জানান, বিকেলে ট্রলারে করে পদ্মা নদীতে পিকনিকে গিয়েছিলেন লতব্দী ইউনিয়নের খিদিরপুর গ্রামের ৪৬ জন। পিকনিক শেষে রাতে লতাব্দীর দিকে ফিরছিলেন তারা। সোয়া ৮টার দিকে ট্রলারটি লৌহজংয়ের রসকাঠি এলাকায় পৌঁছালে একটি বাল্কহেড ধাক্কা দেয়। এতে সঙ্গে সঙ্গে ট্রলারটি পানিতে তলিয়ে যায়। এ সময় ট্রলারের অধিকাংশ যাত্রী সাঁতরে উঠলেও ১৪ জন ডুবে যান। তাদের মধ্যে আটজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিরা নিখোঁজ।

স্থানীয়রা জানান, দুর্ঘটনার পর দুই পাড়ের মানুষ ছুটে এসে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। খবর পেয়ে পরে এতে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিস ও প্রশাসনের লোকজন। কিন্তু নদীতে প্রবল স্রোত আর রাতে অন্ধকার থাকায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদের উদ্ধারকাজ চালাতে বেগ পেতে হয়।

 

মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসলাম খান বলেন, স্থানীয়দের সহায়তায় আটজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর অনেকেই সাঁতরে তীরে উঠে পড়েন। তিনি আরও বলেন, বাল্কহেডটি আটক করা হয়েছে তবে বাল্কহেডের চালকসহ সবাই পলাতক। পুলিশ তাঁদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালাচ্ছে।

 

এদিকে ট্রলারডুবির ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. আবুজাফর রিপন। জেলা প্রশাসক আরও জানান, ঘটনাস্থলে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আউয়ালসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা রয়েছেন। তারা উদ্ধারকাজ তদারকি করছেন।

 

Print Friendly and PDF