চট্টগ্রাম, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিরিজ নিশ্চিত করতে চায় অস্ট্রেলিয়া, জয়ের বিকল্প নেই ইংল্যান্ডের

প্রকাশ: ১৮ জুলাই, ২০২৩ ৫:৪৫ : অপরাহ্ণ

প্রথম তিন ম্যাচ শেষে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়া বুধবার (১৯ জুলাই) শুরু হওয়া চতুর্থ টেস্ট জিতেই আ্যাশেজ সিরিজ নিশ্চিত করতে চায়। অন্য দিকে সিরিজের আশা বাাঁচিয়ে রাখতে চতুর্থ টেস্টে জিততেই হবে স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে। ম্যানচেষ্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে সিরিজের চতুর্থ টেস্টটি শুরু হবে  বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায়।

বার্মিংহামের এজবাস্টনে সিরিজের প্রথম টেস্টে ২ উইকেটের রোমঞ্চকর জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। ২৮১ রানের টার্গেটে নবম উইকেটে দুই টেল-এন্ডার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ও নাথান লিঁর অবিচ্ছিন্ন ৫৫ রানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে অসিরা। কামিন্স ৪৪ ও লিঁও ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন।

লর্ডসে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট জয়-পরাজয়কে ছাপিয়ে আলোচনার জন্ম দেয়। ম্যাচ জিততে ইংল্যান্ডকে ৩৭১ রানের টার্গেট ছুঁড়ে দেয় অস্ট্রেলিয়া। টার্গেট স্পর্শ করতে না পেরে ৪৩ রানে ম্যাচ হারে ইংলিশরা। কিন্তু ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে জনি বেয়ারস্টোর আউট নিয়ে সরগরম হয়ে উঠে লর্ডস। অস্ট্রেলিয়ার পেসার ক্যামেরন গ্রিনের বাউন্সার না খেলেই ডড বল চিন্তা করে উইকেট ছেড়ে বেয়ারস্টো বেরিয়ে গেলে আন্ডারআর্ম থ্রোতে স্টাম্প ভাঙ্গেন অস্ট্রেলিয়ার উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারি। তৃতীয় আম্পায়ার বেয়ারস্টোকে স্টাম্পিং আউট ঘোষণা করলে দুই দলের মধ্যে  শুরু হয়ে আলোচনা-সমালোচনা।

 

 

এসবের মাঝে লর্ডসের গরম আবহকে সাথে নিয়ে লিডসে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে মুখোমুখি হয় দুই দল। সিরিজ জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখতে জয় ছাড়া অন্য কোন পথ খোলা ছিলো না ইংলিশদের। মার্ক উডের বোলিং নৈপুন্যের সাথে হ্যারি ব্রুকের ৭৫ রানে ৩ উইকেটে দারুন জয়ে সিরিজে ব্যবধান কমায় ইংল্যান্ড। ম্যাচে ৭ উইকেট ও ৪০ রান করে ম্যাচ সেরা হন উড।

পারফরমেন্সের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে ওল্ড ট্রাফোর্ডেও জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ইংল্যান্ড। দলের অধিনায়ক বেন স্টোকস বলেন, ‘প্রথম দুই ম্যাচ হারের পরও আমরা সিরিজে ব্যবধান কমিয়েছি। তবে এখানেই থামতে চাই না। চতুর্থ টেস্ট আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে সামনে এসেছে। এই ম্যাচ জিতলেই অবিশ্বাস্যভাবে আমাদের সিরিজ জয়ের সুযোগ তৈরি হবে। আমার জানি আমাদের কি করতে হবে, নিজেদের কাজগুলো মাঠেই বাস্তবায়ন করতে চাই।’

ওল্ড ট্রাফোর্ডে সর্বশেষ ১৬ টেস্টের মধ্যে ১৩টিতে জিতেছে ইংল্যান্ড। হেরেছে মাত্র একটিতে। সেটি অস্ট্রেলিয়ার কাছেই। ইংল্যান্ডের সেই ১৬ টেস্টের মধ্যে তিনটি  ছিলো অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। ১টিতে জয় ও ২টিতে ড্র করে অসিরা। ঐ ১টি জয়ই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। স্টিভেন স্মিথের ব্যাটিং, দুই পেসার প্যাট কামিন্স ও জশ হ্যাজেলউডের বোলিং নৈপুন্যে ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত  টেস্টটি ১৮৫ রানে জিতেছিলো অস্ট্রেলিয়া।

ওই টেস্টে ৬ উইকেট নেয়া হ্যাজেলউড বলেন, ‘আমি খুবই উত্তেজিত। ২০১৯ সালে এখানে জয় পেয়েছিলাম। এ ধরনের স্মৃতি ফিরে আসা ভালো।’

ওল্ড ট্রাফোর্ডের জয়ের স্মৃতি পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারলে এক ম্যাচ বাকী রেখেই অ্যাশেজ জয় নিশ্চিত হরে  অস্ট্রেলিয়ার । যার সুবাদে  ২০০১ সালের পর আবারও ইংল্যান্ডের মাটিতে সিরিজ জয়ের নজির গড়বে অসিরা।

ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও তিন নম্বরে নামা মার্নাস লাবুশেনের ফর্ম নিয়ে চিন্তায় অস্ট্রেলিয়া। তিন টেস্টের ছয় ইনিংসে মাত্র ১টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ১৪১ রান করেছেন ওয়ার্নার। লাবুশেনের ব্যাট থেকে এসেছে ১৪৪ রান। চলতি সিরিজে তিনবারসহ ইংল্যান্ডের পেসার স্টুয়ার্ট ব্রডের বলে এখন পর্যন্ত ১৭বার আউট হয়েছেন ওয়ার্নার।

 

 

চতুর্থ টেস্টে ওয়ার্নার-লাবুশেন জ¦লে উঠবে বলে বিশ্বাস করেন অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার উসমান খাজা, ‘অস্ট্রেলিয়ার সেরা ক্রিকেটারদের একজন ওয়ার্নার। তার সময়টা ভালো যাচ্ছে না। আমাদের দলের সবাই ওয়ার্নারের পাশে আছে। ভাল শুরুর পরও বড় স্কোর পায়নি লাবুশেন। এরকম হতেই পারে। তারা লড়াকু ও বড় মাপের ক্রিকেটার। আমি মনে করি, খুব শীঘ্রই বড় রানে ফিরবে তারা।’

এদিকে, এক টেস্ট বিরতি দিয়ে ইংল্যান্ডের একাদশে ফিরছেন অভিজ্ঞ পেসার জেমস এন্ডারসন। মাঠে নামার দু’দিন আগেই চতুর্থ টেস্টের একাদশ ঘোষনা করে দিয়েছে ইংল্যান্ড। প্রথম দুই টেস্টের চার ইনিংসে ২২৬ রানে মাত্র ৩ উইকেট নেন এন্ডারসন। বল হাতে সেরাটা দিতে না পারায় হেডিংলি টেস্টে বিশ্রাম পান এন্ডারসন। ওলি রবিনসনের জায়গায় খেলবেন ৪১ বয়স ছুঁইছুঁই এন্ডারসন।

 

 

একাদশে এন্ডারসন থাকায় ১৯২৮ সালের পর অ্যাশেজে সবচেয়ে বেশি বয়সী একাদশ হতে যাচ্ছে ইংল্যান্ডের। সর্বশেষ সবচেয়ে বেশি বয়সী একাদশ ছিলো অস্ট্রেলিয়ার।

বয়সের হিসাবে এন্ডারসনের সাথে ইংল্যান্ডের পেস অ্যাটাকে আছেন স্টুয়ার্ট ব্রড (৩৭), ক্রিস ওকস (৩৪) এবং মার্ক উড (৩৩)। সতীর্থ পেসাদের কাছাকাছি বয়স স্পিনার মঈন আলিরও।

৩৬ বছর বয়সী মঈন বলেন, ‘আমাকে সবসময় বলা হয়েছে, পুরানো সবই ভালো। কিন্তু এরা পুরানো নয়। জিমি, ব্রডি, ওয়াকসি, উডি, তারা সত্যিই ভাল বোলার।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনি কখনই জানেন না আপনি কি পাচ্ছেন, কিন্তু এমন ছেলেদের ব্যাপারে আপনি অবশ্যই জানেন তারা কতটা ভাল।’

 

টেস্ট ইতিহাসে  ১৮১ টেস্টে সর্বোচ্চ  ৬৮৮ উইকেট শিকারি  পেসার এন্ডারসন।

 

 

সূত্র – চ্যানেল২৪

Print Friendly and PDF