প্রকাশ: ৮ জুন, ২০২৩ ১১:৩০ : পূর্বাহ্ণ
বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ভয়াবহ তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গত ৫০ বছরের মধ্যে যা রেকর্ড দীর্ঘ তাপপ্রবাহ। এতে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট পরিস্থিতি আরও শোচনীয় করেছে।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস ও গাল্ফ নিউজের প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এতে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির রাজধানী ঢাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে থাকছে। তাতে সবচেয়ে বেশি ভুগছে গরিব মানুষ।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা বজলুর রশীদ বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এত দীর্ঘ তাপপ্রবাহ আমরা আর দেখিনি।
উদ্ভূত পরিস্থিতি সামলাতে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। তবু দেশটিতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং ফ্যানের চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু নাটকীয়ভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গেছে।
গত সোমবার বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কয়লাচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ, ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় জ্বালানি পণ্যটির সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারেনি সরকার।
২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশের টাকার মান কমেছে প্রায় ২৫ শতাংশ। ফলে জ্বালানি আমদানি এবং বিদ্যুতের অন্যান্য ইউটিলিটির খরচ বেড়ে গেছে।
চালু থাকা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোও চাহিদামতো উৎপাদন করতে পারছে না। পরিপ্রেক্ষিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর সতর্ক করে বলেছে, শিগগিরই গরম কমছে না। বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্রীষ্মের মাসগুলোতে এদেশে আরও ঘন ঘন, তীব্র ও দীর্ঘতর তাপপ্রবাহে অবদান রাখছে জলবায়ু পরিবর্তন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে প্রায়শই বিদ্যুৎ বিভ্রাটে বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে পোশাক খাত, যা দেশটির মোট রপ্তানির ৮০ শতাংশ।
তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে অনেকে চিকিৎসার শরণাপন্ন হচ্ছেন। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম বলেন, এখন আমরা অনেক রোগী পাচ্ছি। যাদের অধিকাংশই হিট স্ট্রোকে ভুগছেন। এছাড়া তাপমাত্রাজনিত অন্যান্য সমস্যাও আছে।
এরই মধ্যে নাগরিকদের ঘরের মধ্যে থাকতে উৎসাহিত করেছেন কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে পান পানের পরামর্শ দিয়েছেন তারা। তবে দেশের অনেক স্থানে পানি স্বল্পতা দেখা গেছে।