চট্টগ্রাম, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪ , ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশকে দীর্ঘমেয়াদে এলএনজি সরবরাহ করবে কাতার

প্রকাশ: ১ জুন, ২০২৩ ১২:৩১ : অপরাহ্ণ

তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করছে তেলসমৃদ্ধ কাতার। ইউক্রেন সংকটের কারণে গত এক বছর ধরে এলএনজির দাম বেড়েছে। ফলে সাশ্রয়ী মূল্যে পেট্রোলিয়াম পণ্যের জন্য অপেক্ষা করছে বাংলাদেশ।

 

প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (১ জুন) দোহায় চুক্তিটি সই হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক কাতার সফরের ফল এটি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলার সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি সরবরাহ চুক্তি সই করবে কাতার এনার্জি। দেশটির নর্থ ফিল্ড সম্প্রসারণ প্রকল্পে দ্বিতীয় এশিয়ান বিক্রয় চুক্তি হবে এটি।

পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা জানান, ১৫ বছর চুক্তির আওতায় কাতার থেকে বছরে ২০ লাখ টন এলএনজি পাবে বাংলাদেশ। দেশটি বিশ্বের শীর্ষ এলএনজি রপ্তানিকারক।

তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী বলেন, গত কয়েক মাস ধরে কাতারের সঙ্গে চুক্তির চেষ্টা করেছে ঢাকা। গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর কাতার সফরে যা অগ্রাধিকারের বিষয় ছিল। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল সানির সঙ্গে আমাদের সরকার প্রধানের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। এলএনজি সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন উনি।

 

২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে এলএনজি সরবরাহ শুরু হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। চুক্তি স্বাক্ষর প্রত্যক্ষ করতে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ দোহা গেছেন।

২৩-২৫ মে দোহা সফরকালে আমিরি দেওয়ানে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল সানির সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কর্মকর্তারা জানান, গত কয়েক মাস ধরে কাতার থেকে বাংলাদেশে জ্বালানি সরবরাহের বিষয়ে একটি নতুন চুক্তি স্বাক্ষরের আলোচনা চলছিল। প্রস্তাবিত চুক্তিটি আন্তর্জাতিক মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এলএনজির জন্য বিভিন্ন দেশের মধ্যে প্রতিযোগিতা বেড়েছে।অবশেষে বাংলাদেশ-কাতার চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে চলেছে।

 

 

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এমন সময়ে চুক্তিটি সই হচ্ছে, যখন ইউরোপকে গ্যাস দিতে রাশিয়ান পাইপলাইন প্রতিস্থাপন করতে বিপুল অর্থের প্রয়োজন। মহাদেশের আমদানির যা প্রায় ৪০ শতাংশ।

দীর্ঘমেয়াদি ক্রয়-বিক্রয় চুক্তির জন্য অপেক্ষায় থাকাকালে কাতারের বিশাল উৎপাদন সম্প্রসারণ প্রকল্প থেকে গ্যাস পাওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে এশিয়া।

কর্মকর্তারা বলেছেন, কাতারের সঙ্গে প্রথম ১৫ বছর চুক্তির অধীনে অপরিশোধিত তেলের ৩ মাসের গড় মূল্যের ১২.৬৫ শতাংশ এবং প্রতি এমবিটিইউতে ৫০ সেন্ট পরিশোধ করবে বাংলাদেশ।

নর্থ ফিল্ড সম্প্রসারণ প্রকল্প বিশ্বব্যাপী গ্যাসের দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহ নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে। এটি হলো বিশ্বের বৃহত্তম গ্যাসক্ষেত্রের অংশ, যা ইরানের সঙ্গে ভাগাভাগি করে কাতার। একে দক্ষিণ পার্স বলে।

 

 

দুই-পর্যায়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পটি ২০২৭ সাল নাগাদ কাতারের তরলীকরণ ক্ষমতা প্রতি বছর বাড়িয়ে ৭৭ মিলিয়ন থেকে ১২৬ মিলিয়ন টন করবে। রয়টার্স জানিয়েছে, চীনের সিনোপেকের সঙ্গে কাতারের প্রথম এশিয়ান চুক্তি অনুযায়ী বছরে ৪ মিলিয়ন টন সরবরাহ করা হবে। ২৭ বছরের মধ্যে স্বাক্ষরিত যা সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী চুক্তি।

 

Print Friendly and PDF