চট্টগ্রাম, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতিদের অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর আবেদন

প্রকাশ: ১০ মে, ২০২৩ ১২:৩৬ : অপরাহ্ণ

সুপ্রিম কোর্টের মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতিদের অবসরের সময়সীমা অন্যান্য বিচারপতিদের চেয়ে একবছর বৃদ্ধি করতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পীকার, প্রধান বিচারপতি, জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৯ মে) রেজিস্ট্রি ডাকযোগে সুপ্রিম কোর্টের ৮০ জন তরুণ আইনজীবী এ আবেদন করেন।

অ্যাডভোকেট মো. শাহীনুজ্জামান, অ্যাডভোকেট মো.বাচ্চু মিয়া, অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট রাজু হাওলাদার পলাশ, অ্যাডভোকেট বাহারুল আলম, অ্যাডভোকেট ফারজানা আক্তার, অ্যাডভোকেট মো. শাহেদ সিদ্দিকীসহ ৮০ জন আইনজীবী আবেদনটি করেছেন।

 

 

আবেদনে বলা হয়, বাঙালি জাতির ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অধ্যায় হল একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধের ফলে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। ১৯৭১ সালে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে এদেশের জনগণ নিজের জীবনের বাজি ধরে ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধে এবং দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে ত্রিশ লক্ষ শহীদ ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীনতা।

 

 

দেশের যে সকল সন্তান নিজের জীবনের মায়াকে তুচ্ছ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন জাতির সে সকল সূর্য সন্তানদের বিভিন্নভাবে সম্মানিত করা হয়েছে রাষ্ট্র কর্তৃক।

গণকর্মচারী অবসর (সংশোধনী) আইন, ২০১৩ এর ৪ ‘এ’ ধারা অনুযায়ী সকল মুক্তিযোদ্ধা গণকর্মচারী অবসরের বয়স সাধারণ গণকর্মচারী থেকে এক(১) বছর বেশি। অর্থাৎ রাষ্ট্র সকল মুক্তিযোদ্ধাদেরসহ সহ স্থানে ও কর্মক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা প্রদান করলেও  বিচারপতিদের ক্ষেত্রে উক্ত সুবিধা না থাকায় তাদের ক্ষেত্রে একই মর্মে সুবিধার ব্যবস্থা করা উচিত বলে আমরা মনে করি।

 

 

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন, ২০১১) এর ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্টের বিচারকগণের অবসরের বয়সসীমা বর্তমানে ৬৭ বছর। এক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা বিচারকগণের অবসরের বয়স ১ (এক) বছর বেশি করার মাধ্যমে তাদেরকেও সম্মানিত করা যেতে পারে।
 

আবেদনে বলা হয়, সামাজিক সাম্য নিশ্চিত করতে এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা বিচারকগণের অবসরের বয়স বর্তমানে প্রযোজ্য সকল বিচারকগণের অবসরের বয়স থেকে ১ (এক) বছর বেশি হওয়া বাঞ্ছনীয়। এই বয়সসীমা বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা হবে এবং এই সম্মানটা জাতির নিকট থেকে তাদের প্রাপ্য।

 

 

মহান মুক্তিযোদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ৫২ বছর আগে। সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই এমন মুক্তিযোদ্ধা বিচারক দেশ আর পাবে না। এটা হবে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আমাদের সামান্য কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ।

উল্লেখ্য যে, বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে মাত্র একজন মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতি (বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান) কর্মরত আছেন, যার মেয়াদ আর মাত্র কয়েকদিন আছে।

 

 

এমতাবস্থায়, মাননীয় মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতিকে যথোপযুক্ত সম্মানে ভূষিত করা রাষ্ট্রের ও জনগণের একান্ত দায়িত্ব। আমরা নতুন প্রজন্মের আইনজীবীগণ বিচারাঙ্গণে মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান স্বীকৃতি-স্বরূপ মাননীয় মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতির চাকুরির মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধি করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। সুপ্রিম কোর্টে কর্মরত মাননীয় মুক্তিযোদ্ধা বিচারকগণের অবসরের বয়সসীমা ১ (এক) বছর বৃদ্ধি পূর্বক তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনে আপনার মর্জি হয়।

 

 

সূত্র – চ্যানেল২৪

Print Friendly and PDF