চট্টগ্রাম, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ , ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কেসিসির নির্বাচন, বিপাকে বিএনপির শতাধিক প্রার্থী ও কাউন্সিলর

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল, ২০২৩ ১২:০৭ : অপরাহ্ণ

খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) ১৮ নং ওয়ার্ডে পরপর দুই বারের কাউন্সিলর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. হাফিজুর রহমান মনি। ১৯ নং ওয়ার্ডে পরপর ৩ বারের কাউন্সিলর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আশফাকুর রহমান কাকন। কিন্তু বিএনপি এবারের নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণায় বিপাকে পড়েছেন। প্রয়োজনে দলের পদ ছেড়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ার কথা ভাবছেন তারা।

নগরীর ২১ নং ওয়ার্ড থেকে গতবার দলীয় মনোনয়ন নিয়ে কাউন্সিলর নির্বাচন করেছিলেন ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক মোল্লা ফরিদ আহমেদ। কিন্তু বিএনপি নির্বাচনে না যাওয়ায় এবার আর প্রার্থী হবেন না।

শুধু এই তিনজনই নয়, খুলনায় তাদের মতো বিএনপির শতাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী ও বেশ কয়েকজন বর্তমান কাউন্সিলর বিপাকে পড়েছেন। বিএনপি চূড়ান্তভাবে নির্বাচনে না গেলে কেউ কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রার্থীদের কেউ কেউ অপেক্ষায় রয়েছেন। আবার অনেকে দল নির্বাচনে না গেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

 

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহানগর বিএনপির একজন নেতা বলেন, কেসিসির ৩১টি সাধারণ ও ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের প্রতিটিতেই বিএনপির ২ থেকে ৪ জন করে সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে অনেকে গত দুই-তিন বছর ধরে এলাকায় নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কর্মকাণ্ড করেছেন। কিন্তু বিএনপি নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকায় তারা বিপাকে পড়েছেন। দলের পদ হারানোর ভয়ে হয়তো অনেকেই শেষ পর্যন্ত প্রার্থী নাও হতে পারে। আবার এলাকায় যাদের অবস্থান ভালো তাদের কেউ কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

 

 

১৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আশফাকুর রহমান কাকন বলেন, আমি তিন বারের কাউন্সিলর। এলাকার লোকজন আবারও আমাকে নির্বাচন করতে বলছে। সে কারণে বিএনপি যদি নির্বাচনে না যায় তাহলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবো।

১৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা মো. হাফিজুর রহমান মনি বলেন, আমি নির্বাচন করতে চাই, আমার প্রস্তুতি রয়েছে।

সংরক্ষিত ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও বিএনপি নেত্রী মাজেদা খাতুন বলেন, আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিয়েছি।

 

 

২৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা মো. শমশের আলী মিন্টু বলেন, এলাকাবাসীর দাবি ও প্রত্যাশা পূরণের জন্য আমি নির্বাচন করবো। কাউন্সিলর হিসেবে কাজ করার মধ্য দিয়েই আমার নির্বাচনী কর্মকাণ্ড চলছে।

২১ নং ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক মোল্লা ফরিদ আহমেদ বলেন, আমার নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু বিএনপি নির্বাচনে না যাওয়ায় আমি প্রার্থী হবো না।

মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও গত নির্বাচনের মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু জানান, তার অনুসারী অনেকে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করতে আগ্রহী। নির্বাচন ও আন্দোলন দুটোই একসঙ্গে চলতে পারে বলে তারা মতামত দিচ্ছেন। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতাদেরকে জানানো হবে।

 

 

তবে এ ব্যাপারে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা ও সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন বলেন, বিএনপি এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনেই যাবে না। ফলে কাউকে মনোনয়ন বা সমর্থনও দেয়া হবে না। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ প্রার্থী হলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।

১০ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর বিএনপি নেতা মো. ফারুক হিল্টন এবং ২৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক কাউন্সিলর হুমায়ুন কবীর বলেন, তাদের প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু দল নির্বাচনে না যাওয়ায় তারা প্রার্থী হবেন না।

 

 

বিএনপির সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন নগরীর ৫ নং ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ইমাম হোসেন, ১৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক কাউন্সিলর শেখ শাহিনুল ইসলাম পাখি, ১৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক মো. হাবিবুর রহমান বিশ্বাস, ২২ নং ওয়ার্ডে বিএনপি নেতা ও সাবেক কাউন্সিলর মো. মাহাবুব কায়সার, ২৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবু।

 

 

২৬ নম্বর ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর মাহমুদ আলম বাবু মোড়ল, ২৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক কাউন্সিলর ওয়াহেদুর রহমান দিপু, ২৯ নং ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর মো. গিয়াসউদ্দিন বনি, ৩০ নং ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর মুহা. আমান উল্লাহ আমান সম্ভাব্য প্রার্থী।

 

 

সংরক্ষিত ১ নং ওয়ার্ডে মহানগর মহিলা দলের সহসভাপতি চমন আক্তার, সংরক্ষিত ৫ নং ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর মহিলা দলের সিনিয়র সহসভাপতি মোছা. আনজিরা খাতুন, জেলা মহিলা দলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মিসেস মনি, সংরক্ষিত ৬ নং ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক হাসনা হেনা, সংরক্ষিত ৭ নং ওয়ার্ডে মহানগর মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সামছুন নাহার লিপি, সংরক্ষিত ৯ নং ওয়ার্ডে মহানগর মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক কাওছারী জাহান মঞ্জু, সংরক্ষিত ১০ নং ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর মহিলা দলের সহসভাপতি রোকেয়া ফারুক সম্ভাব্য প্রার্থী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা কেউ প্রার্থী নাও হতে পারেন।

 

 

সূত্র – চ্যানেল২৪

Print Friendly and PDF