প্রকাশ: ৭ এপ্রিল, ২০২৩ ৩:২৪ : অপরাহ্ণ
সদকাতুল ফিতর বা ফিতরা রমজানের গুরুত্বপূর্ণ একটি আর্থিক ইবাদত।হতদরিদ্র মানুষও যেন ঈদের আনন্দে শামিল হতে পারেন, তার জন্য আল্লাহ ফিতরা বা সদকাতুল ফিতর নির্ধারণ করে দিয়েছেন, যা ঈদের নামাজের আগে দিতে হয়। একে জাকাতুল ফিতরও বলা হয়।
ইসলামি শরিয়াহ মতে, আটা, যব, কিসমিস, খেজুর ও পনির ইত্যাদি পণ্যগুলোর যেকোনো একটির মাধ্যমে ফিতরা দেয়া যায়।
পবিত্র কোরআন মাজিদে আল্লাহ তাআলা এদিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘নিশ্চয়ই সাফল্য লাভ করবে সে, যে শুদ্ধ হয়। ’ (সুরা আলা, আয়াত : ১৪)
ইসলামী বিধানমতে, সদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব।
সাহাবি ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) সদকাতুল ফিতর অপরিহার্য করেছেন। এর পরিমাণ হলো, এক সা জব বা এক সা খেজুর। ছোট-বড়, স্বাধীন-পরাধীন সবার ওপরই এটি ওয়াজিব। (বুখারি, হাদিস : ১৫১২)
সদকাতুল ফিতরের দুটি তাৎপর্য বর্ণনা করা হয়েছে। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) সদকাতুল ফিতরকে অপরিহার্য করেছেন। অর্থহীন, অশালীন কথা ও কাজে রোজার যে ক্ষতি তা পূরণের জন্য এবং নিঃস্ব লোকের আহার জোগানোর জন্য। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৬০৯)
যাদের ওপর ওয়াজিব
ঈদুল ফিতরের দিন সুবহে সাদিকের সময় কারো কাছে জাকাতের নিসাবের সমপরিমাণ অর্থাৎ সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা অথবা তার সমমূল্যের নগদ অর্থ কিংবা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অতিরিক্ত সম্পদ যদি বিদ্যমান থাকে তাহলে তার ওপর সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব হবে। যার ওপর সদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব, তিনি নিজের পক্ষ থেকে যেমন আদায় করবেন, তেমনি নিজের অধীনদের পক্ষ থেকেও আদায় করবেন। তবে এতে জাকাতের মতো বর্ষ অতিক্রম হওয়া শর্ত নয়। (ফাতহুল কাদির : ২/২৮১)
সদকাতুল ফিতরের পরিমাণ
সদকাতুল ফিতরের পরিমাণ সম্পর্কে হাদিস শরিফে দুটি মাপকাঠি নির্ধারণ করা হয়েছে। ১. ‘এক সা’ ২.‘নিসফে সা’। খেজুর, পনির, জব ও কিসমিস দ্বারা আদায়ের ক্ষেত্রে এক ‘সা’=৩২৭০.৬০ গ্রাম (প্রায়), অর্থাৎ তিন কেজি ২৭০ গ্রামের কিছু বেশি। এ ছাড়া গম দ্বারা আদায় করতে চাইলে ‘নিসফে সা’=১৬৩৫.৩১৫ গ্রাম, অর্থাৎ এক কেজি ৬৩৫ গ্রামের কিছু বেশি প্রযোজ্য হবে। (আওজানে শরইয়্যাহ, পৃষ্ঠা ১৮)
উল্লেখ্য, আমাদের দেশের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গবেষণা মতে, ‘এক সা’-এর পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়, তিন কেজি ৩০০ গ্রাম। আর ‘আধা সা’-এর পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়, এক কেজি ৬৫০ গ্রাম।