প্রকাশ: ২৫ মার্চ, ২০২৩ ১০:৫২ : পূর্বাহ্ণ
আজ ২৫ মার্চের সেই ভয়াল কালরাত। ১৯৭১ সালের এই কালরাতেই পৃথিবীর ইতিহাসের ভয়াবহতম গণহত্যার শিকার হয় বাংলাদেশের মানুষ। সেদিন রাতে রাজধানী ঢাকায় জাগ্রত মুক্তিকামী ছাত্র-জনতা থেকে ঘুমন্ত নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যার জন্য ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া বহর নিয়ে পথে নামে সশস্ত্র পাকিস্তান সেনাবাহিনী। হিংস্র শ্বাপদের মতো ধেয়ে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে পুলিশ ও ইপিআর ব্যারাকের দিকে। শুরু হয় পাকিস্তানিদের সুপরিকল্পিত কুখ্যাত ‘অপারেশন সার্চলাইট’। এক রাতেই সেদিন বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যার শিকার হয় লাখো বাঙালি।
এই মর্মন্তুদ গণহত্যা এখনও বিশ্বের মানুষের কাছে ঘৃণ্যতম ও তমসাচ্ছন্ন এক অধ্যায়। ২০১৭ সালে এই জঘন্য গণহত্যা স্মরণে ২৫ মার্চকে ‘জাতীয় গণহত্যা দিবস’ ঘোষণা করা হয়েছে।
এ কালরাত স্মরণীয় রাখতে আজ (শনিবার) দেশব্যাপী এক মিনিট নীরবতা পালনের কর্মসূচি নিয়েছে সরকার। কেপিআইভুক্ত এলাকা ছাড়া দেশের মানুষ রাত ১০টা ৩০ থেকে ১০টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত ১ মিনিট সব আলো নিভিয়ে একসঙ্গে দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করবেন।
দিনটি উপলক্ষে পৃথক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভয়াল সেই রাতে গণহত্যার শিকার অগণিত শহীদকে স্মরণ করেছেন।
গণহত্যা স্মরণে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের যৌথ উদ্যোগে সকাল ১০টায় ‘বাংলাদেশের গণহত্যা ১৯৭১’ শীর্ষক সেমিনার আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম উপস্থিত থাকবেন। দুপুর ২টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এছাড়া একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উদ্যোগে রাত ৯টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ৫৩টি মোমবাতি প্রজ্বালন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের উদ্যোগে আগারগাঁও মিলনায়তনে সন্ধ্যায় জাদুঘরের শিখা চিরঅম্লান প্রাঙ্গণে মোমবাতি প্রজ্বালন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, গণহত্যা জাদুঘর, জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ বিভিন্ন সংগঠনের মোমবাতি প্রজ্বালনসহ নানা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।
একইভাবে ঢাকার বাইরেও দেশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা এবং গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গীতিনাট্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, শিল্পকলা একাডেমি, শিশু একাডেমি, জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা এসব অনুষ্ঠান বাস্তবায়ন করবেন।