প্রকাশ: ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১১:০১ : পূর্বাহ্ণ
খুলনায় বহু আলোচিত মরিয়ম মান্নানের মা রহিমা বেগমের ‘নিখোঁজের’ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত করে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তদন্তে উঠে এসেছে, পরিকল্পিতভাবে ওই ‘অপহরণ নাটক’ সাজিয়েছিলেন মরিয়ম মান্নান। এমনকি ‘আত্মগোপনে’ যেতে ‘নিখোঁজের দিন’ মাকে মুঠোফোনের মাধ্যমে এক হাজার টাকাও পাঠান তিনি।
খুলনা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান জানিয়েছেন, সম্প্রতি মামলার তদন্তের কাজ শেষ করে তা অনুমোদনের জন্য পিবিআইয়ের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
সেখান থেকে অনুমোদিত হলেই ওই প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হবে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, বেশ আগ থেকেই পরিকল্পনা নিয়ে রহিমা বেগমের নিখোঁজের নাটক সাজিয়েছিলেন মরিয়ম মান্নান। মূলত, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিবেশীকে ফাঁসাতে ওই পরিকল্পনা করা হয়। তবে ওই পরিকল্পনার মধ্যে তাঁর ভাই ও অন্য বোনেরা ছিলেন না।
মামলাটি তদন্ত করছেন খুলনা পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. আবদুল মান্নান। জানতে চাইলে তিনি বলেন, জমি নিয়ে মরিয়ম মান্নানদের সঙ্গে প্রতিবেশীদের ঝামেলা চলছিল। মরিয়ম মান্নান বিভিন্ন সময় ওই প্রতিবেশীদের নামে জমি নিয়ে মামলা দিয়েছেন আর প্রতিবেশীরা প্রতিবার নথিপত্র জমা দিয়েই বেরিয়ে গেছেন। সর্বশেষ প্রতিবেশীদের ফাঁসাতেই ওই নাটক করা হয়েছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
তদন্তের প্রতিবেদন বলছে, অপহরনের ওই ঘটনা ছিল পরিকল্পিত। সন্দেহভাজন হিসেবে মামলার এজাহারে যাঁদের নাম দেওয়া হয়েছিল তাঁদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে না চাওয়ায় সৎবাবাকেও গ্রেপ্তার করিয়েছিলেন মরিয়ম মান্নান। মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে তাঁদের প্রতিবেশী মঈন উদ্দিন, গোলাম কিবরিয়া, রফিকুল ইসলাম, মোহাম্মাদ জুয়েল ও হেলাল শরীফের নাম জড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই সময়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। বর্তমানে তাঁরা জামিনে আছেন।
তদন্তের বিষয়ে গতকাল সোমবার রাতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে মরিয়াম মান্নান জানান, তদন্ত কর্মকর্তা তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেননি।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে রহিমা বেগম নিখোঁজ হন বলে অভিযোগ করেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। ওই দিন দিবাগত রাত দুইটার দিকে খুলনা নগরের দৌলতপুর থানায় মায়ের অপহরণের অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন রহিমার ছেলে মিরাজ আল সাদী। রহিমা বেগমকে অপহরণ করা হয়েছে-এমন অভিযোগ তুলে পরদিন ওই থানায় মামলা করেন আরেক মেয়ে আদুরী আক্তার। পরে ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে অক্ষত ও স্বাভাবিক অবস্থায় রহিমা বেগমকে উদ্ধার করে পুলিশ।