চট্টগ্রাম, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪ , ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সারদা পুলিশ একাডেমিতে প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি, ২০২৩ ১২:৩০ : অপরাহ্ণ

রাজশাহী পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (২৯ জানুয়ারি) সকাল সোয়া ১১টায় বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ হেলিকপ্টারে করে রাজশাহীর চারঘাটের সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে পৌঁছান তিনি। হেলিপ্যাডে নামার পর পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপাল অতিরিক্ত আইজিপি আবু হাসান মুহাম্মদ তারিক প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

পরে পুলিশ প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল উপস্থিত আছেন।

প্রধানমন্ত্রী আসার পর কুচকাওয়াজ শুরু হয়। সহকারী পুলিশ সুপার ইয়াকুব হোসেন এবং শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপার শুভ্র দেব প্যারেড কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কুচকাওয়াজে ১২ জন নারী অফিসারসহ ৯৭ জন শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপার অংশগ্রহণ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্যারেড পরিদর্শন শেষে বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করবেন। এর মধ্যে এক বছর মেয়াদি এই প্রশিক্ষণে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করায় বেষ্ট একাডেমিক শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর কবির, অশ্বারোহণে শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান, বেস্ট ইন ফিল্ড শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপার শুভ্র দেব, বেস্ট স্যুটার শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপার রাসেল রানা এবং বেস্ট প্রবেশনার শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপার সাকিবুল আলম ভূঁইয়াকে ট্রফি প্রদান করবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর তিনি এই নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন।

অনুষ্ঠানে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, নবীন অফিসারদের অভিভাবকেরাসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত আছেন।

৩৮তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের প্রশিক্ষণের সফল সমাপ্তি উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদ দমন, মাদক নির্মূল এবং চোরাচালান রোধে পুলিশের ভূমিকা বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করেছে।

তিনি বলেন, পুলিশ দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করছে। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য দক্ষ পুলিশ বাহিনী অপরিহার্য। তাই সরকার গঠনের পর থেকেই আমরা পুলিশের উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিয়েছি।

পুলিশ বাহিনীর আধুনিকায়নে সরকারের নেওয়া নানান পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, পুলিশে জনবল বৃদ্ধি, নতুন নতুন ইউনিট গঠন, ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন, আধুনিক যানবাহন ও লজিস্টিক সুবিধা বৃদ্ধি, সর্বাধুনিক প্রশিক্ষণ সুবিধা নিশ্চিতকরণ, পুলিশ সদস্যদের সার্বিক কল্যাণের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট ও ব্যাংক গঠন, আবাসন ও চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রভৃতি ক্ষেত্রে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশকে একটি আধুনিক, যুগোপযোগী, দক্ষ ও জনবান্ধব সার্ভিসে পরিণত করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, টুরিস্ট পুলিশ, নৌ-পুলিশ, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন, অ্যান্টি টেররিজম ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটসহ বেশ কয়েকটি রেঞ্জ, মেট্রোপলিটন ইউনিট, সাইবার পুলিশ সেন্টার, ব্যাটালিয়ন, ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার থানা, তদন্ত কেন্দ্র, ফাঁড়ি এবং জাতীয় জরুরি সেবায় ৯৯৯ ইউনিট গঠন করেছি। আমরা নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক চালু করেছি, বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে পুলিশ সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছি।

সরকারপ্রধান বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের সাহসী সদস্যরা উল্লেখযোগ্য প্রশংসনীয় অবদান রাখছেন। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় পুলিশ সদস্যরা নিজেদের জীবন বিপন্ন করে জনসেবার ক্ষেত্রে নজিরবিহীন ভূমিকা রেখেছে।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করে নবীন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ তথা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।

এখানে অনুষ্ঠান শেষে দুপুর আড়াইটায় রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাস মাঠে (হাজী মুহম্মদ মুহসীন সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠ) জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সূত্র: নিউজ২৪

Print Friendly and PDF