প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ১১:০৭ : পূর্বাহ্ণ
মূল্যস্ফীতির কারণে কম খাচ্ছে মানুষ। অনেকে খাদ্যতালিকা থেকে মাছ-মাংসসহ নানা আমিষ জাতীয় খাবার বাদ দিচ্ছেন। সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) এক সংলাপে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে ‘সংকটে অর্থনীতি, কর্মপরিকল্পনা কী হতে পারে?’ শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বক্তারা দাবি করেন, বর্তমানে রাজধানীর ৪ সদস্যের পরিবারের মাসিক খাবার খরচ গড়ে ২৩ হাজার ৬৭৬ টাকা।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। সেখানে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
প্রবন্ধে বলা হয়, দেশের বাজার ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বাড়ছে। তবে স্থানীয়ভাবে তা বেশি হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ মুহূর্তে বিশ্ববাজারে চাল, আটা, চিনি, ভোজ্যতেলের মূল্য কমেছে। তবে স্থানীয় বাজারে সেই প্রভাব নেই। দেশে উৎপাদিত পণ্যের দরও ঊর্ধ্বমুখী।
এতে বলা হয়, বর্তমানে রাজধানীতে বসবাসরত ৪ সদস্যের পরিবারের মাসে খাবার খরচ ২৩ হাজার ৬৭৬ টাকা। এটি রেগুলার ডায়েট। এ তালিকায় রয়েছে ১৯টি খাদ্যপণ্য। মাছ-মাংস ব্যতীত খাদ্য ব্যয় ৯ হাজার ৫৫৭ টাকা। এটা ‘কম্প্রোমাইজড ডায়েট’ বা আপসের খাদ্যতালিকা।
তাতে উল্লেখ করা হয়, বেতন প্রতিবছর ৫ শতাংশ বাড়ছে। তবে সেটা রেগুলার ডায়েটের ব্যয়ের তুলনায় অনেক কম। নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ খাবার খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন। এভাবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন। এতে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
প্রবন্ধে জানানো হয়, মূল্যস্ফীতির কারণে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। শুধু আমদানি নয়, দেশে উৎপাদিত পণ্যের দামও বেশি। এটা কমার লক্ষণও নেই।
সিপিডি বলছে, মুদ্রা ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি খাতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। ব্যাংক সেক্টর এখনও দুর্বল। খেলাপি ঋণ বাড়ছে। এ সংকট মোকাবিলায় নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন জরুরি।
সেমিনারে বিশেষ আলোচক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজ রূপালী হক চৌধুরী এবং বাংলাদেশ গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স সলিডারিটির সভাপতি তাসলিমা আক্তার লিমা বক্তব্য রাখেন।