চট্টগ্রাম, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪ , ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘুমের ওষুধ খেয়ে যেসব ক্ষতি করছেন নিজের

প্রকাশ: ৩ ডিসেম্বর, ২০২২ ১০:৩৮ : পূর্বাহ্ণ

ঘুমের ওষুধ খেয়ে যেসব ক্ষতি করছেন নিজের

আধুনিক জীবনযাপন, মানসিক চাপ, কর্মব্যস্ততা—ইত্যাদি সব সমস্যার জন্য এখন অনেকেই অনিদ্রার সমসয় ভুগে থাকেন। এতে রাতের অধিকাংশ সময়ই কাটে ঘুমহীন। আবার কিছুটা ঘুম আসলেও মাঝে মাঝেই ভেঙে যায় তা।  এ কারণে অনেকে বাধ্য হয়েই ঘুমের ওষুধ খেয়ে থাকেন।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, ঘুমের ওষুধ খাওয়ার প্রবণতা শরীরের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। যারা মনে করেন, ঘুমের ওষুধ না খেলে ঘুম আসবে না, তাদের প্রথমেই এই বিশ্বাস সরাতে হবে। চিকিৎসকরা অসুখের ক্ষেত্রে সাময়িক সময়ের জন্য হয়তো এই ওষুধ খেতে দেন। তবে কখনো অভ্যাসে পরিণত করা ঠিক নয়। কারণ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। ঘুমের ওষুধ খাওয়ার কারণে যেসব সমস্যা হতে পারে এবার তা দেখে নেয়া যাক—

স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া: প্রতিটি ঘুমের ওষুধের বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান স্মৃতিশক্তি দুর্বল করে তোলা। এই ওষুধের প্রভাব সরাসরি থ্যালামাসে প্রভাব ফেলে। স্নায়ু ও মস্তিষ্ককে নিস্তেজ করে ঘুমাতে সাহায্য করে। আর এই প্রক্রিয়া যদি দীর্ঘদিন চলতে থাকে তাহলে একপর্যায়ে স্মৃতিতে মারাত্মক থাবা ফেলে।

মানসিক অবসাদ: নিয়মিত ঘুমের ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস থেকে মানসিক অবসাদ হয়ে থাকে। এই ওষুধ মনে চাপ ফেলে। শরীরে কর্টিসল হরমোন ক্ষরণে সহায়তা করে। প্রয়োজনের বেশি কর্টিসল ক্ষরিত হওয়ায় সমস্যা বেড়েই চলে ঘুমের ওষুধ খাওয়ার কারণে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস করা: ঘুমের ওষুধ খাওয়ার কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়। এতে সহজেই নানা রোগ বাসা বাঁধে শরীরে। চিকিৎসকদের মতে, ঘুমের ওষুধ খাওয়ার কারণে ক্যানসারের আশঙ্কা থাকে।

ফুসফুসের সমস্যা: নিয়মিত ঘুমের ওষুধ খাওয়ার কারণে ফুসফুসে প্রভাব পড়ে। ফুসফুসের ক্ষমতা হ্রাস পায়। অল্প পরিশ্রম করলেই হাঁপিয়ে যান। আবার সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করলে কিংবা হঠাৎ একটু বেশি হাঁটাহঁটি করলে শ্বাস নেয়ার মতো সমস্যা হয়। এ কারণে অনেকেই দীর্ঘ স্থায়ী শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভোগেন।

এদিকে স্লিপ ফাউন্ডেশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘুমের ওষুধ খাওয়ার কারণে শ্বাস-প্রশ্বাসকে ধীর করে দিতে পারে এবং শ্বাসযন্ত্রের ব্যর্থতার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। নিম্ন রক্তচাপ ও অ্যারিথমিয়ায় আক্রান্তদের ঘুমের ওষুধ এড়িয়ে চলা উচিত।

লিভার বা কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদেরও ঘুমের ওষুধ না খাওয়া উত্তম। শরীরের বিপাককে প্রভাবিত করে। আবার গর্ভবতী বা বুকের দুধ খাওয়ানো নারীদের ঘুমের ওষুধ খাওয়ার ফলে বিষণ্নতা, প্রতিবন্ধী, স্মৃতিশক্তিজনিত সমস্যা হয়। এ কারণে গর্ভবতী নারীদের ঘুমের ওষুধ না খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। তবে ওষুধের প্রয়োজনে চিকিৎসকরা এটি খুব কম মাত্রায় লিখে দিয়ে থাকেন। এছাড়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঘুমের ওষুধ খাওয়া উচিত নয়।

Print Friendly and PDF