চট্টগ্রাম, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশেষজ্ঞ দেখিয়েছি— ইভিএমে কারচুপির সুযোগ নেই: ইসি

প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর, ২০২২ ৪:৫৭ : অপরাহ্ণ

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করেছি, দেখিয়েছি। তারা বলেছে এতে কারচুপির কোনো সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, ইভিএমের চিপস এমনভাবে তৈরি যে এটা ওয়ানটাইম ইউজেবল। এখানে রিরাইট করার কোনো সুযোগ নেই। এছাড়া প্রোগ্রামিং পরিবর্তন করারও কোনো সুযোগ নেই।

মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এসব কথা বলেন।

ইসি মো. আলমগীর বলেন, অনেকেই বলেন— এটা একটা কারচুপির মেশিন। আসলে আমরা এখানে দায়িত্ব নেয়ার পর বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। অতীতের নির্বাচনের যে অভিজ্ঞতা নিয়েছি, তাতে দেখেছি যে ইভিএমে কারচুপির কোনো সুযোগ নেই। কারণ আমরা তো কারিগরি দিক থেকে এক্সপার্ট না, যারা এক্সপার্ট তারা বলেছেন। দলগুলোকেও ডেকেছিলাম তাদের কারিগরি টিম এনে পরীক্ষা করে দেখার জন্য।

তিনি বলেন, ইভিএম নিয়ে প্রথমেই যেটা বলা যে, প্রোগ্রামিং করে ফল উল্টিয়ে দেওয়া যায়। তো তাত্ত্বিক দিক দিয়ে যারা বলেন তারা হয়তো ঠিকই বলেন। কিন্তু বাস্তবতার দিক দিয়ে এটা মোটেই ঠিক না। আপনি বলতেই পারেন যে, কোনো একটা কোম্পানির ওষুধে ভেজাল থাকতে পারে, কিন্তু সব কোম্পানির ওষুধ ভেজাল না। আমাদের যে ইভিএম এটা ভিন্ন ধরনের। অনেকেই বলেন এটা ভারতের ইভিএমের মতো। আসলে ভারতের সঙ্গে এটার তুলনা করা যায় না। ভারতের ইভিএমে ভোটার আইডেন্টিফিকেশন করে ম্যানুয়ালি। আমাদের ইভিএমে আইডেন্টিফিকেশন করা হয় ইলেকট্রনিক্যালি। যেহেতু আমাদের ভোটার ডাটাবেজ ছবি এবং ফিঙ্গারপ্রিন্টসহ আছে। কাজেই ভোটার আসলেই এই কেন্দ্রের ভোটার, নাকি অন্য কোনো ব্যক্তি- এটা মেশিনই আইডেন্টিফাই করে। যেটা ভারতের ইভিএম করার সুযোগ নেই। দুই নম্বর হলো এই ইভিএমটায় যে প্রোগ্রামিং করা হয়েছে, তাতে শুধুমাত্র যোগ করতে পারে। যে প্রার্থী আছে তাদের ভোটটা যোগ করতে পারে। আর কিছু করতে পারে না। প্রোগ্রামিংটা ঐভাবে করা। কাজেই কেউ যন্ত্রে বা বাইরে থেকে ম্যানিপুলেশন করবে সে সুযোগ নেই। কারণ এটার যে চিপস ব্যবহার করা হয়েছে, যেখানে রাইট করা হয়, এটা হলো ওয়ানটাইম ইউজেবল। কাজেই একবার রাইট করা হলে রিরাইট বা এডিটের কোনো সুযোগ থাকে না।

সাবেক এই ইসি সচিব বলেন, আরেকটা বিষয় হলো ইন্টারেন্টের সঙ্গে কোনো সংযোগ নেই আমাদের ইভিএমের। ব্যালট ইউনিটের সঙ্গে যে সংযোগ দেওয়া হয়, এটা কিন্তু কাস্টমাইজ করা। বাজারে কেনা কোনো ক্যাবল, ড্রাইভ; কোনো কিছুই এটার মধ্যে ইনসার্ট করতে পারবেন না। কেবল এই ইভিএমের জন্য যে ডিভাইস তৈরি করা হয়েছে, সেটা ছাড়া আর কোনো ডিভাইস যোগ করতে পারবেন না।

তিনি আরো বলেন, এটা কেবল যোগ-বিয়োগ করে, ক্যালকুলেটরের মতো। ক্যালকুলেটরে যেমন প্রোগ্রাম পরিবর্তন করার সুযোগ নেই, আমাদের ইভিএমেও তেমন সুযোগ নেই। ইভিএম নিয়ে যে অপপ্রচার আছে, যারা বলেন তারা না জেনে, না বুঝে বলেন। তারা চাইলে যে কোনো ইভিএমে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।

মো. আলমগীর বলেন, ইভিএমে ভোট নেয়ার সুবিধা হলো ভোটের আগে বা পরে ভোট দেওয়ার সুযোগ অথবা ভোটার ছাড়া কেউ এসে ভোট দিয়ে যাওয়া সেটার সুযোগ নেই। একটা দুর্বলতা আছে গোপন বুথে যদি ভোটারকে ঢুকতে না দেওয়া হয়, এই সুযোগটা আছে। তবে ভোটার যদি কেন্দ্রে না আসেন, সেই সুযোগও নেই। যদি ১০ শতাংশ ভোটার আসে তবে ১০ শতাংশ ভোটই কাস্ট করতে পারবে। আর ব্যালটে ১০ শতাংশ ভোটার আসলে শতভাগ ভোট দেওয়া সম্ভব। ফলে ইভিএমে ইউএমের মাধ্যমে জালিয়াতি কোনো সুযোগ নেই।

Print Friendly and PDF