প্রকাশ: ২ নভেম্বর, ২০২২ ৩:০৩ : অপরাহ্ণ
প্রকৃতিতে বইতে শুরু করেছে শীতের আগমনী হাওয়া। চারদিকে কুয়াশার ঘনঘটা যেন প্রকৃতির রুক্ষতাকে বাড়িয়ে দিয়েছে। শীত আসলেই বাড়তি নজর দিতে হয় শরীরের প্রতি। কারণ বাতাসের আদ্রতা বেশি থাকায় শরীরের ময়েশ্চারাইজার কমে যায়। ফলে ত্বগে এক প্রকার খসখসে ভাব তৈরি হয়।
বিশেষ করে ছেলেদের রুক্ষতা বেশি লক্ষ্যণীয়। শীতের মাত্রা যতই বাড়ে ততই রুক্ষতা বাড়ে। এজন্য প্রয়োজন ত্বকের যথাযথ যত্ন নেওয়া। যদিও ছেলে ত্বকের যত্ন সম্পর্কে উদাসীন। তারপরও শীত মৌসুমে উদাসীনতার সুযোগ নেই। কারণ এসময় ত্বকের যত্ন না নিলে আপনি রুক্ষ-শুষ্ক এক মানবে পরিণত হবেন। শীতে বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় বাইরে ধুলাবালির পরিমাণ একটু বেশিই থাকে। তাই গায়ে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে ময়লা জমা পড়ে। তাই এখন থেকেই শুরু হোক ত্বকের বাড়তি যত্ন। শীতে ছেলেদের ত্বক সুস্থ, সুন্দর ও সতেজ রাখতে কিছু বিষয়ে সর্তক থাকতে হবে
ত্বক
ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখা বা ত্বককে ময়েশ্চারাইজড রাখা শীতের সময়ে সবচেয়ে জরুরি। কারণ শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় ত্বকের আর্দ্রতা দ্রুত হারায়। এইসময় ত্বকে ময়েশ্চরাইজার ব্যবহার করলে শুষ্ক ত্বকের সমস্যাগুলো দূর হয় এবং ত্বককে কোমল ও হাইড্রেটেড রাখে।
পায়ের গোড়ালি
শীত আসবে আর পায়ের গোড়ালি ফাটবে না, তাতো হয় না। অধিকাংশ পুরুষই শীতে এই সমস্যায় পড়েন। বুঝতেই পারছেন, শীতের এই অত্যাচার থেকে বাঁচতে আপনাকে নিতে হবে বাড়তি যত্ন। পায়ের পরিচর্যার পাশাপাশি খেয়াল রাখতে হবে জুতার দিকেও। পা-ঢাকা জুতা পরলে এই সময়ে তা আরামদায়ক হবে। পরতে হবে মোজাও। আর পা যদি ফেটেই যায় তাহলে হালকা গরম পানিতে কিছুক্ষণ পা ডুবিয়ে রাখুন। এরপর ভালো করুন ফুট ক্রিম লাগান।
গোসল
শীত এলে গোসল নিয়ে গড়িমসি করেন বেশিরভাগ পুরুষ। কিন্তু পরিচ্ছন্নতার জন্য নিয়মিত গোসল তো করতেই হবে। আর তাই গরম পানির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। কিন্তু অতিরিক্ত গরম পানি দিয়ে গোসল ত্বকের জন্য ক্ষতিকর।
পানি পান
শীত আর গরম সবসময়ই ত্বকের জন্য পর্যাপ্ত পানি পানের কোনো বিকল্প নেই। অনেকে শীতে কম পানি পান করে থাকেন। তা একদমই করা যাবে না। বরং এখন আরও বেশি পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
ঠোঁট
শীত এলে সবেচেয় বেশি আক্রান্ত হয় ঠোঁট। সবচেয়ে সংবেদনশীল অংশ বলেই শীতের সহজ লক্ষবস্তু হয় এই ঠোঁট। লিপবাম কিংবা গ্লিসারিন ব্যবহারের পাশাপাশি নিয়মিত নিতে হবে ঠোঁটের যত্ন। ঠোঁট ভালো রাখতে মাঝে মাঝে স্ক্রাব করতে পারেন।
চুলের যত্ন
শীতে আর্দ্রতার ফলে চুল হয়ে যায় রুক্ষ ও মলিন। তাই চুলের যত্ন খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য চুলে শ্যাম্পু করার আগে চুলে তেল, মধু, লেবুর রস কিংবা ঠাণ্ডা চায়ের লিকার মালিশ করে কিছুক্ষণ পর শ্যাম্পু কর নিলে চুল সতেজ থাকবে। সপ্তাহে একদিন চুলে কাঁচা-মেহেদিপাতা বেটে দিয়ে রাখুন। এতে স্বাভাবিক চুল পড়া কমে যেতে পারে। চুলে যে কোনো ধরনের প্যাক কিংবা মেহেদি ব্যবহার করার পর ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। তার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
লোশনের ব্যবহার
বাজারে ছেলেদের জন্য নানা ব্র্যান্ডের লোশন পাওয়া যায়। তবে ত্বকের জন্য যেটি মানানসই সেটিই ব্যবহার করতে হবে। লোশন ব্যবহারের আগে ত্বক ভালোমতো ধুয়ে নিতে হবে। আর রাতে শোয়ার আগে গায়ে অবশ্যই লোশন বা নিজের পছন্দসই পণ্য ব্যবহার করুন।
শাক সবজি
শীতকালে বেশি করে শাকসবজি খাওয়ার অভ্যাস করুন। এতে ত্বকের সতেজতা বজায় থাকবে।
পুরুষের দাড়ির যত্ন
দাড়ি পুরুষের সৌন্দর্য বাড়ায় কয়েক গুণ। কিন্তু শীতের শুষ্কতার সঙ্গে লড়াই করে দাড়ি সুন্দর রাখা সহজ বিষয় নয়। এইসময় আপনার দাড়ি শুষ্ক হয়ে সহজেই ভেঙে যেতে পারে। এক্ষেত্রে প্রয়োজন বিয়ার্ড অয়েল। এটি আপনার দাড়ি এবং ত্বকের নিচে ভালোভাবে প্রয়োগ করুন। এটি দাড়িকে নরম এবং ময়েশ্চরাইজড রাখতে সহায়তা করবে।
নখের যত্ন
নখের গোড়ায় জমে থাকা ময়লা থেকে জীবাণু সংক্রমিত হয়ে পায়ে দুর্গন্ধ ছড়ায়, তাই প্রতি মাসে অন্তত দুবার পেডিকিউর করলে পা থেকে দুর্গন্ধ দূর হয়ে যাবে
লেখক: মাজহারুল ইসলাম শামীম
শিক্ষার্থী: ফেনী সরকারি কলেজ
ব্যবস্থাপনা বিভাগ