চট্টগ্রাম, বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪ , ২৪শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিম্নআয়ের মানুষকে কম দামে দুধ-ডিম-মাংস দেবে সরকার

প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর, ২০২২ ৩:২৫ : অপরাহ্ণ

মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ। দুধ উৎপাদনেও স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পথে। করোনা মহামারি ও বৈশ্বিক মহামন্দার মধ্যেও চাহিদার তুলনায় এসব খাদ্যপণ্য সরবরাহে ঘাটতি নেই। তবে দাম বেশি হওয়ায় আমিষের জোগান দেওয়া এসব খাদ্য হতদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।

এমন পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মসূচির আওতায় ভর্তুকি দামে দরিদ্র ও নিম্নবিত্তদের কাছে মাংস, ডিম ও দুধ বিক্রির বিষয়ে ভাবছে সরকার। এসব খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারীদের সঙ্গে চলতি সপ্তাহে বৈঠক করে কীভাবে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা যায়, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে অনুমোদনের জন্য তা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর।

দেশে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৯২ দশমিক ৬৫ লাখ মেট্রিক টন মাংস, ১৩০ দশমিক ৭৪ লাখ টন দুধ এবং ২ হাজার ৩৩৫ কোটি ৩৫ লাখ ডিম উৎপাদন হয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে ইলিশ বাদে ৪৬ দশমিক ২১ লাখ টন মাছ উৎপাদন হয়েছে। গত এক যুগে দুধ, মাংস ও ডিমের উৎপাদন বেড়েছে যথাক্রমে পাঁচ, আট ও চার গুণ।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, চলতি অর্থবছরে ১৪০ দশমিক ১০ লাখ টন দুধ, ৮৬ দশমিক ৯০ লাখ টন মাংস এবং ২ হাজার ৩১৫ কোটি ৫৩ লাখ ডিম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর গত অর্থবছরের থেকে এবার বেশি মাছ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে মৎস্য অধিদফতর। গত অর্থবছরে ৪৬ দশমিক ৬৪ লাখ টন মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল।

আমিষের চাহিদা মেটাতে দিনে ২৫০ মিলিলিটার করে দুধ ও ১২০ গ্রাম করে মাংস এবং বছরে ১০৪টি করে ডিম খাওয়া উচিত। উৎপাদনের সক্ষমতা অনুযায়ী একজন মানুষের এখন দিনে ১৪৭ গ্রাম করে মাংস এবং বছরে ১৩৬টি ডিম খাওয়ার সুযোগ রয়েছে। দুধের উৎপাদন কিছুটা কম থাকায় সব মানুষ চাহিদা অনুযায়ী দুধ খাওয়ার সুযোগ পান না।

অন্যদিকে দিনে মাথাপিছু মাছ গ্রহণের চাহিদা ৬০ গ্রাম থাকলেও এখন তার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে মাছ উৎপাদন হচ্ছে দেশে। মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক বলেন, গত অর্থবছরে মাছ উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল, তার থেকে অনেক বেশি পরিমাণে মাছ উৎপাদন হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫০টির বেশি দেশে ৭৪ হাজার ৪২ টন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রফতানি করে ৫ হাজার ১৯১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা আয় হয়েছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে ভর্তুকি দামে মাংস, ডিম ও দুধ বিক্রির বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। চলতি সপ্তাহে উৎপাদনকারীদের নিয়ে বসব। কীভাবে এটি বাস্তবায়ন করা যায় সে বিষয়ে তাদের মতামত নেয়া হবে। কোন পদ্ধতিতে এটা বাস্তবায়ন করা যায় সে বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে মন্ত্রণালয়কে জানাব। আমরা যেসব খাদ্যপণ্য উৎপাদন করি সস্তায় পুষ্টি নিশ্চিতে এর চেয়ে ভালো খাবার আর নেই। নিম্নবিত্তদের কাছে আমরা কম দামে এসব খাদ্যপণ্য পৌঁছাতে চাই।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ বলেন, এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর প্রস্তাব দিলে আমরা অবশ্যই বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।

Print Friendly and PDF